সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ খাবার
- সুধীর বরণ মাঝি
- ০৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
নিরাপদ খাবার পাওয়া মানুষমাত্রই তার মৌলিক অধিকার। সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন বিশুদ্ধ, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য। এ বিশুদ্ধ, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার সুস্থ ও সমৃদ্ধশালী জাতি গঠনে একান্ত অপরিহার্য। কিন্তু আমাদের দেশে বিশুদ্ধ, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে পড়েছে। অতি মোনাফাখোর কিছু ব্যবসায়ী এর জন্য দায়ী। ১৬ কোটি মানুষ আজ ভেজাল আতঙ্কে।
সুস্থভাবে বেঁচে থাকা আমাদের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার। তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। খাদ্য মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে, সুস্থ সবল রাখে। কর্মক্ষম করে তোলে। কিন্তু খাদ্যের নামে আমরা কী খাচ্ছি? খাদ্য না বিষ?
ভেজাল খাদ্যে কোটি কোটি মানুষের জীবন হুমকির মুখে। এখন খাদ্য মানেই নানা ক্ষতিকর উপাদানে ভরপুর। এ অবস্থা কত দিন চলতে থাকবে একটি দেশে? ভেজাল খাদ্যের পাশাপাশি সক্রিয় আছে ভেজাল এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের সরবরাহকারী চক্র। একদল অতি লোভী মুনাফাখোরের লালসার শিকার আমরা। খাদ্যে ভেজালের কারণে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনীতি আজ হুমকির মুখে। ভেজাল খাদ্যের কারণে রোগাক্রান্ত শিশু জন্ম নিচ্ছে। অপুষ্টিতে ভুগছে শিশুরা। ফলে আমাদের সামনে দৃশ্যমান একটি অপুষ্ট ও অসুস্থ জাতি। যা কারো কাছেই কাম্য নয়। খাদ্যে ভেজালের কারণেই দেশে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, কিডনি ফেইলউর, হৃদযন্ত্রের অসুখ, হাঁপানি ইত্যাদি জটিল রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। হাসপাতাল ও ডাক্তারের কাছে রোগীর লাইন আরো দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।
নিরাপদ খাবার উপহার দিতে না পারলে একসময় জাতি পঙ্গু হয়ে যাবে। শুধু খাদ্যে ভেজালের কারণে দেশে প্রতি বছর তিন লাখ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। কিডনি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ। ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। এ ছাড়া গর্ভবতী মায়ের শারীরিক জটিলতাসহ গর্ভজাত বিকলাঙ্গ শিশুর সংখ্যা দেশে প্রায় ১৫ লাখ। খাদ্যে ভেজাল ও নকল ওষুধ প্রস্তুত দেশে মহামারী আকার ধারণ করেছে। ঢাকা শহরের ৭০ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে ৫০ শতাংশ খাদ্যে ভেজাল। রাষ্ট্রকে এখনই ভেজাল খাদ্য ও নকল ওষুধের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে। খাদ্যে ভেজাল শুধু যে শারীরিক ক্ষতি তা নয়, খাদ্যে ভেজালের কারণে জাতীয় উন্নতিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
লেখক : কলেজ শিক্ষক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা