০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪২৩১, ৬ শাবান ১৪৪৬
`

অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণ

-

অর্থ পাচার ও খেলাপি ঋণ দেশের আর্থিক খাতসহ উন্নয়ন অবকাঠামোকে ভঙ্গুর অবস্থায় দাঁড় করিয়েছে। হুন্ডি ব্যবসায় থেকে শুরু করে ব্যাক টু ব্যাক এলসির মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার হচ্ছে বিপুল অর্থ। সরকার এর নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এর ওপর আর্থিক খাতের বিপর্যয় হয়ে দেখা দিয়েছে খেলাপি ঋণ। ঋণখেলাপিরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পদ্ধতি ও কূটকৌশল করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নিচ্ছেন। এমন অবস্থায় উদ্বিগ্ন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি দেখে দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের অনেকের মতে, আর্থিক খাতে এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি চরমভাবে হোঁচট খাবে।
গত এক দশকে দেশের আর্থিক খাতে যে কেলেঙ্কারি হয়েছে (ব্যাংক লুট, অর্থপাচার, পাচার করা অর্থ সুইস ব্যাংকে জমা, বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম তৈরি) তা বর্তমান সরকারের বহুমুখী উন্নয়ন মøান করে দিয়েছে। এসব কেলেঙ্কারিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশের বিপুল মানুষ। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে সর্বস্বান্ত হয়েছেন দেশের ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী। ধ্বংসের মুখে দেশের শিল্প ও বিনিয়োগ ব্যবস্থা, যার ধারাবাহিকতা বর্তমানেও চলমান। অন্য দিকে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং পরিচালনা পর্যদের পরিচালক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং উল্টো ধনাঢ্য ও রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাদের পোষ্যদের ছাড় দেয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়।
বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির বিচার হয়নি। লোক দেখানো প্রাথমিক কিছু তদন্ত হয়েছে মাত্র। দুই-একটির বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হলেও অভিযুক্তরা সাজা পাননি। মামলার দীর্ঘসূত্রতায় অভিযুক্তদের কেউ আছেন হাসপাতালে, কেউ জামিনে বেরিয়ে ফের একই পদে বহাল তবিয়তে আছেন।
সুইস ব্যাংকে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশীদের টাকা জমানোর হিড়িক বেশি। ২০১৮ সালে এক বছরেরই বাংলাদেশীদের জমানো অর্থের পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে দুই হাজার ৯৮১ কোটি টাকা, ১৯১৪ সালে চার হাজার ৫৮ কোটি, ১৯১৫ সালে চার হাজার ৪১৭ কোটি, ১৯১৬ সালে পাঁচ হাজার ৫৬৬ কোটি, ১৯১৭ সালে চার হাজার ৬৯ কোটি, ১৯১৮ সালে পাঁচ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। (সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৮ জুন ২০১৯)।
সুইস ব্যাংকে জমা ছাড়াও আর্থিক খাতের লুটেরাচক্র দেশের ব্যাংক (বিশেষ করে চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক) ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নিজস্ব শিল্প ও কারখানার নামে বিপুল ঋণ নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে সময় ও সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেই টাকা বিদেশে পাচার করে অতিরিক্ত ব্যয় ও লোকসানি খাত হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করার স্বার্থে।
অনেকে আবার নিজস্ব শিল্পকারখানার উন্নয়নের স্বার্থে বিনিযোগ করা অর্থ ও সম্পদের মূল্য ২০-২৫ গুণ বাড়িয়ে দেখিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিএসইসির অনেক কর্মকর্তার জোগসাজশে বাজার থেকে বড় অঙ্কের টাকা তুলে নেন। প্রথম দুই-এক বছর বিনিয়োগকারীদের অল্প লাভ দেখিয়ে পরে অপকৌশলে সেসব টাকার বেশির ভাগ বিদেশে পাচার করেন। কোম্পানিগুলো লোকসানের খাত হিসেবে উপস্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের নিজস্ব পুঁজি থেকে বঞ্চিত করে পথে বসায়।
সম্প্রতি কিছু ঘটনায় শীর্ষ অপরাধীদের বাদ দিয়ে নিরীহ ও অধীনস্থ ব্যাংক কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের ঘটনা পুরো ব্যাংকপাড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যাংকের অসৎ ও শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কিছুই না হওয়ায় অনিয়ম ও জালিয়াতি বন্ধ করা যাচ্ছে না। ফলে আর্থিক খাতের অনিয়ম শীর্ষ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যে হয়, এটি কারো অজানা নয়। তাই ছোট বড় কাউকেই বাদ দেয়া উচিত নয়। হ
লেখক : রাজনীতিক

 


আরো সংবাদ



premium cement
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রের বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ৩ পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি থেকে বাদ গেল শেখ পরিবারের নাম বইমেলায় ৮ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি সময় পরিবর্তন হচ্ছে, থাকছে না শিশুপ্রহর রাখাইন স্টেট : ঘুমধুমে স্থলবন্দর করার চিন্তা করছে সরকার ফ্যাসিবাদ উৎখাত করেছে ছাত্ররা আর তাদের সাহস জুগিয়েছেন শিক্ষকরা মশিউর রহমানের নতুন বই ‘টেকসই সমৃদ্ধিতে আল-কুরআনের দর্শন’ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এপ্রিলে ঢাকা সফর করতে পারেন : তৌহিদ আ’লীগের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য মাসিক ভাতা আগামী বছর থেকে : মুহাম্মদ আবদুল্লাহ শেখ হাসিনার ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে অনুসন্ধান করবে দুদক ছাত্রদের যৌক্তিক অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া

সকল