‘আর কী প্রমাণ দিতে হবে? ও আমার মেয়ে, ও মুসলিম’

ঢাকার বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত এক নারী সাংবাদিকের পরিচয় জটিলতায় চার দিন ধরে মর্গে পড়ে আছে তার লাশ।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে মারা যান ওই নারী সাংবাদিক। বৃষ্টি খাতুন (অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত) ওই সাংবাদিক কাজ করতেন ‘দ্যা রিপোর্ট ডট লাইভ’ নামের একটি নিউজ পোর্টালে।

গত শুক্রবার তার বাবা লাশ গ্রহণ করতে আসার পরই ধোঁয়াশা তৈরি হয়। তখন ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পুলিশ অভিশ্রুতির নাম বৃষ্টি খাতুন নিশ্চিত হয়ে লাশ হস্তান্তরের উদ্যোগ নেয়।

তবে ওই রাতেই রমনা কালী মন্দিরের কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণে তার লাশ আর হস্তান্তর করা হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার রাতে আগুনে মারা যাওয়া ওই নারী সাংবাদিকের লাশ এখন রয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টের পর ওই লাশ হস্তান্তর করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

গত শনিবার ওই নারী সাংবাদিকের লাশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। আর রোববার তার বাবা শাবরুল আলম সবুজের নমুনা সংগ্রহ করে পুলিশ।

রমনা থানার ওসি উৎপল দাস বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ওই নারী সাংবাদিকদের পরিচয় নিয়ে নানামুখী বক্তব্য ও কারো কারো আপত্তির কারণেই লাশ হস্তান্তর করা হয়নি। ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট পাওয়ার পরই হস্তান্তর করা হবে লাশ।’

ডিএনএ টেস্টের ফলাফল তৈরি হতে অনেকটা সময় লাগে। এক্ষেত্রে কমপক্ষে পনেরো দিন থেকে এক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশের এই কর্মকর্তা।

ওই নারী সাংবাদিকের বাবা শাবরুল আলম সবুজ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আমি ডিএনএ দিয়েছি, সব তথ্য দিয়েছি। এখন অপেক্ষা করছি লাশটার জন্য।’

সঙ্কটের শুরু যেভাবে
ওই নারী সাংবাদিক গত আট মাস ধরে নির্বাচন কমিশন বিটের সংবাদ সংগ্রহ করতেন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর ফেব্রুয়ারিতে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে দেন। তার যোগ দেয়ার কথা ছিল আরেকটি সংবাদ মাধ্যমে।

তার সহকর্মীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজিতে অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি বন্ধু তুষার হালদারসহ ছিলেন ওই ভবনে। ওই রাতের পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটের মর্গে পাওয়া যায় তার বন্ধু তুষার হালদারের লাশ। এর কিছুক্ষণ পর সহকর্মীরা ওই নারী সাংবাদিকের লাশ শনাক্ত করেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইন্সটিটিউটে।

লাশ শনাক্তের পর তার পরিবারের সদস্যদের সাথে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের চেষ্টা করে সহকর্মীরা। তার বায়োডাটায় দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী যোগাযোগের চেষ্টা করেন নির্বাচন কমিশনের দুই সাংবাদিক মেহেদী হাসান হাসিব ও নূপুর মাহমুদ।

বিবিসি বাংলাকে মেহেদী হাসান হাসিব বলেন, ‘বৃষ্টি খাতুনের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী সিদ্ধেশ্বরী কালি মন্দির এলাকায় তার ছবি দেখিয়ে পরিচয় জিজ্ঞেস করি। কেউ তার কোনো ঠিকানা দিতে পারেনি’।

পরবর্তীতে তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা থানার বনগ্রামে যোগাযোগ করা হয়। কয়েক দফার চেষ্টার পর দুপুরের দিকে তার বাবার নম্বর পেয়ে সহকর্মীরা যোগাযোগ করে। দুপুরের পর শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে ছুটে আসেন এক ব্যক্তি।

তখন ওই ব্যক্তি জানান, তার নাম শাবরুল আলম সবুজ। তিনি নিহত ওই তরুণীর লাশটি দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। শনাক্ত করেন লাশটি তার মেয়ের।

তিনি তখন জানান, ‘ওর নাম অভিশ্রুতি না বৃষ্টি খাতুন। গ্রামে নাম বৃষ্টি, স্কুলে নাম বৃষ্টি, কুষ্টিয়া গভর্নমেন্ট মহিলা কলেজে যখন পড়েছে তখনো তার নাম বৃষ্টি, ইডেনে ভর্তিও হয়েছিল একই নামে’।

