আবারো বাংলাদেশে ফিরতে চান দেশে ফেরত যাওয়া মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থীরা
- আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া
- ২৭ জুলাই ২০২৪, ১৫:৩৮
বাংলাদেশে গত সপ্তাহে কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশজুড়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে প্রচুর প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
এতে বাংলাদেশে অধ্যয়নরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকরাসহ মালয়েশিয়ান প্রায় ১২৩ জন শিক্ষার্থী আটকা পড়েন। নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ ছেড়ে নিজ নিজ দেশে ফেরত যান।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের নির্দেশে বিশেষ ফ্লাইটে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থীসহ ১২৩ জন মালয়েশিয়ান নাগরিক ঢাকা ত্যাগ করে।
কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে এ সময় তাদের স্বাগত জানান দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ শিক্ষার্থীদের পরিবার পরিজন। তারা মালয়েশিয়াতে ফিরে স্বস্তি বোধ করলেও জানিয়েছেন আবারো ফিরে যেতে চান বাংলাদেশে।
বাংলাদেশে উত্তেজনা কমলে মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে তাদের বাকি পড়াশুনা শেষ করতে আবারো ফিরে যেতে চান।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের ব্যাচেলর অফ মেডিসিনের ছাত্রী, নুর ভিত্রিয়াহ কামারুলাইল (২৩) স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশে তার পড়াশোনার প্রায় দুই বছর বাকি আছে যা ২০২৬ সালে শেষ হবে বলেও জানিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘যদি সবকিছু শান্ত হয়, আমি অবশ্যই সেখানে ফিরে যাবো কারণ আমার এখনো প্রায় দুই বছরের পড়াশোনা আছে। যাই ঘটুক না কেন, এটি আমার মনোবলকে ভেঙ্গে দেয় না। কারণ আমি একজন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নকে পূরণ করতে চাই।’
জানা গেছে, নূর ভিত্রিয়ার মতো অসখ্যা শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের বাংলাদেশে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। তারা এখন অপেক্ষায় আছেন বাংলাদেশের পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আবার বাংলাদেশে ফিরবেন।
এটা সত্য যে বাংলাদেশে এর আগেও বিক্ষোভ হয়েছে কিন্তু এই সময়টি সবচেয়ে খারাপ সময় গেছে। শিক্ষার্থীদের নিহতের কারণ ছাড়াও যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। গত মঙ্গলবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার এশিয়ার বিশেষ ফ্লাইট একে৭৬-এ চড়ে ১২৩ জন মালয়েশিয়ান বিকেল ৫টার দিকে নিরাপদে কুয়ালালামপুর নিজ দেশে পৌঁছেছেন।
এ দিকে, ঢাকা ডেন্টাল কলেজে দন্তচিকিৎসায় স্টাডি করা লিয়ানা সাহিরাহ নুর আজিজি (২৯) বলেন, ‘স্টাডি শেষ করে কলেজের সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে দেশে ফেরার কথা ছিল।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দেশে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। প্রায় ২০০-এর মতো মানুষ নিহত হয়। জ্বালিয়ে দেয়া হয় সরকারি বিভিন্ন দফতর। পরিস্থিতি সামাল দিতে জারি করা হয় কারফিউ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর দেখে বাংলাদেশ অবস্থানরত মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। পরে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের ঘোষণায় একটি চাটার্ড ফ্লাইটে ১২৩ জন শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে নেয়া হয়।