সৈয়দপুরে গুলির নির্দেশদাতা এসি ল্যান্ড বহাল তবিয়তে
- মো: জাকির হোসেন সৈয়দপুর (নীলফামারী)
- ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নীলফামারীর সৈয়দপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার ওপর গুলির নির্দেশদাতা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সরকারি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক কর্মকর্তাকে বদলি-ওএসডি করা হয়েছে। তবে বিনা প্রয়োজনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর হুকুমদাতা এই কর্মকর্তা এখনো সৈয়দপুরে থাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় ছাত্র সমন্বয়ক, অভ্যুত্থানের স্বপক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী অনেকের মতে, গত ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সৈয়দপুরের সার্বিক পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। আন্দোলনকারীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করছিলেন। এদিন শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচমাথা মোড় ও ট্রাফিক পুলিশ বক্সসংলগ্ন ১ নং রেলক্রসিং এলাকায় শত শত ছাত্র-জনতা অবস্থান করছিলেন। আর ট্রাফিক বক্সে ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল হকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা। সেখানে কোনো প্রকার আইন পরিপন্থী কর্মসূচি ছিল না। বেলা ২টার দিকে সেদিনের কর্মসূচি প্রায় শেষ পর্যায়ে হঠাৎ করেই পরিবেশ উত্তপ্ত করে আওয়ামী সরকারের দোসর প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
ছাত্র ও পুলিশের মধ্যে সামান্য ভুল বুঝাবুঝির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম পুলিশকে প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দেন। এতেই পুলিশের কয়েকজন সদস্য আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় দোকানদার, পাড়া-মহল্লা থেকে সব বয়সের লোকজন ছুটে আসতে থাকে ঘটনাস্থলের দিকে। ফলে পুলিশ সদস্যরা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়। পরে সৈয়দপুর থানা থেকে আরো পুলিশ সদস্য ও রিজার্ভ পুলিশ শহরের রাস্তায় রাস্তায় অভিযান চালায়। লোকজন দেখলেই পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। সেদিন পুলিশের হামলায় ছাত্র-জনতা, পথচারী, দোকানদার, ফেরিওয়ালা, ভিক্ষুকসহ মোট ১৩৮ জন গুলিবিদ্ধ হন। আগস্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণসহ বর্বরোচিত নির্যাতনের জন্য দায়ী করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্লোল দত্ত, ওসি সাইফুল ইসলাম এবং ওসি (তদন্ত) এস এম রাসেল পারভেজসহ অনেককে বদলি-ওএসডি করা হয়েছে। কিন্তু এসিল্যান্ড এখনো তার পদে রয়েছেন।
অভিযুক্ত সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি গুলি করার কোনো লিখিত নির্দেশ দেইনি। আমার নির্দেশ ছাড়াই পুলিশ গুলি চালিয়ে খুব খারাপ করেছে। আমি নিজেও গুলির মধ্যে জীবন নিয়ে কোনো রকমে পালিয়ে এসেছি। একজন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পুলিশকে অপ্রয়োজনে গুলি করা থেকে বিরত না করে কেন স্থান ত্যাগ করেছিলেন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। নীলফামারী জেলা প্রশাসক নায়িরুজ্জামন বলেন, তদন্তপূর্বক সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা