টিকা না দিয়ে সৌদি পাঠালে কোয়ারেন্টিন বাবদ চলে যাবে ৩৭৫ কোটি টাকা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৬ জুন ২০২১, ১৬:৫২
করোনাকালে এক দিকে বিমানের টিকেটের উচ্চমূল্য। অন্য দিকে সৌদিগামীদের হোটেল কোয়ারেন্টিনের খরচ ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। এটা যেন ঠিক প্রবাসীদের জন্য ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’-এর মতো। কথাগুলো বলছিলেন, জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রা’র সাবেক সভাপতি আবুল বাশার।
তিনি বলেন, নতুন ও পুরাতন মিলে সৌদি আরবে গেছেন বা যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন প্রায় ৫০ হাজারের মতো। সেই হিসেবে কোয়ারেন্টিন ফি বাবদ তাদের পেছনে দেশ থেকে ৩৭৫ কোটি টাকা চলে যাবে। অথচ তাদের যদি করোনার টিকা দিয়ে পাঠানো হয় তাহলে এই বিপুল অর্থ দেশেই থেকে যাবে।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বায়রা’র সাবেক এই সভাপতি এসব কথা বলেন।
এ সময় বিদেশগামীদের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টিকা আলাদাভাবে বরাদ্দের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জনসনের টিকা’র অনুমোদন দিয়েছে আমাদের সরকার। এই টিকা এক ডোজ দিলেই কার্যকর হয়। তাই বিদেশগামীদের জন্য আমরা জনসনের এই টিকা আমদানির দাবি করছি। তাহলে যেমন এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যাবে না; তেমনি তাদের জন্য যে ২৫ হাজার টাকা করে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে সেটাও দরকার পড়বে না। বরং বিদেশগামীদের এই টাকা দিলে তাদের পরিবার উপকৃত হবে।
বর্তমানে বায়রা’র কমিটি নেই। আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য গঠিত সম্মিলিত সমন্বয় পরিষদ, বায়রা-এর ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
এতে বায়রা’র সাবেক অর্থসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, শুধু যে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হবে তা নয়, এই টিকা আমাদের বিদেশগামীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যও দরকার।
তিনি বলেন, টিকা গ্রহণের রেজিস্ট্রেশনের জন্য যে অ্যাপস্ সেখানে বয়সসীমা ৪০ বছরের উপরে রয়েছে। অথচ আমাদের বিদেশগামীদের বয়সসীমা ২১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। তাই তারা রেজিস্ট্রেশন করে টিকাগ্রহণ করতে পারেননি বা পারছেন না। বিদেশগামীদের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের এই বয়সসীমা পরিবর্তন করতে হবে। আর করোনাকালের শুরুতেই বিদেশগামীদের জন্য যে এক লাখ ২০ হাজার ডোজ বরাদ্দের কথা বলা হয়েছিল সেটা এখন বাস্তবায়নের সময় এসেছে। কারণ ইতোমধ্যে টিকা চলে এসেছে। এই মুহূর্তে যে ৭ লাখ টিকা এসেছে সেখান থেকে বিদেশগামীদের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টিকা বরাদ্দ দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিদেশগামীদের টিকার কোনো বিকল্প নেই। ভবিষ্যতে টিকা ছাড়া বিদেশগামীরা যেতে পারবে না। প্রবাসীদের যাওয়ার প্রবাহটা ধরে রাখতে হলে যেকোনোভাবে টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।
ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, অভিবাসন খরচ বাড়ার ক্ষেত্রে সবসময় রিক্রুটিং এজেন্সিকে দোষারোপ করা হয়। কিন্তু, বাংলাদেশ বিমানসহ অন্য বিমানগুলো আগের চেয়ে এখন টিকেটের ম্যূল ৩ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে টিকেটের মূল্য যেখানে ছিল ২৫ হাজার এখন সেটা ৭৫ হাজার পর্যন্ত ঠেকেছ। এ কারণে অভিবাসন ব্যয়ও বেড়েছে। এর উপর তো হোটেল কোয়ারেন্টিন বাবদ ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা যুক্ত হয়েছে। সরকারকে এ ব্যাপারে বিমানের টিকেট সহনীয় পর্যায়ে আনতে ভূমিকা রাখা উচিত।
সংবাদ সম্মেলনে বায়রা’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: শাহাদাত হোসেন, আবুল বারাকাত ভুঞা, সাবেক অর্থসচিব মিজানুর রহমান, সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক, সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য লিমা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।