০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ৭ শাবান ১৪৪৬
`

ভেলকি ও ডেঙ্গু পরিস্থিতি

-

সিটি করপোরেশনকে দিয়ে মশক নিধন কিংবা ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব নয়। অন্তত অনেকের সেটাই ধারণা। সিটি করপোরেশনের এক মশক নিধন কর্মী দক্ষিণ গোড়ানের বাগানবাড়ি এলাকায় এসেছিলেন। কামানের মতো লম্বা মেশিনটি দিয়ে বিস্তর আওয়াজ তুলে, ধোঁয়ায় চতুর্দিক অন্ধকার করে দিয়ে মুহূর্তেই সেই ‘ভটভটিওয়ালা’ চম্পট। এলাকার কিছু বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া অনুরোধ করেছিলেন, আমাদের এখানটায় আসুন। এই গলির ভেতরে ¯েপ্র করুন, ওই ঘরের কোণায় একটু ওষুধ ছিটানÑ সেসব কথায় কোনো কর্ণপাত করার গরজ বোধই করেননি তিনি।
এদিকে মশার জালায় কাজই করতে পারছি না। অহরহ পায়ে মশার কামড়। কত সহ্য করা যায়? তা হলে মশক নিধনের নামে ওই কামান দাগানোর অর্থটা কী? মনে হয় ‘মশক নিধন’ এর ওই ¯েপ্র মেশিনের ভটভটিতে মশককুলের কেউই চিৎপটাং হয়নি; বরং মনুষ্যকুলের রঙ্গতামাশা দেখে হেসে কুটি কুটি হয়েছিল।
এ তথ্য আজ অনেকেরই জানা, মশক নিধনের জন্য যে ওষুধ ছিটানোর কথা, সেই ওষুধের টাকার বিরাট অংশই চুরি করা হয়। এর পরিবর্তে কেরোসিন ব্যবহার করা হয়। এ কারণে মেশিন দিয়ে প্রচুর ধোঁয়া বের হলেও তাতে শুধুই কেরোসিনের গন্ধ। নাগরিক সাধারণের সাথে এই তামাশার কোনো অর্থ হয় কি?
পরিতাপের বিষয়, এটাই চলে আসছে দীর্ঘকাল। সাফ কথা, সিটি করপোরেশনকে দিয়ে নাগরিকদের প্রাণঘাতী ডেঙ্গু থেকে রক্ষা এক রকম অসম্ভব কাজ। দায়িত্বটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেই নিতে হবে। এ বিষয়ে আমার প্রস্তাব হচ্ছেÑ ১. জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এডিস মশা যাতে বাড়ির আনাচে-কানাচে বা ঘরে ডিম পাড়তে না পারে, সে জন্য রেডিও-টেলিভিশনে ও সংবাদপত্রে বারবার সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার ও প্রকাশ করতে হবে। নিয়মিত মশারি খাটানো এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে মশার কামড় থেকে রক্ষার অন্যান্য কার্যকর উপায়গুলো তাতে বর্ণনা করতে হবে।
২. বাড়ির আনাচে-কানাচে চিপসের প্যাকেট, বাদামের খোসা, নারকেলের ছোবড়া, ভাঙা বোতল যেগুলোর ওপর বৃষ্টির পানি আটকাতে পারে, সেগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে সেসব জায়গায় ছিটিয়ে দিতে হবে ব্লিচিং পাউডার। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কিছু স্বাস্থ্যকর্মী এই দায়িত্ব নিলে খুব ভালো হয়।
৩. ডেঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে খ্যাতিমান হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকেরা ‘রাগটক্স-২০০’ ও ‘ইউপেটোরিয়াম পারফোরিয়াস-২০০’ নামে দু’টি ওষুধ ব্যবহার করছেন। এ গুলো নাকি ‘শতভাগ ফলপ্রসূ’। ডেঙ্গুর মহামারীর এই সময়ে তথ্যটি যথেষ্ট গুরুত্ববহ। অভিজ্ঞ বিকল্প চিকিৎসকদের (হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদি, ইউনানি) নিয়ে একটি টিম গঠন করে, এ তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের পর নগরবাসীর প্রত্যেককে এটি খাওয়ানো যেতে পারে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগটি যত দ্রুত নেবে, ততই মঙ্গল। হ


আরো সংবাদ



premium cement