২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

শ্রমিক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মালয়েশিয়ার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানান। - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের এক দিন পরই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দফতরে মামলা করেছে এনজিও সংগঠন ‘ইখলাস’।

মঙ্গলবার (২১ জুন) ডাংওয়াঙ্গি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে দায়ের করা প্রতিবেদনে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে ২৫টি এজেন্সি নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। খবর মালয় মেইলের।

মামলা দায়ের করেছেন বেসরকারি এনজিওদের যৌথ সংগঠন ইখলাসের সভাপতি মোহাম্মদ রিদজুয়ান আবদুল্লাহ।

মামলা দায়েরের পর মঙ্গলবার বিকেলে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বলেন, বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানিতে ১৫২০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ২৫টি এজেন্সি ক্ষমতার অপব্যবহার আর দুর্নীতির মাধ্যমে নির্বাচিত করেছেন এম সারাভানান। এই ২৫ এজেন্সির মাধ্যমে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। মালয়েশিয়ার একজন বড় ব্যবসায়ী এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা যাচ্ছে এ ২৫ এজেন্সির ব্যাপারে সরকার ও মন্ত্রী কিছুই জানেন না।

রেদজুয়ান আবদুল্লাহ আরো বলেন, এই দুর্নীতির বিষয় এম সারাভানানের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য পুলিশকে আহ্বান করা হয়েছে।

পাশাপাশি মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবকে বিষয়টি দেখার জন্য আহ্বান জানিয়ে রিদজুয়ান বলেন, ‘আমরা মনে করি এটি একটি জাতীয় নিরাপত্তা এবং ক্ষমতার পরিপন্থী কাজ। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে তিনি তার (সারাভানানের) বক্তব্য সকাল-সন্ধ্যা পরিবর্তন করে ফেলছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্য বিজনেস পোস্টের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেউই ২৫ এজেন্সিকে অনুমোদন করেননি। ইমরান আহমেদ আরো বলেছিলেন যে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া উভয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) ২৫টি এজেন্সির কথা উল্লেখ নেই।

মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তারা বলছেন, যদি ২৫ এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি করা হয় তাহলে তাদের খরচ আগের কলিং ভিসার চেয়েও বেশি পড়বে এবং খরচ তুলতেই শ্রমিকদের দীর্ঘ সময় লেগে যাবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনজিও সংস্থা ইখলাসসহ আরো বেশ কয়েকটি সংস্থা ভিন্ন ভিন্ন থানায় মন্ত্রী এম সারাভানানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। যেহেতু ২৫টি এজেন্সি বাংলাদেশ অনুমোদন করেনি তাহলে এই সিন্ডিকেটের পেছনে এম সারাভানান দায়ী।

এদিকে গত চার বছর আগে সিন্ডিকেটের অভিযোগে মাহাথির সরকার কলিং ভিসা স্থগিত করার পর একের পর এক জটিলতায় ঝুলে আছে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজারটি। কলিং খুলে শ্রমবাজার স্বাভাবিককরণে এই চার বছরে অসংখ্যা মিটিং ও দেন-দরবার হয়েছে। কিন্তু ফলাফল একই। এ অচলাবস্থা চলতে থাকলে কলিং যেমন বন্ধ হয়ে যেতে পারে আবার চালু হলেও আগের মতোই মহাসংকটে পড়তে পারে কলিং ভিসার সংশ্লিষ্টরা। যেভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল ২০০৭ সালে চালু হওয়া কলিং ভিসায়। অবৈধ হয়ে মানবিক সংকটে পড়তে পারেন সাধারণ কর্মীরা।


আরো সংবাদ



premium cement