০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ৭ শাবান ১৪৪৬
`

সড়কে চাই শৃঙ্খলা

-

সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। লাইসেন্সবিহীন চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন আর চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব দূর করা যায়নি। কোনোভাবেই সড়কে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব হচ্ছে না।
একটি জরিপের ফল থেকে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে প্রতিদিন গড়ে ২০ জনের মৃত্যু হয়। ১৯৯৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করে চুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট বা এআরআই বলছে, দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে। চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৭ শতাংশ। আর চালকের বেপরোয়া মনোভাব ও গতির কারণে ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে। আর পরিবেশ-পরিস্থিতিসহ অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ১০ শতাংশ। পথচারীদের অসচেতনতা ও সড়কের ত্রুটির কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তির বেশির ভাগই শিশু, তরুণ ও কর্মক্ষম ব্যক্তি। সড়ক দুর্ঘটনা এবং এর প্রভাবে ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এসব দুর্ঘটনার কারণে বছরে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ২ থেকে ৩ শতাংশ হারাচ্ছে বাংলাদেশ।
চালকদের প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে, যা সড়ক দুর্ঘটনার আরো একটি কারণ। ইদানীং মোবাইল ফোন কানে রেখে গাড়ি চালানো যেন অনেক চালকের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এ কাজ থেকে বিরত রাখতে আইন আছে, কিন্তু সে আইনের ব্যবহার হয় না। এ কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার জন্য যা-ই দায়ী হোক না কেন, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ জরুরি।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতিসঙ্ঘ ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়কে ‘সড়ক নিরাপত্তা দশক’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ সময়ের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ও প্রাণহানি অর্ধেকে নামিয়ে আনার বিষয়ে সদস্য দেশগুলো একমতও হয়েছে। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাতে (এসডিজি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে বহু দেশে সড়ক নিরাপত্তায় দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তৎপরতা দৃশ্যমান নয়। এ ছাড়া সড়কের পাশে বিশ্রামাগার তৈরি, সিগন্যাল নিয়ে কড়াকড়ি, অনিয়মতান্ত্রিক রাস্তা পারাপার বন্ধ, গাড়িতে সিটবেল্ট বাঁধার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের হিসেবে, দেশে যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ৩৩ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে চালকের লাইসেন্স আছে ১৮ লাখ। অর্থাৎ বাকি ১৫ লাখ যানবাহন চলছে লাইসেন্সবিহীন চালক দিয়ে। এ ছাড়া পেশাদার চালকদের মধ্যে অন্তত দুই লাখ চালক লাইসেন্স পেয়েছেন শ্রমিক সংগঠনের চাহিদা মেনে, যথাযথ পরীক্ষা ছাড়াই। হ
লেখক : সহসভাপতি, এফবিসিসিআই


আরো সংবাদ



premium cement