নাম নিয়ে বিভ্রান্তির কারণ কী?
সাংবাদিকতা পেশায় ওই নারী সাংবাদিককে সবাই অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামেই চিনতেন। সেই নামেই খবর লিখতেন। তার ফেসবুক নামও বাংলায় আছে ‘অভিশ্রুতি শাস্ত্রী’ নামে।

নির্বাচন কমিশন বিটের সাংবাদিক সংগঠন আরএফএইডির সভাপতি একরামুল হক সায়েম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে সে নির্বাচন কমিশন বিটে নিউজ কাভারেজে আসতো। আমরা তাকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামেই জানি। তার মারা যাওয়ার খবর পাওয়ার পর তাকে বার্ন ইন্সটিটিউটে ওই নামেই শনাক্ত করা হয়েছে’।

ওই নারী সাংবাদিকের জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, ইডেন কলেজের তথ্য এবং চাকরির জন্মবৃত্তান্তে বাবা-মায়ের নামে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া গেছে। তবে, স্থায়ী ঠিকানা সব জায়গায় একই।

তার মৃত্যুর খবর পেয়ে শাবরুল আলম সবুজ যখন ঢাকা মেডিক্যালে ছুটে যান সেখানে তিনি একটি জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি দেখান। ২০২১ সালের জুলাই মাসে নির্বাচন কমিশন থেকে তার যে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হয়েছে সেখানে তার নাম রয়েছে বৃষ্টি খাতুন। আর পিতার নাম সবুজ শেখ আর মাতার নাম বিউটি বেগম।

শাবরুল আলম সবুজ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘অভিশ্রুতি ওর নিজের দেয়া নাম। ওটা সাজানো নাম। গ্রাম, স্কুল কলেজ সব জায়গায় ওকে বৃষ্টি নামেই চেনে’।

বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা নির্বাচন কমিশন ও জন্ম নিবন্ধনের বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধান করেন। যেখানে দেখা যায়, ২০২৩ সালে নির্বাচন কমিশনে তার পুরনো জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি সংশোধনের আবেদন করেন ওই নারী সাংবাদিক।

সেখানে তিনি তার ‘বৃষ্টি খাতুন’ নাম সংশোধন করে ‘অভিশ্রুতি শাস্ত্রী’ করার আবেদন করেন। একই সাথে জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী বয়সও দুই বছর কমানোর আবেদন করেন’।

নাম সংশোধন করতে গিয়ে ওই নারী সাংবাদিক একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দেয় নির্বাচন কমিশনে। যেখানে দেখা যায়, তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী, বাবার নাম শাবরুল আলম আর মায়ের নাম বিউটি বেগম। এই সনদে তার জন্ম তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০০০ সাল।

তবে ওই জন্ম নিবন্ধন সনদটির সত্যতা যাচাই করে দেখা গেছে, যেটি কুষ্টিয়ার আফরোজা খাতুন নামের আরেক নারীর জন্ম সনদ। যার জন্ম তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০০০ সাল।

ওই জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে ‘বৃষ্টি খাতুন’ নাম সংশোধনের আবেদন করলেও নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য খুঁজে দেখা যাচ্ছে, তার এনআইডি সংশোধনের আবেদনটি এখনো এপ্রুভড হয়নি।

রমনা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘অভিশ্রুতি বলেন আর বৃষ্টি বলেন, ওই নারী সাংবাদিকের পিতার নাম ঠিক আছে সব জায়গায়। কিন্তু সে যে জন্ম নিবন্ধন করেছে সেখানে তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। যেটার কারণেই আমরা আটকে আছি’।

ওই সাংবাদিকদের চাচাতো ভাই আনোয়ার হোসেন বাপ্পী বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমরা এক সাথে বড় হয়েছি। স্কুল-কলেজ বাড়ি সবখানেই আমরা বৃষ্টি নামেই জানি। অভিশ্রুতি নাম শুনলাম ও মারা যাওয়ার পর’।

ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব
চাকরির জন্য ওই নারী সাংবাদিক একটি জীবন বৃত্তান্ত বা বায়োডাটা প্রস্তুত করেছিলেন। সেখানে দেখা যায়, তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী এবং বাবা অভিরূপ শাস্ত্রী ও মাতা অর্পণা শাস্ত্রী। যাতে তার ধর্ম পরিচয়ের জায়গায় লেখা রয়েছে ‘সনাতন’।

তার পরিচয় নিয়ে এমন জটিলতার মধ্যে গত শুক্রবার রাতে ফেসবুকে একটি স্টাটাস দেন মো: মাহফুজুর রহমান নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র। সেখানে তিনি জানান, ‘অভিশ্রুতি বৃষ্টি’ নামেই তিনি ওই নারী সাংবাদিককে চিনতেন। ওই নারী সাংবাদিকের সাথে পারিবারিক সম্পর্কও ছিলও ওই যুবকের।

