পুলিশের নির্যাতন ও দুর্নীতির প্রতিবাদে তিউনিসে পদযাত্রা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:১১, আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:১৬
উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিসে পুলিশের নির্যাতন ও দুর্নীতির প্রতিবাদে শত শত বিক্ষোভকারী এক পদযাত্রায় অংশ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুলিশের দুর্ব্যবহারের এক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির বিভিন্ন শহরে এক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর শনিবার এই পদযাত্রার আয়োজন করা হয়।
পদযাত্রায় বিক্ষোভকারীরা ‘ভয় নেই, রাস্তা জনগণের’ ও ‘জনগণ চায় শাসকের পতন’ স্লোগান দেয়। এক দশক আগে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে তিউনিসিয়ায় বিক্ষোভে এই স্লোগানই ব্যবহার করা হয়েছিল।
পদযাত্রায় অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীরা এসময় ১৪ জানুয়ারি থেকে গ্রেফতার হওয়া বিক্ষোভকারীদের ছেড়ে দেয়ার দাবিতে ব্যানার বহন করেন।
পুলিশ বলছে, এক সপ্তাহের বিক্ষোভে এ পর্যন্ত সাত শ’র বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ দমনে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে।
এ দিকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তত এক হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারী তরুণ ক্যাফে কর্মী মাহমুদ বলেন, ‘বিপ্লবের ১০ বছর পরে এসে আমরা তিউনিসিয়ায় পুলিশি রাষ্ট্রব্যবস্থা মানতে পারি না... এটি লজ্জার।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণের মহামারীর মধ্যেই তিউনিসে এই পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। ভাইরাস সংক্রমণে দেশটিতে এক লাখ ৯৫ হাজারের বেশি লোক আক্রান্ত হন এবং ছয় হাজারের বেশি রোগী প্রাণ হারান।
ভাইরাস সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার তিউনিসিয়ার সরকার রাত্রিকালীন কারফিউ বাড়িয়ে রাত ৮টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে। একই সাথে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেকোনো প্রকার সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
সোমবার থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন এই আদেশে অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা ও ৬৫ বছরের বেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিউনিসিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিসাফ বেন আলাইয়া।
শনিবারের পদযাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তিউনিসের হাবিব বুরগুইবা অ্যাভিনিউতে বিক্ষোভকারীদের প্রবেশ রোধে ব্যারিকেড দিয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাধারণ পোশাকের পুলিশ মোতায়েন ছিল।
২০১১ সালের বিক্ষোভে হাবিব বুরগুইবা অ্যাভিনিউকে কেন্দ্র করেই তিউনিসিয়ায় বিপ্লব সংগঠিত হয়।
বিক্ষোভকারীরা পদযাত্রায় শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষে হাবিব বুরগুইবা সড়কে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। বিক্ষোভকারীদের সমাবেশের জন্য দুই ঘণ্টার অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। দুই ঘণ্টা পরেই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।
এক দশক আগে দারিদ্র্য, দুর্নীতি ও অবিচারের বিরুদ্ধে বিপ্লবের মাধ্যমে তিউনিসিয়ায় গণতন্ত্রের উত্তরণ হলেও দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা এখনো শোচনীয়। রাষ্ট্রীয় সেবা ব্যবস্থার দুর্গতির সাথে সাথে তিউনিসিয়ার অর্থনীতি মারাত্মক বিপর্যয়ের প্রান্তে রয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা