যেদিকে মোড় নিচ্ছে ভেনেজুয়েলা সংকট
- বিবিসি
- ৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:০১
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো নতুন নির্বাচন দেয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, অন্য দেশের দ্বারা প্রতারিত হয়ে নির্বাচন দেবেন না তিনি।
এর আগে বিরোধী দলীয় নেতা হুয়ান গুইয়াদো বুধবারও জনগণকে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করার আহ্বান করেছেন। এই বাস্তবতায় আগামী কয়েক সপ্তাহ ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটকে কেন্দ্র করে বিশ্বের পরাশক্তি দেশগুলো দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে ভেনেজুয়েলার বর্তমান পরিস্থিতি ভবিষ্যতে কোন দিকে মোড় নিতে পারে?
যেখানে চার রকমের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কী সেই চার রকমের সম্ভাবনা?
সবকিছু একই রকম আছে
ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি এবার হয়তো খুব দ্র্রতই পরিবর্তন হবে। দেশটির উপার্জনের সবচেয়ে বড় উৎস তেল-যার ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভেনেজুয়েলার সরকারি তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ-এর উপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সুদূর-প্রসারী প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটির নাগরিকদের মধ্যে হতাশা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক স্টিভ হ্যাঙ্ক।
নতুন নির্বাচনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাদুরো, যদিও তার বিরুদ্ধে বুধবারও বিক্ষোভ করে বিরোধীরা। ট্রাম্প প্রশাসনের দেয়া এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বেশ তীব্র হবে বলেই মনে করছেন হ্যাঙ্ক।
বর্তমানে, ভেনেজুয়েলা যত তেল রপ্তানি করে তার মধ্যে ৪০ শতাংশ তেলই আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তেলের উপরে জারী করা এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন অন্যান্য দেশও ভেনেজুয়েলার তেলের দাম কমিয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে, ২০১৩ সাল থেকেই মাদুরোকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিল রাশিয়া, চীন ও তুরস্ক। ফলে হয়তো পরিস্থিতি একই রকম থেকে যাবে।
নতুন নির্বাচন ও মাদুরো
ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা হুয়ান গুইয়াদো নিজেকে আত্ম-স্বীকৃত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠে। কারণ গুইয়াদোকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশকিছু দেশ অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
কিন্তু মাদুরো যদি পুন:নির্বাচনের দাবি মেনে নিয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিতেন তাহলে এটি স্পষ্ট হয়ে যেতো যে, ২০১৮ সালে মে মাসের নির্বাচন ছিল কারচুপিতে ভরা এক প্রহসন-এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
স্পেনের নাভারা ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক এমিলি জে ব্লাস্কো বলেছেন, মাদুরো যদি পুন:নির্বাচনের দাবী মেনে নেয় তাহলে এর অর্থ হচ্ছে, তাকে আসলে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। কারণ পুন:নির্বাচনের অর্থ হচ্ছে আগের নির্বাচনটিতে কারচুপির অভিযোগ মেনে নেয়া।
ভেনেজুয়েলাতে এরপর নির্বাচন হলে সেটিকে জাতিসংঘের সিকিকিউরিটি কাউন্সিল দিয়ে মনিটরিং করানোর কথা বলেছেন উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসে মুজিকা।
আপোষ-রফা: কতদূরে?
ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ সংকট অন্তর্জাতিক ইস্যুতে রূপ নিয়েছে বিরোধী দলীয় নেতা মিস্টার গুইয়াদো নিজেকে আত্ম-স্বীকৃত প্রেসিডেন্ট ঘোষণার মধ্য দিয়ে।
গুইয়াদোকে সমর্থন জানায় ভেনেজুয়েলার প্রতিবেশী দেশ ব্রাজিল থেকে শুরু করে বিশ্বের অন্যান্য আরও বেশ কয়েকটি দেশ।
তবে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে ম্যানুয়েল লোপেজ বেশ কূটনৈতিক একটি অবস্থান নিয়েছেন। মাদুরো ও গুইয়াদোর মধ্যে যে দ্বন্দ্ব চলছে তা সমাধানের চেষ্টায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করতে রাজি হয়েছে তিনি।
তবে, আপস ও সংকট মীমাংসার জন্য আরও বেশ লম্বা সময় প্রয়োজন। কারণ এর আগে আপোষের অনেক আলাপই শেষ পর্যন্ত আর সফল হয়নি। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের চাপকেও বেশ গুরুত্বের সাথেই দেখা হচ্ছে।
সামরিক হস্তক্ষেপ
ভেনেজুয়েলায় সেনা মোতায়েন করার কোনও চিন্তা-ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, সব ধরণের পদক্ষেপের কথাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এরপরেই গত সোমবার বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশিত হয়। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর জন বল্টন একটি নোটপ্যাড নিয়ে যাচ্ছেন এবং সেটিতে লেখা আছে 'কলম্বিয়াতে ৫ হাজার সৈন্য'।
অর্থাৎ কলম্বিয়া হচ্ছে ভেনেজুয়েলার সীমান্ত এবং সেখানে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি সামনে আসে এই ছবির মাধ্যমে।
ভেনেজুয়েলার সাথে কলম্বিয়ার প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তে সেনা মোতায়েন করতে হলে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন। আর কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট মাদুরোর তীব্র বিরোধিতা করছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা