নতুন সড়ক পরিবহন আইনের প্রয়োগ
- বেসামাল বিআরটিএ
- ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
নতুন ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ কার্যকর শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। এর ফলে ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকরাও হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে। যদিও বিআরটিএ থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্তি নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।
বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাড়ে ছয় লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স পেইন্ডিং। প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতার কারণে শিগগিরই এ সমস্যার উত্তরণ হচ্ছে না। আবার ফিটনেসবিহীন যানবাহনকে ধরতে আদালতের নির্দেশনা এবং নতুন আইনে জরিমানা ও শাস্তি বেড়ে যাওয়ায় বিআরটিএ কার্যালয়ে ভিড় বেড়েছে অনেক বেশি। বিআরটিএ কতৃপক্ষ বলছে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্স ছাড়া চালকদের যানবাহন বা গাড়িতে তেল, গ্যাস, পেট্রল ও জ্বালানি সরবরাহ না করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে পেট্রোবাংলা ও ঢাকা মহানগর পুলিশকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বিআরটিএ ঢাকা মেট্রোর মিরপুর কার্যালয় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন পরিবহনের দীর্ঘ লাইন। কার্যালয়ের ভেতরে হাজারের বেশি মোটরসাইকেল পার্ক করা। কেউ নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য, আবার কেউ নবায়ন করতে এসেছেন। বিআরটিএ কার্যালয়ের ভেতরে এনআরবি ব্যাংক শাখায় সেবাগ্রহীতাদের উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টাব্যাপী অপেক্ষায় থেকে টাকা জমা দিচ্ছেন। অনেকের আবার গাড়ির কাগজপত্র হলেও হয়নি স্মার্ট নম্বরপ্লেট। সেখানে সব সেবাই মিলছে, তবে চাহিদার তুলনায় সেবার গতি কম।
বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মোটরযান নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মোটরযানের ফিটনেস সার্টিফিকেট ও ট্যাক্স টোকেন সেবা দিচ্ছে বিআরটিএ। মোটরযান নিবন্ধনের ক্ষেত্রে মালিকানা বদলি, রেট্রো-রিফ্লেক্টিভ নম্বরপ্লেট, ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন, মোটরযানের ফিটনেসের ক্ষেত্রে ফিটনেস ইস্যু ও নবায়ন, ট্যাক্স টোকেন সেবার ক্ষেত্রে ট্যাক্স টোকেন ইস্যু ও নবায়ন এবং রুট পারমিট ইস্যু ও নবায়নের জন্য ভিড় অনেক বেশি।
বিআরটিএতে সেবা নিতে আসা বাড্ডার রায়হান জামান বলেন, নতুন আইন হয়েছে। সেজন্যই আমার বাইকের ডিজিটাল নম্বরপ্লেট নিতে এসেছি। তবে এখানে আসার পর দেখছি উপচে পড়া ভিড়। খুব চাপ যাচ্ছে বিআরটিএ’র ওপর।
মগবাজার থেকে আগত রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার গাড়ির সব কাগজপত্র আপডেট করতে এসেছি। এসে দেখছি খুব চাপ। সময় বেশি লাগছে। কিছু মিস ম্যানেজমেন্ট হচ্ছে। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। আমার মনে হয়, নতুন আইন হলেই শুধু হবে না, সার্বিক দিক দিয়ে অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে। এখানে যারা সেবা নিতে আসছেন তাদের সবাইকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেবা দিতে পারছে না বিআরটিএ। কারণ চাহিদা বেশি, সে তুলনায় বিআরটিএর নিজস্ব কাঠামো দুর্বল। এগুলোও আগে ঠিক করতে হবে।’
এ ব্যাপারে বিআরটিএ মিরপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: শফিকুল আলম সরকার বলেন, ‘গত সপ্তাহের থেকে ভিড় কমলেও ফিটনেস সনদ নিতে এখানে চাপ সবচেয়ে বেশি। পর্যায়ক্রমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব সামাল দিতে আমরা চেষ্টা করছি। তবে সম্প্রতি ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে লার্নারের সংখ্যা অনেক বেশি। আর সব ধরনের নবায়নের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন ও টাকা জমা দেয়ার পর দ্রুতই কাগজ দেয়া হচ্ছে।’