ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে প্রাণহানি বেড়ে ২৩
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৯ জুলাই ২০২৪, ২১:৩৫
প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের একটি অবৈধ স্বর্ণের খনিতে ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
রোববার (৭ জুলাই) শতাধিক গ্রামবাসী গোরোনটালো প্রদেশের প্রত্যন্ত বোন বোলাঙ্গো জেলার একটি স্বর্ণের খনিতে খোঁড়ার কাজ করছিলেন। এসময় আশপাশের পাহাড় ধসে কয়েক টন কাদার নিচে চাপা পড়েন তারা।
সোমবার পর্যন্ত ১১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়, সেইসাথে নিখোঁজ ছিলেন আরো ১৯ জন। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ২৩ জনের লাশ উদ্ধার করেন উদ্ধারকারীরা।
সংস্থাটির তথ্যানুসারে, ৬৬ জন ভূমিধস থেকে বেঁচে যায়। উদ্ধারকারীরা ২৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেন, যার মধ্যে ১৮ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া মোট ২৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন নারী এবং ৪ বছর বয়সী একটি শিশু রয়েছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরো প্রায় ৩৫ জন।
সোমবার গোরোনটালোর উদ্ধারকারী সংস্থার মুখপাত্র আফিফুদ্দিন ইলাহুদে বলেন, ‘ভারী বৃষ্টিপাত, ঘন কাদা ও ধসের কারণে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিহত ও নিখোঁজদের উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, উদ্ধার করা তিনটি লাশ সেখান থেকে সরিয়ে নিতে বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন উদ্ধারকারীরা।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির মুখপাত্র আবদুল মুহারি বলেন, শনিবার থেকে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে একটি বাঁধও ভেঙে গেছে, যার ফলে বোন বোলাঙ্গোর পাঁচটি গ্রামে ৩ মিটার (১০ ফুট) পর্যন্ত বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে প্রায় ৩০০ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে সহস্রাধিক বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
অননুমোদিত খনিতে কাজ ইন্দোনেশিয়ায় খুবই সাধারণ ঘটনা। গুরুতর আহত বা মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে এসব খনিতে কাজ করে হাজার হাজার মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে।
ভূমিধস, বন্যা ও টানেল ধসে পড়ার মতো ঘটনায় মাঝে মাঝেই এখানকার শ্রমিকরা বিপদের সম্মুখীন হন। স্বর্ণের আকরিক প্রক্রিয়াজাতকরণের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিষাক্ত পারদ ও সায়ানাইড থাকে। অথচ অধিকাংশ সময় খুব হালকা আবার কখনো কখনো কোনো সুরক্ষাই ব্যবহার করেন না শ্রমিকরা।
দেশটির সর্বশেষ বড় খনি দুর্ঘটনা ঘটে ২০২২ সালের এপ্রিলে। উত্তর সুমাত্রার ম্যান্ডেলিং নাটাল জেলায় একটি অবৈধ ঐতিহ্যবাহী স্বর্ণের খনিতে ভূমিধস হলে সেখানে ১২ জন নারী শ্রমিক নিহত হন।
এর আগে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশের একটি অবৈধ স্বর্ণের খনিতে অস্থায়ী কাঠের কাঠামোর মাটি সরে যায় এবং বিপুল সংখ্যক গর্তের কারণে মাটি ধসে পড়ে। ওই ঘটনায় ৪০ জনেরও বেশি মানুষ মাটিচাপা পড়ে মারা গিয়েছিল।
সূত্র : এপি/ইউএনবি