১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

প্রবল চাপে কাতার ছাড়ছেন হামাস নেতারা

কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল-সানির সাথে হামাসের পলিটব্যুরোর সদস্য ইসমাইল হানিয়া (বামে) এবং কর্মকর্তা খালেদ মেশাল। দোহায় ২০১৬ সালে ছবিটি তোলা হয়েছিল - ছবি : টাইমস অব ইসরাইল

ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যায় দাবি না মেনে বরং কাতার ত্যাগকেই শ্রেয় মনে করছেন গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নেতারা। ফলে এখন ওমান বা অন্য কোনো দেশে পাড়ি জমানোর বিষয়টি ভাবছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বরাত দিয়ে কয়েকটি পত্রিকা এ খবর প্রকাশ করেছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে এক আরব মধ্যস্ততাকারী জানান, যুদ্ধবিরতি আলোচনা আবারো স্থবির হয়ে পড়েছে। খুব শিগগিরই শুরু হবে, এমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। হামাস ও আলোচকদের মধ্যে অনাস্থা বাড়ছে।

আরেক আরব মধ্যস্তাকারী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, 'আলোচনা ভণ্ডুল হওয়াটা একেবারেই সত্যি। তারা যদি বন্দী বিনিময়ের চুক্তিতে হামাস নেতারা রাজি না হলে বহিষ্কারের হুমকির মুখে পড়বে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ইসরাইলের সাথে সাময়িক যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হচ্ছে না হামাস। এতে হামাসের হাতে আটক বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে অল্প কিছু দিন যুদ্ধ বন্ধের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু হামাস মনে করছে, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হতে হবে। ইসরাইলি বাহিনীকে গাজা ত্যাগ করতে হবে। উদ্বাস্তু সবাইকে তাদের বাড়িঘরে ফিরতে দিতে হবে। এই প্রস্তাবে ইসরাইল রাজি হচ্ছে না। আর ইসরাইল রাজি না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও তাতে সম্মতি দিচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে হামাস নেতারা যাতে কাতারে থাকতে না পারে, সেজন্য কাতারের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। হামাস নেতাদের বলা হচ্ছে, মার্কিন প্রস্তাবে রাজি না হলে তাদেরকে কাতার ত্যাগ করতে হবে। হামাস নেতারা মনে করছেন, অন্যায় দাবি না মানার চেয়ে চেয়ে কাতার ত্যাগ করাই উত্তম হবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার দিকে এগুচ্ছিল ওমানও। গত বছর ওমান তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে ইসরাইলকে অনুমতিও দিয়েছিল। কিন্তু ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে ওই অনুমতি বাতিল করে ওমান।

এদিকে হামাস নেতারা মার্কিন দাবি না মেনে কাতার ত্যাগ করার বিষয়টি বিবেচনা করায় ইসরাইল ভয় পেয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেরুসালেম পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, হামাস নেতারা কাতার ত্যাগ করলে ইসরাইলি বন্দীদের মুক্ত করার ব্যাপারে যে আলোচনা চলছে, তা ভেঙে যেতে পারে।

আবার কাতারও মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকায় থাকবে কিনা তা নিয়ে ভাবছে। কয়েক দিন আগে কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-সানি ঘোষণা করেছেন, তারা ইসরাইল ও গাজার মধ্যে মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা পালন করবে কিনা তা নিয়ে নতুন করে ভাবছে।

তিনি বলেন, 'রাজনীতিবিদেরা তাদের নিজস্ব স্বার্থে আমাদের অবস্থানের অপব্যবহার করছে।'

তিনি আরো বলেন, 'উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে সেজন্য তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ব্যাপক যোগাযোগ করেছি আমরা। আমরা এই অঞ্চলের সকল পক্ষের কাছ থেকে শুনছি যে তারা যুদ্ধ চায় না। এই অঞ্চলে উত্তেজনা আর বাড়তে না দেয়ার সর্বোত্তম উপায় হলো গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা।'

সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট ও টাইমস অব ইসরাইল


আরো সংবাদ



premium cement

সকল