০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

যুক্তরাষ্ট্রে ২ দিনের যাত্রাবিরতি করবেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট

যুক্তরাষ্ট্রে ২ দিনের যাত্রাবিরতি করবেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট - ছবি : সংগৃহীত

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট শনিবার দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সফরের জন্য রওনা হয়েছেন। সফরকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে দু'দিনের যাত্রাবিরতি করবেন বলেও কথা রয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তার প্রথম সফর।

হাওয়াই এবং গুয়াম অঞ্চলে পরিকল্পিত যাত্রাবিরতিকে ঘিরে ইতোমধ্যেই বেইজিং তীব্র সমালোচনা করেছে। চীন তাইওয়ানকে তাদের নিজস্ব অঞ্চল বলে দাবি করে। একইসাথে চীন দ্বীপটির প্রধান সমর্থক এবং সামরিক সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যেকোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের বিরোধিতা করে।

লাই চিং-তে প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের তিন কূটনৈতিক মিত্র- মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, টুভালু এবং পালাউ পরিদর্শনের জন্য সপ্তাহব্যাপী ভ্রমণে রওনা হয়েছেন।

লাই চিং-তে রওনা হওয়ার আগে তাওইউয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বলেন, 'আমি গণতন্ত্র, শান্তি ও সমৃদ্ধির মূল্যবোধ ব্যবহার করে আমাদের মিত্রদের সাথে আমাদের সহযোগিতার প্রসার অব্যাহত রাখতে চাই, আমাদের অংশীদারিত্বকে আরো গভীর করতে এবং বিশ্বের কাছে তাইওয়ানকে শুধু গণতন্ত্রের মডেল হিসেবে নয়, বরং বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধ উন্নয়নের প্রচারে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে দেখাতে চাই।'

তাইওয়ান ডজনখানেক দেশের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখলেও তাদের মাত্র ১২টি আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক মিত্র রয়েছে। স্বশাসিত এ গণতন্ত্র দেশটি সম্প্রতি চীনের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে।

উড্ডয়নের কিছুক্ষণ আগে একটি বক্তৃতায় লাই বলেন, এই সফর 'মূল্যবোধ-ভিত্তিক গণতন্ত্রের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে।' তিনি 'এই সফর সফল করতে সহায়তা করার জন্য' যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

লাই, সরকারি কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমদের বহনকারী তাইওয়ানের পতাকাযুক্ত চীন এয়ারলাইন্সের বিমানটিকে নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাইওয়ান চারটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে।

বিমান চলাকালীন লাই 'তাইওয়ানের আন্তর্জাতিক পরিসর উন্মুক্ত করতে একসাথে যাত্রা করার জন্য' বিমানের সকল যাত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি এ সফরকে একটি 'মহান ঘটনা' হিসেবে বর্ণনা করেন।

লাই বলেন, 'আগামী সাত দিন তাইওয়ানকে অবিচলিতভাবে এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে বিশ্বে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা অবশ্যই একসাথে কাজ করতে সক্ষম হবো।'

এই সফরটি চীনের তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। দেশটি অঙ্গীকার করেছে যে তাইওয়ানের স্বাধীনতা অর্জনের যেকোনো প্রচেষ্টাকে তারা 'দৃঢ়তার সঙ্গে দমন' করবে।

লাই তার যাত্রাবিরতির সময় যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রশাসনের কোনো সদস্যের সাথে দেখা করবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।

নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জুলাইয়ে ব্লুমবার্গের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে বলেন, তাইওয়ানকে তাদের প্রতিরক্ষার জন্য অর্থ দিতে হবে। দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোটি কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা অস্ত্র কিনেছে।

চীনের সামরিক অভিযান থেকে তিনি দ্বীপটিকে রক্ষা করবেন কিনা এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান ট্রাম্প। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, তারা তাইওয়ানের কাছে এফ-১৬ বিমান বহরের ৩৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার মূল্যের খুচরা যন্ত্রাংশ এবং সরঞ্জামগুলো বিক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে এবং সেইসাথে একটি কৌশলগত যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য সমর্থন প্রদান করবে।

যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান রিলেশান্স অ্যাক্টের অধীনে দ্বীপটির আত্মরক্ষার জন্য সাহায্য করতে বাধ্য হলেও চীন তাইওয়ানকে আক্রমণ করলে তারা কখনো জড়িত হবে কিনা তা নিয়ে কৌশলগত অস্পষ্টতা বজায় রেখেছে।

আমেরিকার নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদদের এই দ্বীপটি পরিদর্শন করার বিষয়েও চীন দৃঢ়ভাবে আপত্তি জানায়। কারণ তারা বিদেশী সরকার এবং তাইওয়ানের মধ্যে যেকোনো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগকে তাইওয়ানের ওপর তাদের সার্বভৌমত্বের দাবির লঙ্ঘন হিসেবে দেখে। ওয়াশিংটন ১৯৭৯ সালে তাইপেই থেকে বেইজিংয়ে তাদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পরিবর্তন করে।
সূত্র : ভিওএ


আরো সংবাদ



premium cement