২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

রাজধানীতে কমছে না হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার

-

হাইড্রোলিক হর্ন হচ্ছে উচ্চমাত্রার শব্দ সৃষ্টিকারী বিশেষ হর্ন। আমেরিকান স্পিচ অ্যান্ড হেয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন (আশা) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, মানুষের জন্য শ্রবণযোগ্য শব্দের সহনীয় মাত্রা সর্বোচ্চ ৪০ ডেসিবল। কিন্তু হাইড্রোলিক হর্ন শব্দ ছড়ায় ১২০ ডেসিবল পর্যন্ত। এর স্থিতি ৯ সেকেন্ডের বেশি হলে ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। দেশের শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা অনুসারে রাজধানীর মিশ্র (আবাসিক ও বাণিজ্যিক) এলাকায় দূষণের সর্বোচ্চ মাত্রা ৬০ ডেসিবল। এর চেয়ে উচ্চমাত্রার শব্দে শ্রবণশক্তি হ্রাস, বধিরতা, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, বিরক্তি সৃষ্টি ও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘœ ঘটতে পারে। হাইকোর্টের রায়ে হাইড্রোলিক হর্ন আমদানি ও বিক্রি বন্ধের নির্দেশ থাকলেও তা বন্ধ হয়নি। বাংলামোটর, নবাবপুর, ধোলাইখাল এলাকায় গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রির দোকানগুলোতে হরদম এ ধরনের নিষিদ্ধ হর্ন বিক্রি হচ্ছে। বাংলামোটরে সড়কের দুই পাশের ১০টি দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রকাশ্যেই হাইড্রোলিক হর্ন বিক্রি করছেন দোকানিরা। তারা জানান, এসব হর্ন তারা কেনেন ধোলাইখাল ও নবাবপুর থেকে। শামীম মোটরসের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, দুই ধরনের হাইড্রোলিক হর্ন আছে, এগুলো ৫০০ ও এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করায় মামলা হয়েছে তিন হাজার ১২৫টি।
স্বাস্থ্য ও শ্রবণের জন্য ক্ষতিকর বলে উচ্চ আদালতে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট রাজধানীতে হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন আদালত। তখন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয় পুলিশকে। পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে গাড়ির মালিক ও চালকদের কাছের থানায় হর্ন জমা দিতে এবং এই হর্ন ব্যবহার করা গাড়ি জব্দ করতেও পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ জানিয়েছেন, হর্ন তৈরি ও কোন পথে আমদানি হয়, তা জানতে গোয়েন্দা সংস্থাকে চিঠি দেয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) যেহেতু পরিবহনকে নিয়ন্ত্রণ করে, সেহেতু তারাও যদি পদক্ষেপ নেয়, তা হলে স্থায়ী সমাধান হতে পারে।

 


আরো সংবাদ



premium cement