রোববার মো: মাহফুজুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ও যাদেরকে মা-বাবা হিসেবে পরিচয় দিতো তারা ছিলও মুসলিম। তবে ‘অভিশ্রুতি’ সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী ছিলও। কারণ ওর ধারণা ছিলও ওর বাবা মা ওকে দত্তক হিসেবে নিয়েছিলো। যদিও তার মায়ের সাথে আমি কথা বলে যতটুকু জেনেছি সে ওই পরিবারেই জন্ম নিয়েছে’।

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পরদিন সকালে ওই নারী সাংবাদিকদের লাশ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে শনাক্তের পর দুপুরের দিকে তার সেখানে যান রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা। সেখানে ওই নারী সাংবাদিকের পিতা ও পরিবারের সদস্যরা তাকে মুসলিম দাবি করলে তখন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হন। তখন শাবরুল আলম সবুজকে পুলিশ আটকও করে পরে আবার ছেড়ে দেয়।

গত শুক্রবার থেকে মেয়ের লাশ নিতে মর্গ আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ঘুরছেন কুষ্টিয়ার শাবরুল আলম সবুজ। রোববার তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘যে যে প্রমাণ লাগে তার সবই দিয়েছি। আর কী করে প্রমাণ দিতে হবে? ও আমার মেয়ে, ও মুসলিম। অভিশ্রুতি ওর সাজানো নাম’।

ডিএনএ নমুনা দিয়ে অপেক্ষায় পরিবার
শুক্রবার শনাক্তের পরই জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ওই নারী সাংবাদিকদের লাশ তার বাবা শাবরুল আলম সবুজের কাছে হস্তান্তরের সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হয়েছিল। কিন্তু রাত পৌনে ১২টার দিকে তা হঠাৎই আটকে দেয় পুলিশ।

ওই রাতেই পুলিশ জানায় লাশের পরিচয় নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আপত্তি ও তার জন্ম নিবন্ধন সনদে নামের কারণেই তারা লাশটি হস্তান্তর না করার সিদ্ধান্ত নেন। তখন ডিএনএ পরীক্ষার পর হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেন।

গত শুক্রবার রাতে মূলত রমনা কালি মন্দির কর্তৃপক্ষ থানায় একটি লিখিত আবেদনে করে জানায়, ওই নারী সাংবাদিক হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী। কিন্তু তার পরিবার তাকে মুসলিম দাবি করার কারণেই তারা পরিচয় শনাক্ত না করে হস্তান্তরে আপত্তি জানিয়েছে।

সে অনুযায়ী শনিবার ওই তরুণীর লাশ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ।

রোববার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কাজী গোলাম মোখলেসুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ডিএনএ পরীক্ষার জন্য শনিবার ওই তরুণীর লাশ থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করে অ্যানালাইসিসের জন্য পুলিশের কাছে হ্যান্ডওভার করে দিয়েছি। পুলিশ এটা ল্যাবে নিয়ে যাবে’।

রহমান বলেন, ‘আমরা ডেড বডিরটা নিয়েছি। পুলিশ তার বাবারটা নিয়ে তারপর অ্যানালাইসিস করে দেখবে ম্যাচ করে কিনা। এই নমুনা পরীক্ষার জন্য ম্যাক্সিমাম এক থেকে দুই সপ্তাহ লাগে’।

ঢাকা মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিচয় শনাক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ওই তরুণীর লাশ মর্গেই থাকবে। পরিচয় শনাক্ত হলেই কেবল তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে পুলিশ।

রমনা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ওই তরুণী ও তার বাবার ডিএনএ গ্রহণ করা হয়েছে। এটা একটা প্রক্রিয়াগত ইস্যু আছে। আমি যতটুকু জানি এটা পরীক্ষা করতে পনেরো দিন থেকে এক মাস সময় লাগে’।

বড়ুয়া বলছেন, ‘দুই তথ্যে নামের ভিন্নতার কারণে তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরীক্ষায় শনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত লাশ কাউকে দেয়া যাবে না।’

শাবলুল আলম সবুজ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘সিআইডি অফিসে আমাকে ডেকেছিল। এখানে আমার কাছ থেকে ডিএনএ নিয়েছে। এটা এখন আগামীকাল জানাবে বলে বলেছেন। যত ধরনের প্রমাণ লাগে সব আমি দিয়েছি’।

তবে রোববার রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বিবিসি বাংলাকে বলেন ‘এটা এখন আমাদের কাছে অনেকটাই স্পষ্ট যে- আসলে কে। আমরা চাই তার বাবার কাছে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হোক। মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক। সে জায়গায় তাকে ফিরিয়ে দেয়া হোক। আমরা জানতাম না বলেই সেখানে গিয়েছিলাম’।

সূত্র : বিবিসি