০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, empty
`
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত

গুলিবিদ্ধ শামীম আহমেদের মানবেতর জীবন

গুলিবিদ্ধ শামীম আহমেদের মানবেতর জীবন -

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে আহত রাইড শেয়ারিং চালক হতদরিদ্র শামীম আহমেদ (৩৫) চিকিৎসা নিতে গিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। নিজের রাইড শেয়ারিংয়ের একমাত্র মোটরসাইকেল এবং স্ত্রী মারজাহান আক্তারের স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে এখন তিনি একেবারে নিঃস্ব। শামীম জানান, এ পর্যন্ত চিকিৎসায় তার নিজের প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে।
শামীম জানান, গুলিবিদ্ধ তার ডান হাতে পাঁচটি অপারেশন করতে হয়েছে। হাতটি এখন সম্পূর্ণ অবস। পুরোপুরি সেরে উঠতে তার আরো প্রায় দুই বছর সময় লাগবে বলে জানান চিকিৎসকরা। তিনি বর্তমানে ঢাকার সাভারে সিআরবি হাসপাতালে হাতের থেরাপি নিচ্ছেন।
শামীম আহমেদ কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের মেরকোট এলাকার মৃত ইব্রাহিম খলিলউল্লাহর ছেলে। মারুফ হোসেন (১৪) ও হুমায়রা আক্তার নামে (৩) তার দু’টি সন্তান রয়েছে।

স্ত্রী মারজাহান আক্তার জানান, শামীম ঢাকার রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় রাইড শেয়ারিং চালক ছিলেন। গত ১৯ জুলাই দুপুর ৩টার দিকে শামীম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে রামপুরা টিভি ভবন এলাকায় মিছিল করছিলেন। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের মিছিলে একের পর এক গুলি ছুড়তে থাকে। একটি গুলি এসে লাগে শামীমের ডান হাতের কনুইয়ে। ঘটনাস্থলেই পড়ে যান শামীম। পাশের একজন এগিয়ে এসে তাকে মিরপুর হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে শামীমের মোবাইল নম্বর থেকে গ্রামের বাড়িতে জানানো হয়।

গুলিতে শামীমের ডান হাতের কনুইয়ের ওপরের হাড় তিন টুকরা হয়ে হাতের রগ ছিড়ে গেছে। চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন। পঙ্গু হাসপাতালে তার হাতে পাঁচবার অপারেশন করাতে হয়। কিন্তু পরবর্তীতে অপারেশন স্থানের মাংসে পচন ধরায় তাকে সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ এক মাস সিএমএইচে চিকিৎসা নেয়ার পর তাকে সাভার সিআরবি হাসপাতালে হাতের থেরাপির জন্য পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সিআরবি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
শামীম আহমেদ বলেন, তার ডান হাত সম্পূর্ণ অচল। অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারি না। চিকিৎসকরা বলছেন, হাতের চিকিৎসায় দুই বছর সময় লাগতে পারে। ছাত্র সমন্বয়ক সারজিস আলমের তরফ থেকে চিকিৎসা বাবদ তাকে ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। বাকি সব খরচ নিজেকেই বহন করতে হয়েছে। তিনি আরো জানান, বর্তমানে কোনো আয়-রোজগার না থাকায় মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি বড় কষ্টে আছেন।


আরো সংবাদ



premium cement