০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

পাখি নিধন অমানবিকতার উদাহরণ

-

বাংলাদেশের ঋতুচক্রের প্রধান একটি ঋতু শীত। শীত এলেই অতিথি পাখির আগমন ঘটে এদেশে। অভয়ারণ্য হয়ে ওঠে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী, পারকি সমুদ্র সৈকত ও মেরিন একাডেমি ম্যানগ্রোভসহ উপকূলীয় এলাকাগুলো। এরা বরফজমা হিমালয় এবং হিমালয়ের ওপাশ থেকে অতিরিক্ত শীত থেকে বাঁচার জন্য আমাদের দেশে চলে আসে।
শীত এলেই অতিথি পাখি বা পরিযায়ী পাখি জীবন বাঁচানোর জন্য বাংলাদেশেও আসে। কিন্তু প্রতি বছর দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে যে পাখিগুলো আমাদের দেশে বাঁচতে আসে, সে পাখিদের নিরাপত্তা সরকারিভাবে দেয়ার বিধান থাকলেও কার্যত তা হয় না। শিকারিদের শ্যেন দৃষ্টির ফলে প্রতি বছর অতিথি পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। শরৎ ও হেমন্তে ইলিশ ধরার জন্য আমাদের দেশে জেলেপাড়ায় যেমন সাজ সাজ রব পড়ে যায়, তেমনি শীতের সময় এলে চোরাগোপ্তা পাখি শিকারিদের মধ্যে সাজ সাজ রব পড়ে। শিকারিরা হাজার টাকার ফাঁদ, জাল তৈরি করে প্রস্তুত থাকে শীতের আগে থেকেই। বিভিন্ন চরাঞ্চলে ধানের সাথে বিষ মিশিয়ে এবং কারেন্টজাল দিয়ে পাখি নিধন করা হয়। কেউ কেউ মাছের ঘেরে ফাঁকা জায়গায় দেশী হাঁস পানির ওপর জড়ো করে রাখে। হাঁসের ডাক শুনে পাখিরা পানিতে নামতে শুরু করলে পেতে রাখা ফাঁদে আটকে যায়। অনেকে এখন বিভিন্ন হাইড্রোলিক হর্ন পাখি ধরার কাজে ব্যবহার করছে। মুক্ত ফাঁকা জলাশয়ে ফাঁদ পেতে তারা হর্ন বা বাঁশি বাজালে পাখি জলাশয়ে নামতে শুরু করে এবং ফাঁদে আটকে যায়। এ ছাড়াও বড় বড় বাঁশ বাগান, গোলবাগানে রাতে পাখি বসে থাকলে এয়ারগান অথবা সুচাল শিক দিয়ে পাখি শিকার করা হয়। এমনিভাবে প্রতি বছর হাজার হাজার অতিথি পাখি আর ফিরতে পারে না তাদের নিজস্ব বাসভূমে। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে এসে তারা রসনা তৃপ্তির জন্য উঠে যায় বাঙালির ভাতের থালায়। হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসতে অনেক পাখি অসুস্থ হয়ে এমনিতেই মারা যায়। তার ওপর রয়েছে শিকারির লোলুপ দৃষ্টি। জানা যায়, সম্প্রতি অতিথি পাখির গোশতের চাহিদাও নাকি বাড়ছে। এই বিপজ্জনক চাহিদা থেকে খাদকদের এবং পাখি নিধনকারীদের দূরে না রাখতে পারলে মারাত্মক হুমকিতে পড়বে অতিথি পাখি। বাড়বে প্রকৃতির ভারসাম্যহীনতা। এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে অতিথি পাখি। তাই আইন শুধু কাগজ-কলমে থেকে গেলে হবে না। এদের রক্ষা করার জন্য জনসচেতনতামূলক কোনো কার্যক্রম বাড়াতে হবে।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী পাখি শিকার, হত্যা, আটক ও ক্রয়-বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ। যার শাস্তি দুই বছর কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা। কিন্তু এর প্রয়োগ আমরা খুব একটা দেখতে পাই না বললেই চলে।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে অতিথি পাখি বিরাট ভূমিকা রাখে। প্রকৃতিবান্ধব এসব পাখি শুধু নিজেরা বাঁচতে আসে না। এরা জলজ পোকা, ধানের পোকা খেয়ে কৃষকের উপকার করে থাকে। পাখি প্রকৃতি ও মানুষের পরম বন্ধু। কোনো কোনো পাখি প্রহরে প্রহরে ডেকে আমাদের প্রকৃতির ঘড়ির কাজ করে থাকে।
ধুযধৎসধযসঁফ৭০৫@মসধরষ.পড়স


আরো সংবাদ



premium cement
বগুড়ায় ইজিবাইকচাপায় ভাই-বোন হতাহত একুশে পদকের জন্য মনোনীত ১৪ ব্যক্তি ও নারী ফুটবল দল চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আমদানি করছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে বিপদে অস্ট্রেলিয়া সিংগাইর থানার ফেসবুক আইডিতে শেখ হাসিনার বক্তব্য শেয়ার, দুঃখ প্রকাশ এলজিইডি ক্রিম-ক্রিলিকের কেএফডব্লিউ রিভিউ মিশন সম্পন্ন সিলেটে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারের পাশে জামায়াত মোংলায় ভেঙে দেয়া হলো শেখ মুজিবের ম্যুরাল ময়মনসিংহে শিশু তাসিন হত্যা মামলায় আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড নাটোরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিল ছাত্র-জনতা

সকল