গ্যাসের দাম বাড়ানো অদূরদর্শিতা
- মাহমুদুল হক আনসারী
- ২৩ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোয় জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। জ্বালানি গ্যাসের সাথে দেশের সব শ্রেণী ও পেশার মানুষ সম্পৃক্ত। সরাসরি সংযুক্ত পরিবহন খাত, খাদ্য শিল্প, কৃষির সাথে সম্পৃক্ত সেচ প্রকল্প, সার উৎপাদন কারখানা ইত্যাদি। জ্বালানি গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় এসব পণ্যের দাম ইতোমধ্যে বেড়ে গেছে। মূলত গ্যাসের দাম বাড়ানোর সংবাদ শোনার সাথে সাথে সারা দেশে গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনে ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট খাতের মালিকেরা।
গ্যাসের দাম বাড়ানোয় বাসা ভাড়া বাড়বে। বিদ্যুৎ বিল বাড়বে। এক কথায়, সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের ওপর আরেক দফা দাম বেড়ে যাবে। ফলে সব নাগরিকের দৈনন্দিন ব্যয় বাড়বে। দেশের অনেক বিশিষ্টজনের দাবি, এটি সরকারের একটা অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত। এ সিদ্ধান্ত সরকার না নিলেও পারত। কারণ, গ্যাসের দাম বাড়ানোতে মূলত সাধারণ মানুষ আরো বিপাকে পড়বেন। যারা নিম্ন আয়ের চাকরিজীবী অথবা কায়িক পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদের ওপর বেশি প্রভাব পড়বে। যারা ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, সরকারি কর্মকর্তা, তাদের কোনো সমস্যা হবে না। তাদের অর্থনৈতিক ভোগান্তি ও সমস্যার কিছু নেই। যত সমস্যা আর ভোগান্তি সাধারণ জনগণের।
গ্যাসের দাম বাড়ানো মানে সাধারণ মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া। সরকার যদি মনে করে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ চুলোয় যাক; কিছু যায়-আসে না। নাগরিকের দুঃখ-দুর্দশা আর অধিকার নিয়ে ভাবনার কিছু নেই। সরকার যদি ভেবে থাকে, আমজনতার পক্ষে এ মুহূর্তে দেশে কথা বলার গণতান্ত্রিক তেমন শক্তি নেই। ফলে জনগণের দাবি-দাওয়ার কথা বলার প্লাটফরম অনেকটাই অচল। এ সুযোগে জনগণকে পিষে মারলেও সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর কেনো আন্দোলন গড়ে উঠবে না, তা হলে বলার কিছুই নেই। তবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সরকারের জন্য আত্মঘাতী হতে পারে। এ জন্য খেসারত দিতে হতে পারে। কারণ আমজনতা একবার রাস্তায় নামলে তা সামাল দেয়া কারো পক্ষেই সহজ নয়। দেশে দেশে এমন নজিরের অভাব নেই। দেশের বেশির ভাগ মানুষের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকার দেশ শাসনে সফল হতে পারে না। ইচ্ছেমতো যেকোনো সিদ্ধান্ত আম জনতার ওপর চাপানোর ক্ষোভ কোনো কোনো সময় ক্ষমতাসীনদের জন্য বুমেরাং হয়ে দেখা দেয়। এটা কোনো অবস্থায় কোনো সরকারের জন্য সুখকর নয়।
ভর্তুকি সরকার অনেক জায়গায় দিচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নাগরিকের কল্যাণে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। আমাদের দেশে সাধারণ নাগরিকের স্বার্থে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দেয়ার বিষয়টি ক্রমে সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। সরকারের অদূরদর্শিতায় বারবার দেশের সাধারণ পরিবারগুলো পারিবারিক অর্থনীতি পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছে। এসব কিছু শৃঙ্খলায় আনতে হলে অবশ্যই সরকারকে জনগণের সুখ-দুঃখের দিকটি খেয়াল রাখতে হবে। হতে হবে জনবান্ধব। তা হলে সম্ভব নাগরিক স্বস্তি আর প্রশান্তি। কিন্তু সরকার কী জনবান্ধব কর্মসূচি হাতে নেবে? হ
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা