মালয়েশিয়ার মর্গে থাকা বাংলাদেশীর লাশ দেশে ফেরাতে স্ত্রীর আকুতি
- আশরাফুল মামুন, মালয়েশিয়া থেকে
- ০৭ মার্চ ২০২২, ১৫:০৭, আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২২, ১৬:২৫
হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়া মালয়েশিয়া প্রবাসী আ: কাইয়ুম (৫৫) নামে এক বাংলাদেশীর লাশ মালয়েশিয়ার একটি হসপিটালের মর্গে পড়ে আছে। এই অবস্থায় লাশটি দেশে ফেরত পাঠাতে হলে যে লাখ টাকার প্রয়োজন সে অর্থ পরিবারের পক্ষে যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। লাশ দেশে ফেরত পাঠাতে সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করাসহ কাইয়ুমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম দেশ-বিদেশের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মৃত আবদুল কাইয়ুম ২০০৮ সালের কলিং ভিসায় চাকরি নিয়ে মালয়েশিয়ায় যান। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার মাঝিকারা গ্রামের বাসিন্দা এবং তার পিতার নাম মো: কফিল উদ্দিন। আ: কাইয়ুম গত শনিবার দূপুর ১২টায় অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
আবদুল কাইয়ুম কুয়ালালামপুর দামানসারা উতমা এলাকায় বসবাস করতেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মালয়েশিয়া প্রবাসী মো: রাসেল শিকদার প্রতিবেদককে বেলন, আমি কাইয়ুমের হার্ট অ্যাটাকের খবর পেয়ে তার বাসায় গিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। তিনি আরো বলেন, এর আগের দিন করোনা পরীক্ষা করা হলে তার রেজাল্ট নেগেটিভ আসে।
কাইয়ুমের স্ত্রী ও ২ মেয়ে সন্তান রয়েছে। মালয়েশিয়া চাকুরী করে বিভিন্ন কারণে প্রতারিত হয়েও তিনি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন নি। এমনকি কি দেশের বাড়িতে নিজের কোন ভিটার জায়গা বা জমি নেই। ভিসা করতে না পারায় মারা যাওয়ার সময়ের তার বৈধ ভিসা ছিল না। এজন্য তার মরদেহটি দেশে পাঠাতে দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হবে। মালয়েশিয়ায় তার নিকট কোন আত্মীয় না থাকায় যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নকরণে এগিয়ে এসেছে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা এসোসিয়েশন ও মালয়েশিয়া প্রবাসীবৃন্দ।
কাইয়ুমের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার স্বামী মৃত্যুর পর আমি এখন খুবই অসহায়, ১২-১৩ বছর প্রবাসে থেকেও নিজের থাকার বাড়িটিও করতে পারেনি, সে বিএ পাশ ছিল এবং ভারী কোনো পরিশ্রমের কাজ করতে পারতো না। আমার কোনো ছেলে নেই এখন দুই মেয়ে নিয়ে আমি কোথায় যাব, কী করবো? কাইয়ুমের একসময় জায়গা-জমি সবই ছিল। এখন কিছুই নেই আমি এখন আমার বাপের বাড়িতে থাকি, কাইয়ুমের এখনও ৭-৮ লাখ টাকার ঋণ আছে। এগুলো কিভাবে পরিশোধ করবো চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছি। তাই সকলের কাছে আন্তরিক সহযোগিতা চাই।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এসোসিয়েশনের সভাপতি মো: নাজমুল ইসলাম বাবুল বলেন, আসলে একসময় কাইয়ুমের আর্থিক অবস্থায় ভাল ছিল। বিভিন্ন কারণে তার আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়, বর্তমানে তার পরিবার খুবই দরিদ্র। তাই আমাদের সংগঠনের সদস্যসহ সকল প্রবাসীর কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তার লাশটি দেশে ফেরত পাঠাতে এক লাখ টাকার প্রয়োজন, তাছাড়া তার পরিবারকে চলার মত কিছুটা সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
আমরা টাকা সংগ্রহ শুরু করেছি, যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি আর্থিক সাহায্য করতে চান তাহলে আমার এই হোয়াটস অ্যাপে এই 0060 12-310 0472 নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য বলা হলো।