জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সংশোধন নিয়ে ভোগান্তি
- ১০ মার্চ ২০২০, ০০:০০
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সারা দেশে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সংশোধন কার্যক্রম দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ। এতে পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারছেন না নাগরিকরা। গত ১৩ ফেব্র“য়ারি থেকে নতুন পদ্ধতিতে (নতুন সার্ভার) জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কাজ করছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তাই এই সংশোধন কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০টি অঞ্চল থেকে এই সেবা দেয়া হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে এ সেবা কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়।
জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় সূত্র জানায়, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন অনুযায়ী দেশে ১৬টি সেবা পেতে জন্ম সনদের দরকার হয়। এর মধ্যে পাসপোর্ট পেতে, বিয়ে নিবন্ধনে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে, সরকারি-বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় নিয়োগ পেতে, ব্যাংক হিসাব খুলতে, ভোটার হতে, মোটর যানের নিবন্ধন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য এ সনদ বেশি দরকার হয়। আগে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের একটি সার্ভার থেকে সারা দেশে জন্মনিবন্ধন দেয়া হতো। কিন্তু এটিতে কিছু দুর্বলতা ছিল। এতে একজন ব্যক্তি একাধিক জায়গা থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে পারতেন। এখন নতুন সার্ভারে মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরসহ সব ধরনের তথ্য থাকছে। এতে চাইলেই কেউ একাধিক সনদ নেয়ার সুযোগ পাবে না। এগুলো নতুন সার্ভারে যুক্ত করতেই সময় বেশি লাগছে।
অঞ্চল-৫ এর জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন সহকারী আবদুল মান্নান বলেন, জন্মনিবন্ধন সংশোধনের ৫০ থেকে ৬০টি আবেদন জমা পড়ে আছে। কিন্তু সার্ভার সমস্যা থাকায় তা সংশোধন করা যাচ্ছে না। তাই নতুন আবেদন জমা নেয়া হচ্ছে না। তবে গত ১৩ ফেব্র“য়ারি রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে সারা দেশে জন্ম ও মৃত্যুসনদ সংশোধন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখায় দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু কবে নাগাদ এ সেবা চালু করা হবে, তা বলা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নতুন সিস্টেমে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের তথ্যাদি স্থানান্তরের জন্য সব ধরনের তথ্য সংশোধন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। জনগণের সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। নতুন জন্ম ও মত্যুনিবন্ধনের কার্যক্রম আগের মতোই চলমান থাকবে।’
জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আগের সার্ভার থেকে নতুন এই সার্ভারে প্রায় ১৭ কোটি (সারা দেশ) তথ্য স্থানান্তর করা হচ্ছে। এ স্থানান্তরে কিছু কারিগরি জটিলতাও তৈরি হয়েছে। এতে স্থানান্তর কার্যক্রম দেরি হচ্ছে। তবে স্থানান্তর প্রক্রিয়া এখন শেষ পর্যায়ে। শিগগির এই সেবা কার্যক্রম শুরু করা হবে। অনেক সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে জন্মনিবন্ধনে ভুল হয়। তাই সংশোধনের দরকার হয়। তবে সংশোধনপ্রক্রিয়ার জন্য যে নতুন সার্ভার হওয়ার কথা, তা শেষ পর্যায়ে রয়েছে।