‘সবাই আশা দেয়, কেউ ব্রিজ করে দেয় না’
- মুহাম্মদুল্লাহ সখীপুর( টাঙ্গাইল)
- ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৪৫
‘ব্রিজ অবো হুনতে হুনতে বুইড়া অয়া গেলাম গা, হেই ৭০ বছর ধইরা হুনতাছি ব্রিজ অইব, ব্রিজ অইব, তা আইজ পর্যন্ত কোনো খবর নাই। আমরা মুরুব্বি অয়া গেছি, আঙ্গো পোলাপানরাও বাপ-দাদা অয়া গেছে গা, কিন্তু আঙ্গো এ গেরামে অহনো ব্রিজ অইলো না।’ কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার বরইতলা এলাকার ৮৫ বছর বয়সী কুদ্দুস মিয়া।
সখীপুর ও বাসাইল উপজেলার সীমান্তবর্তী দাঁড়িয়াপুর গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বংশাই নদী। সখীপুর ও বাসাইল উপজেলাকে আলাদা করেছে এ নদী। যুগ যুগ ধরে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন দুই পারের মানুষকজন। শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ও বর্ষা মৌসুমে নৌকা হচ্ছে এ গ্রামের লোকজনের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা। সাথে ভারী মালামাল বা রোগী থাকলে অতিরিক্ত ৩০ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয়রা জানান,দাঁড়িয়াপুর ইউনিয়নের বরইতলা এলাকায় বংশাই নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। ওই সাঁকো দিয়েই দুই পারের লোকজন চলাচল করে। বর্ষা মৌসুমে নৌকাই একমাত্র ভরসা তাদের। সেতু না থাকায় দুই উপজেলার ১৪টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। নদীর এপারে-ওপারে রয়েছে দু’টি উচ্চবিদ্যালয়, চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিনটি মাদরাসা, চারটি কিন্ডারগার্টেন ও চারটি সাপ্তাহিক হাট।
তারা আরো জানান, সখীপুর উপজেলার দাঁড়িয়াপুর, লাঙ্গুলিয়া, আকন্দপাড়া, আবাদি, চাকলাপাড়া, কৈয়ামধু, বেতুয়া, শোলাপ্রতিমা ও দেওবাড়ী এবং বাসাইল উপজেলার সুন্না, গিলাবাড়ী, কল্যাণপুর, মৈলানপুর, ডুমনীবাড়ী, বার্থা, কলিয়া ও কাউলজানী গ্রামের লোকজন এ নদীর এপাড় ওপাড় যাতায়াত করতে হয়।
কথা হয় শিক্ষার্থী সিয়ামের সাথে। তিনি বলেন, ‘চলাচলের সুবিধার জন্য শুকনা মৌসুমে এলাকার লোকজন ১০০ গজ দৈর্ঘের একটি সাঁকো নির্মাণ করে নেয়। তবে বর্ষায় বাঁশের সাঁকোটি ডুবে যায়। তখন নৌকা দিয়েই চলাচল করতে হয়। এতে বড় ভোগান্তিতে পড়তে হয় দুইপাড়ের শিক্ষার্থীসহ অন্যদেরকে। আমরা একটি ব্রিজ চাই। এই ব্রিজ হলে সব দিকেই সুবিধা হয় আমাদের।’
দাঁড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী আসিফ বলেন, আমি স্থানীয় উপজেলার এলজিআরডির সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তারা কথা দিয়েছেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের ব্রিজটি করে দেবেন। সখীপুর এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, সেতুটির জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।