০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

যাত্রীসেবা সুনিশ্চিত হোক\

-

কয়েক দিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোহাম্মদপুর যাওয়ার জন্য ‘উবারের’ রাইড শেয়ারিং সার্ভিস তথা মোটরসাইকেল সেবার শরণাপন্ন হলাম। সিএনজি-অটোরিকশা-ট্যাক্সি ক্যাব সার্ভিস থাকা সত্ত্বেও আমরা এটি বেছে নেই কেন? কারণ সেসবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। তাই কম ভাড়ায় উন্নত সেবা ও যানজট থেকে মুক্তি পেতে আমরা এসব পরিবহন ব্যবস্থার দিকে ঝুঁঁকছি। দুই চাকার এই যানে আমরা কতটুকু নিরাপদ তা চিন্তার বিষয় নয় কি? নিরাপত্তার কথা চিন্তা করলে মাথায় আসে হেলমেটের কথা। হেলমেট ব্যবহার করা হয় মাথার সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য রাইড শেয়ারিং সার্ভিস ‘উবার ও পাঠাও’-এর আরোহীরা যে হেলমেট ব্যবহার করেন তা কতটুকু আরামদায়ক ও উপযোগী?
সাধারণত মোটরসাইকেল চালকরা হেলমেট ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন না। যার কারণে বেশির ভাগ সময় সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হলে মোটরসাইকেল আরোহীরা অহরহ হতাহত হচ্ছেন। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণেই সবাই সচেতনতার সাথে হেলমেট ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সফলতা হচ্ছে হেলমেটের ব্যবহার। পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে যুগান্তকারী পদক্ষেপ ‘হেলমেট নেই, তেলও নেই’ এ স্লোগানটি জণসাধারণকে সচেতন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
একসময় মোটরসাইকেল শুধু নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হতো। এখন শুধু নিজের জন্য না, বরং রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম ও সিলেটের মতো বড় সিটিগুলোর যানজট ও দুর্ভোগ কমাতে এবং কর্মঘণ্টা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মোটরসাইকেল। বেকারত্ব ঘোচাতে এটি যেমন মোটরসাইকেল চালকের জন্য আশীর্বাদ; তার চেয়েও বেশি আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে যাত্রীদের সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছতে। পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক ছাত্র এখানে যেমন পার্টটাইম কাজ করছেন, ঠিক তেমনি অনেকে পূর্ণকালীন পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
বহুজাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘নামবিও’ কর্তৃক প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ট্রাফিক ইনডেক্স-২০১৯এর মধ্যে যানজটের দিক থেকে বিশ্বে প্রথম স্থানে আমাদের রাজধানী ঢাকা। দৈনন্দিন জীবনে নগরবাসীর অন্যতম সমস্যা যানজট। এর কারণে মানুষের কর্মঘণ্টা এবং অন্যতম মূল্যবান সম্পদ সময় অপচয় হচ্ছে।
জনমানবের কর্মঘণ্টা নিশ্চিত এবং সময় অপচয় রোধ করতে মোটরসাইকেল হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের অন্যতম হাতিয়ার। দুর্ঘটনা রোধ করতে এবং মৃত্যুর ঝুঁঁকি কমাতে সম্প্রতি হেলমেট ব্যবহারে চালক ও আরোহীদের বাধ্যতামূলক আইন করা হয়েছে। মাথায় হেলমেট না দেখলে ট্রাফিক সার্জেন্ট ১৪৯ ধারায় মামলা করতে পারেন।
মোটরসাইকেলে আরোহণ করার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম হলো হেলমেট। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর পুলিশ চালক এবং আরোহীদের হেলমেট ব্যবহার করানোর ব্যাপারে বেশ কঠোর হতে দেখা যায়। হেলমেট ব্যবহার করা হয় সম্পূর্ণ মাথা ও মুখ রক্ষা করতে। কিন্তু লক্ষ করলে দেখা যায়, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যাত্রীদের যে হেলমেট ব্যবহার করতে দেয়া হয়; তা কার্যত নির্মাণশ্রমিকের মাথার ক্যাপ। সুতরাং আরোহীদের মাথায় নির্মাণশ্রমিকের মাথার ক্যাপ ব্যবহার না করে আধুনিক ও আরামদায়ক হেলমেট ব্যবহার করতে মোটরসাইকেল চালকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তাহলে হেলমেট ব্যবহারের উদ্দেশ্য সফল হবে। যাত্রীসেবা মঙ্গলময় এবং নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ‘উবার ও পাঠাও’সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে দৃষ্টি দেয়া আবশ্যক। হ
লেখক : শিক্ষার্থী
[email protected]

 


আরো সংবাদ



premium cement