শিশুবান্ধব ঢাকা গড়তে চাই আধুনিক পরিকল্পনা
- ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
জায়গা কম কিন্তু লোকসংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব। এর জন্য নিকটতম দূরত্বে স্কুল স্থাপন, পর্যাপ্ত খেলার মাঠ ও পার্ক তৈরি করা, নগরে সবুজ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, নিরাপদ আবাসিক এলাকা নিশ্চিত করতে হবে। আর এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলেই শিশুবান্ধব ঢাকা গড়ে উঠবে। গত শনিবার শিশুবান্ধব আদর্শ নগরী গড়ে তুলতে ও শিশুদের চাহিদা এবং স্বপ্নের প্রতিফলন নিশ্চিত করতে রাজউকের সভাকক্ষে রাজউক ও সেভ দ্য চিলড্রেনের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
রাজউকের চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ বলেন, শিশুদের কাছ থেকে যে প্রস্তাবগুলো আমরা পেয়েছি তার সবই আমরা প্রণয়নাধীন ড্যাপ-এ অন্তর্ভুক্ত করেছি। শিশুদের দায়িত্ব হলো তাদের প্রস্তাব বা মতামতগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা মনিটরিং করা। তিনি বলেন, শিশুরা তাদের প্রস্তাবনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে খেলার মাঠের অভাবকে। তাই আমি রাজউকের সব প্রকল্পের খালি জমি কাউকে বরাদ্দ না দিয়ে বিনোদন বা অবকাশ যাপনের জন্য পার্ক কিংবা সবুজ চত্বর করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি।
শিশুরা নিজেরা সচেতন হলে তোমাদের বাড়িও সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন করতে পারো। রাজউক থেকে নকশা অনুমোদন করে সেই নকশা অনুযায়ী বাড়ি তৈরি করতে বড়দের বাধ্য করতে তিনি শিশুদের অনুরোধ করেন। শিশুদের মোবাইল বা ট্যাবে সময় না কাটিয়ে বেশি বেশি পড়াশোনা করার জন্য বলেন। তিনি বলেন, ড্যাপ বাস্তবায়ন শুধু রাজউকের একার কাজ নয়, এর সাথে সরকারি-বেসরকারি অনেক সংস্থা জড়িত। পরিকল্পনামাফিক কাজ করে রাজধানী শহরের উন্নয়নে তাই সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
রাজউক চেয়ারম্যান আরো বলেন, ড্যাপ প্রণয়নের ক্ষেত্রে আমরা পরিকল্পনার সাথে জড়িত দেশের সেরা বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করেছি। দেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে এর সাথে সম্পৃক্ত করেছি। সুতরাং ভবিষ্যতে তাদের প্রণয়নকৃত ড্যাপ-এর মাধ্যমে আমরা একটি পরিকল্পিত ঢাকা শহর পাবো বলে আশা রাখি। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের চার পাশের নদীগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাস্টারপ্ল্যান করেছেন। নদীগুলোর দূষণ রোধ করতে এবং তা পরিষ্কার করে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী কয়েকটি সংস্থা কাজ করছে।
সাবেক কম্প্রিহেনসিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানের (সিডিএমপি) প্রকল্প পরিচালক মো: আবদুল কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশের সব কিছুই রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করে করা হচ্ছে। ফলে বিকেন্দ্রীকরণ না হলে পরিকল্পিত ঢাকা নগরী সম্ভব নয়। শুধু একটি নির্দিষ্ট এলাকা নয়, নগরীর সব পাড়া-মহল্লায় সব নাগরিক সুবিধা প্রদানের বিষয়টি পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সেভ দ্য চিলড্রেনের ডেপুটি ডিরেক্টর সৈয়দ মতিউল আহসান বলেন, আমাদের দেশে গৃহীত মেগা প্রকল্পগুলো শিশুদের কথা ভেবে করা হয় না। পরিকল্পিত শহর গড়ার ক্ষেত্রে শিশুরা তাদের চাহিদা মোতাবেক কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। শিশুরা সবার মঙ্গল কামনা করে। তাই তারা যে শহরের স্বপ্ন দেখে সে শহর জনবান্ধব হবে। পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত ঢাকা গড়তে শিশুদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়ার জন্য তিনি রাজউককে ধন্যবাদ জানান।
ঢাকার বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত ২০০ শিশুর সাথে রাজউক কর্তৃপক্ষ ও উপস্থিত অন্য অংশগ্রহণকারীদের সাথে সক্রিয় আলোচনায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ড্যাপ নিয়ে তাদের চিন্তাভাবনা ও প্রস্তাবনাগুলো চূড়ান্ত করা হয়।