ভুয়া ঠিকানা দিয়ে উবারে নিবন্ধন করেন চালকরা
- ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
উবার চালকরা ভুয়া ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করছে বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ। গত রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৫ এপ্রিল সকালে ব্র্যাক বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহমিদা হক লাবণ্য (২১) নিহত হওয়ার পর তাকে বহনকারী উবার বাইকার সুমনকে ২৬ এপ্রিল মোহাম্মদপুর থেকে এবং ২৭ এপ্রিল কাভার্ডভ্যানসহ চালক আব্দুর রহমানকে আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। অবাক করার ব্যাপার হলো, হাসপাতালে উবারের বাইকচালক সুমন যে ঠিকানা দিয়েছিলেন, সেই ঠিকানা ভুয়া। এমনকি তার নম্বরটি দিয়ে যে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া। উবারের রেজিস্ট্রেশনের জন্য সুমন যে ঠিকানা দিয়েছে, তাও ভুয়া। এসব কারণে তাকে খুঁজে পেতে সময় লাগে। এ বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখতে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছে পুলিশ।
উবারে ভুয়া ঠিকানা দিয়ে রাইডার নিবন্ধন করে সড়কে বাইক চালানোর অনুমতি পায়। এটা দেখার কেউ নেই। রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই চালকদের অনুমতি দিচ্ছে। এসব চালক দক্ষ নয়, মাদকসেবী কেউ কেউ। নারীদের বাইকে তুলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হঠাৎ হঠাৎ বাইকে ব্রেক ধরে। এগুলো মনিটরিং করে না রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো। তাদের আরোহীদের জন্য নি¤œমানের হেলমেট দেয়া হয়। এসব দ্রুত ঠিক করতে হবে।
সুমন ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করায় তাকে খুঁজে পেতে পুলিশের সময় লেগেছে। উবার কর্তৃপক্ষও প্রথমে সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ। পরে সুমনকে ২৬ এপ্রিল রাতে মোহাম্মদপুরের নবীনগর এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। লাবণ্যকে চাপা দেয়া কাভার্ডভ্যানসহ চালক আব্দুর রহমান পালিয়ে গেলে সড়কের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেলেও সেগুলো স্পষ্ট ছিল না। তাই কাভার্ডভ্যানটি শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে একটি সিসি ক্যামেরায় কাভার্ডভ্যানের গায়ে লেখা কোম্পানির নাম দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। এরপর আশুলিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কলেজ গেটে অবস্থানকালে তার থেকে পাঁচ মিনিটের দূরত্বে অবস্থানকারী একজন উবার কলারের (ফাহমিদা হক লাবণ্য) কল পেয়ে সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে সুমন তাকে ফোন দেন। লাবণ্য খিলগাঁও ছায়াবীথি মসজিদের সামনে যেতে চান জানিয়ে সুমনকে শ্যামলী ৩ নম্বর রোডের ৩১ নম্বর বাসার সামনে আসতে বলেন। সেখান থেকে লাবণ্যকে নিয়ে কলেজ গেট দিয়ে গন্তব্যে রওনা হয় চালক। লাবণ্যকে বাইকে উঠিয়ে চালক বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাচ্ছিলেন। বাইকটি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কাছাকাছি এলে পেছন থেকে একটি কাভার্ডভ্যান বাইকটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় বাইক থেকে পড়ে যান লাবণ্য। কাভার্ডভ্যানটি তার ওপর দিয়ে চালিয়ে পালিয়ে যায়। পথচারীরা লাবণ্যকে নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ষ মামুন আল করিম