বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধীর কয়েকটি তথ্য
- বিবিসি
- ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৬:৪৭, আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৭:০৮
মেক্সিকোর মাদ্রক সম্রাট জোয়াকুইন 'এল চ্যাপো' গুজমানকে শেষ পর্যন্ত যখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যার্পন করা হয়, ততদিনে তিনি 'আধুনিক সময়ের সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী' হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছেন। মেক্সিকোর কঠোর সুরক্ষাবেষ্টিত কারাগার থেকে দুইবার পালিয়ে গেয়েছিলেন তিনি। গত কুড়ি বছর যাবৎ তিনি মার্কিন মুলুকে 'মোস্ট ওয়ান্টেড' তালিকায় রয়েছেন।
শিকাগোর ক্রাইম কমিশন তাকে 'জনশত্রু' উপাধি দিয়েছে।
দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রত্যার্পন করার পর তাকে মেক্সিকোর কুখ্যাত অপরাধ সাম্রাজ্য সিনাওলা গোত্রের নেতৃত্ব দেয়া এবং ১৪শত কোটি মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের মাদক পাচারের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি। কৌঁসুলিদের বিশ্বাস, ৬১ বছর বয়েসী এই মাদক সম্রাটকে বাকি জীবন কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত কারাগারের ভেতরে রাখার জন্য যথেষ্ঠ প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে।
মেক্সিকোর স্থানীয় ভাষায় এল চ্যাপো নামের অর্থ ছোটখাটো। এই ছোটখাটো মানুষটির বিরুদ্ধে মাদক পাচার, অস্ত্র ও অর্থ পাচারসহ মোট ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু এখনো তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। আগামী চার মাস এই মামলা চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার মামলার জুরি নির্বাচন করা হয়েছে, এবং আগামী ১৩ই নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক শুরু হবে।
কিন্তু এল চ্যাপোর এই মামলা অন্য যেকোন মামলার চেয়ে আলাদা।
কোথায় ভিন্নতা এই মামলার?
১. অর্থের পরিমাণ
কৌঁসুলিরা এল চ্যাপোর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ এনেছেন এবং তার ১৪শত কোটি মার্কিন ডলারের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার অবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেন, তার সম্পদের মধ্যে এল চ্যাপোর কার্টেল বা সাম্রাজ্য চালানোর খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
২০০৯ সালে তার সম্পদের পরিমাণ হিসেব করে ফোবর্স ম্যাগাজিন দেখিয়েছিল সিনাওলা কার্টেল থেকে বছরে তিনশো কোটি ডলারের বেশি আয় করেন তিনি।
সেসময় মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা হোরোইন, কোকেন, মারিজুয়ানা, এবং মেথামফেটামিনসহ সব ধরণের মাদকে ন্যূনতম ২৫ শতাংশ এল চ্যাপোর হাত ধরে হত বলে ফোবর্সের অনুমান।
২. অভিযোগসমূহ
যুক্তরাষ্ট্রের মাদক মামলার ইতিহাসে এই মামলাকে বলা হচ্ছে সবেচয়ে বড় মামলা। কৌসুলিরা প্রমান হিসেবে হাজার হাজার পৃষ্ঠার দলিল, ছবি এবং সোয়া এক লক্ষ অডিও রেকর্ডিং আদালতে হাজির করতে যাচ্ছেন।
এল চ্যাপোর বিরুদ্ধে ৩৩টি হত্যা মামলাও রয়েছে। বারবার এই মামলার শুনানি পিছিয়েছে।
৩. নিরাপত্তা
এর আগে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত কারাগার থেকে দুইবার পালিয়ে গিয়েছিলেন এল চ্যাপো। যে কারণে তার নিরাপত্তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ ভীষণ উদ্বিগ্ন। আদালতে শুনানি কাজ চলার সময় ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়তি নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যার্পনের পর থেকে তাকে ম্যানহাটানের সবোর্চ্চ নিরাপত্তা বেষ্টিত কারাগারের বিশেষ সেলে দিনে ২৩ ঘন্টা করে রাখা হয়। ব্রুকলিনে শুনানি শুরু হবার আগে যখন তাকে আদালতে আনা হত, তখন নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত সেতুটির দুই প্রান্ত বন্ধ করে রাখা হয়।
সোয়াট টিম মোতায়েন করা হত, সাথে থাকত অ্যাম্বুলেন্স আর পুরো পথ পাহারা দিত কয়েকটি হেলিকপ্টার।
৪. মামলা নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ
এই মামলাটি নিয়ে জনগনের মধ্যে ব্যপক আগ্রহ রয়েছে। বিচারকেরা বলছেন, এটি একটি নজিরবিহীন মামলা। এল চ্যাপোকে নিয়ে ইতিমধ্যেই চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং অভিনেতাদের মধ্যেও আগ্রহ রয়েছে। অভিনেতা শ্যন পেন ২০১৬ সালে রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনের হয়ে মাদক সম্রাটের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন, যদিও তিনি জানতেন না তদন্তকারীরা তার সূত্র ধরে এল চ্যাপোর কার্টেলের বিস্তারিত জানতে চান।
তার সঙ্গে সাক্ষাতের পরপরই তৃতীয়বারের মত গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এল চ্যাপো।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা