নিকলীতে আ’লীগ নেতাকর্মীদের নামে ডিলারশিপ
সার নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা- আলি জামশেদ নিকলী (কিশোরগঞ্জ)
- ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৪৪
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি কৃষির ওপর নির্ভর। কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘ দেড় যুগের কাছাকাছি সময়ে রাজনৈতিক প্রভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হাওর অঞ্চলের সারের ডিলার। এ ছাড়াও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ দেড় যুগের কাছাকাছি সময়ে নানাবিধ অনিয়ম বণ্টনের সীমাহীন অভিযোগ মাথায় নিয়ে এখনো বহাল তবিয়তে তারা। জেলা কৃষি অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা নানাবিধ অনিয়মের দায় স্বীকার করেছেন।
২০২০ সালের জুন মাসের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের জেলা পর্যায়ের ডিলার ও খুচরা বিক্রেতা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কিশোরগঞ্জের ১৩টি উপজেলায় ১১৬টি ইউনিয়নে মোট বিসিআইসি ডিলারের সংখ্যা ১৭৫। বিএডিসি সার ডিলার ৬৪ জন, খুচরা সার বিক্রেতা নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ১০৪৪ হলেও নিয়োগকৃত সংখ্যা ৮৬৮টি আর বিক্রেতার সংখ্যা ৬৩৮টি। বাজিতপুর উপজেলাই ডিলার ২৩ জন, নিকলীতে-১১, অষ্টগ্রামে-২১, মিটামইনে-১৩, ইটনায়-১৪, কটিয়াদী-২১, হোসেনপুর-১২, পাকুন্দিয়া-২০, জেলা সদরে-১৬, করিমগঞ্জ-২৬ তাড়াইলে-১৩ ও ভৈরবে ২৭ জন। নিকলীতে একজনের অধীনে ৯ জন সাব ডিলার থাকলেও জারইতলাতে একজনেই চালাচ্ছেন।
গুঞ্জন রয়েছে, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের এমপি নাজমুল হাসান পাপনের সহযোগিতায় তার স্বজন অ’লীগ নেতা আল আমিনের ভিন্ন ভিন্ন নামেই নিকলীতে বিসিআইসির চারটি ডিলার। নিকলী রোদার পুড্ডার কীটনাশক ব্যবসায়ী শফিক আহমেদের ভাষ্য, বহিরাগতদের একাধিক ডিলার থাকায় সমস্যা চরমে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জারইতলার পুড্ডা বাজারের খুচরা সার বিক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি ওয়ার্ডে সরকারিভাবে একজন খুচরা বিক্রেতা দেয়ার কথা থাকলেও পুরো ইউনিয়নে মাত্র সাজনপুরের ফজলু নামের একজন।
হাওর অঞ্চলের কৃষকদের দাবি, উপযুক্ত সময়ের মধ্যে সুবিধাভোগীদের হটিয়ে জরুরি ভিত্তিতে যোগ্য ও কৃষিবান্ধব ডিলার নিয়োগ না করা হলে সময়মতো সার পাওয়া যাবে না। ডিলাররা অনেকেই অপকর্মের দায়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। ডিলাররা বিগত সময়ে দলীয় লোকদেরকেই সুবিধা করে দেয়ার কারণে সুবিধাবঞ্চিত কৃষকদের খুচরা বাজার থেকে বরাবরই চড়া দামে সার কিনতে হয়। ভৈরব পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন বেশ কয়েকটি মামলার আসামি বিধায় তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
নিকলী উপজেলা কৃষি অফিসার মো: সাখাওয়াত হোসেন বলেন, যে পরিমাণ বরাদ্দ এসেছে সেই পরিমাণই উত্তোলন হয়েছে। এই পর্যন্ত কৃষকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসার মো: আবুল কালাম আজাদ আওয়ামী লীগ নেতারা বিসিআইসির ডিলার প্রসঙ্গটি প্রথমে এড়িয়ে যান। পরে সুনির্দিষ্টভাবে মামলা মোকদ্দমা এমনকি ভয়ে পালাতক নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ করা হলে নিশ্চুপ থাকেন। তবে অনিয়মের দায়ও স্বীকার করেন।
নিকলীর জারইতলা ইউনিয়নে একজন সাব ডিলারের প্রসঙ্গে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান জেলা কৃষি কর্মকর্তা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা