২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ডেঙ্গু রোধে এখনই তৎপর হওয়ার পরামর্শ

-

নতুন বছরে ভরা মৌসুমে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ কেমন হবে তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট আভাস না মিললেও মশাবাহিত রোগের বিস্তার ঠেকাতে এখন থেকেই কাজ শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ভবনে সম্প্রতি ‘এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে করণীয়’ নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভা থেকে এ পরামর্শ দেয়া হয়। গত বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরে এডিস মশার বিস্তার রোধে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা: সানিয়া তহমিনা।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু মোকাবেলা না করা গেলে অনেক মানুষ আবার আক্রান্ত হয়ে একসাথে হাসপাতালে যাবে। তখন সবার দিকে ভালো করে নজর দেয়া যাবে না। নজর দিতে না পারলে কিন্তু মৃত্যুর বিষয়টি চলে আসে। সুতরাং অন্তর থেকে আহ্বান জানাই বিষয়টি নিয়ে কাজ করার।
ডিসেম্বরের জরিপে রাজধানীতে ‘খুব কম’ এডিস মশার লার্ভা পাওয়ার তথ্য তুলে ধরেও তাতে নিরাপদ বোধ করার কারণ নেই বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা এডিস মশার বংশবিস্তারের জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরি করেছে। এই বৃষ্টিপাত কিউলেক্স ও এডিস মশার জন্য উপযোগী হয়েছে। এর ফলে বছরের প্রথমেই যদি ডেঙ্গুর পরিমাণ বেড়ে যায়, তা হলে কিন্তু সিজনের সময় কী হবে সেটা ভাবার বিষয়। আশা করি, এবার বেশি কিছু হবে না, কিন্তু আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস ঘরের ভেতরে ও আশপাশে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে জন্মায়। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জমে থাকে বলে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে এই মশার বিস্তার বেশি হয়। সে কারণে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবও বেশি হয় বলে এ সময়কে ডেঙ্গুজ্বরের ভরা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। প্রাকৃতিকভাবে জুন থেকেই শুরু হয় ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশার প্রজনন ঋতু। গত বছর মে মাস থেকেই ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়, জুন ও জুলাইয়ে ক্রমেই বেড়েছে আগস্টে তা প্রায় মহামারী আকারে রূপ নেয়।
সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে সামনের মৌসুমে ডেঙ্গু মোকাবেলা করা সম্ভব বলে মন্তব্য করে অধ্যাপক কবিরুল বলেন, জানুয়ারিতে বৃষ্টি হওয়ায় কিউলেক্স এবং এডিস দুটো সমস্যা আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। এটা সমাধানে আমাদের ইন্টিগ্রেটেড ভিক্টর ম্যানেজমেন্টে যেতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণ একটা যুদ্ধ, এই যুদ্ধে জয়ী হতে হলে সব অস্ত্র একসাথে ব্যবহার করতে হবে।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হাই বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে। এত দিন শুধু সচেতনতা বাড়াতে কাজ করলেও এবার থেকে মশার উৎপত্তিস্থল পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। নাগরিকদের অসচেতনতায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছিল। গত বছর আমরা বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছি, কাদের অবহেলায় ডেঙ্গু বিস্তার লাভ করেছে। এবারো আমরা অভিযান পরিচালনা করব। এবার এ ধরনের পরিবেশ পাওয়া গেলে জরিমানার পাশাপাশি আইন অনুযায়ী অন্যান্য ব্যবস্থাও নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল