০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩০, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৫
`
দেড় মাস ধরে মজুরি বন্ধ

ভালো নেই চা-শ্রমিকরা

অসহায় এক চা-শ্রমিক পরিবার : নয়া দিগন্ত -

ভালো নেই চা শিল্পের নিপুণ কারিগর শ্রীমতি, সবিতা, বাসন্তি ও পার্বতীরা। দেড় মাস ধরে তাদের মজুরি নেই। এক সপ্তাহ ধরে চলছে ধর্মঘট। কাজে যোগ দিচ্ছেন তারা। মৌসুমের শেষ সময়ে পাতা চয়ন না হলে চা উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) সিলেট বিভাগের ১৬টি চা বাগানে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাজার নিম্নমানের চায়ের দখলে। এতে চায়ের দাম কমে গেছে। চা বিক্রি করে বাগান পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই, অর্থ সঙ্কটের কারণে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়াও ব্যাংক ঋণ নিয়ে রয়েছে আরো বড় ধরণের জটিলতা।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী কুরমা চা বাগানে দেড়মাস ধরে চলছে অচলাবস্থা। অনাহারে অর্ধাহারে চলছে এ অঞ্চলের চা-শ্রমিকদের জীবন। ভাতের হাঁড়ি চুলায় বসছে না প্রতিদিন। চিড়া রুটি খেয়েই দিন যাচ্ছে।
কথা হয় নারী চা-শ্রমিক শ্রীমতি, সবিতা, বাসন্তি ও পার্বতীর সাথে। তারা বলেন, আমরা ভালো নেই। বড় কষ্টে আছি। সম্প্রতি বন্যায় বাড়িঘর ডুবিয়ে দিয়ে গেছে। এতে যে ক্ষয়ক্ষতি হলো তার ক্ষত না শুকাতেই নেমেছে আরেক বিপর্যয়।
তারা জানান, বন্যার ক্ষতচিহ্ন মুছে যায়নি এখনো। ঘরের অবস্থা স্যাঁত স্যাঁতে। এর মধ্যেই পরিবার পরিজনদের নিয়ে থাকতে হচ্ছে। এমনটাই জানান, শ্রীমতি কানু। সবিতা রানীর ঘরে গিয়ে দেখা যায়, মেঝেতে রেখেছেন হাঁড়ি পাতিল। সংসার ছোট হলেও দৈন্যদশায় কাতর সবাই। মজুরি বন্ধ থাকায় সংসার আর আগের মত চলছে না।
বাসন্তি কর্মকার বলেন, বাগান কর্তৃপক্ষ মজুরি ও রেশন বন্ধ করে দেয়ায় বড় কষ্টে আছি। আমার পাঁচ সদস্যের সংসার। প্রায় রাতেই খাবারের যোগাড় হয় না। ছেলে মেয়েদের খাবারের আশ্বাস দিয়ে ঘুম পাড়াই। নিজেরাও উপোস থাকি। দুই বেলা চিড়া রুটি খেয়ে থাকতে হয়।
পঞ্চায়েত সভাপতি নারদ পাশি বলেন, আমরা বার বার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা আমাদের শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন। দেড় মাসের পাওনা বাকি। বাগান সচল রাখার জন্য শ্রমিকরা এতো দিন কাজ করে যাচ্ছিল। গত এক সপ্তাহ ধরে কাজ পুরোপুরি বন্ধ। পাতা চয়নের শেষ সময়ে এসে এমন পরিস্থিতি বাগানের জন্য ক্ষতিকর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চা বাগানসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বথ্যাংক ঋণের টাকাটাই এ সমস্যার মূল কারণ।
কৃষি বথ্যাংক থেকে ঋণ না পাওয়ায় আমরা বাগান পরিচালনা করতে পারছি না। এ ছাড়া, নিম্নমানের চায়ে বাজার দখল করে রাখা হয়েছে। বাজারে ভারতীয় চা প্রবেশ করায় এক শ্রেণির অসাধু বথ্যবসায়ী ভালো-মন্দ দুই ধরণের চা একসাথে মিশিয়ে কম দামে বাজারজাত করছেন। এতে আমাদের চা শিল্প প্রায় ধ্বংসের মুখে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ইসরাইল হোসেন বলেন, ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) চা-বাগানের সমসথ্যা সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আশা রাখি স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাধানে আসতে পারব।


আরো সংবাদ



premium cement
সিরাজ সিকদার-আবু সাইদ হত্যা একই সূত্রে গাঁথা : রাশেদ প্রধান আন্দোলনে আহত রাতুলকে আর্থিক সহায়তা দিলো বিজিবি গাবতলীতে দিনমজুরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ বিএসএমএমইউ পরিচালকের পদত্যাগে আলটিমেটাম রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিল কবরস্থানে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি নেতা বহিষ্কার ২০২৫ সেশনের জন্য ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি গঠন দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কচির পদ স্থগিত দুই জেলায় বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত, একটিতে স্থগিত সঠিক যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়া হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা রোববারের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারতে আটক জেলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ হবে

সকল