দ্বিতীয় ধাপে করোনার ভয়াল থাবা ইউরোপে
- জুবের আহমদ, পর্তুগাল
- ৩১ অক্টোবর ২০২০, ১৯:১৬, আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২০, ২০:১২
শীতের মওসুম আসার সাথে সাথেই করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে ইউরোপে। কোনো কোনো দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে আগাম কারফিউ ও লকডাউনের করেছে কয়েকটি দেশ।
এদিকে ফ্রান্সে করোনায় সংক্রমিত হচ্ছে দৈনিক ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে বেশ কিছু দিন ধরে রাত্রিকালীন কারফিউ চলছিল ফ্রান্সে। তবুও আশঙ্কাজনক হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির সরকার বাধ্য হয়ে জাতীয়ভাবে লকডাউন কার্যকর করছে শুক্রবার থেকে।
গত সপ্তাহে বেলজিয়ামে সংক্রমণ ছিলো দৈনিক ১৫ হাজার জন পরে ওই পরিস্থিতিতে দেশটির সরকার জাতীয়ভাবে লকডাউন ঘোষণা করেন। ১১.৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ বেলজিয়ামে ইতোমধ্যে করোনায় প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ১১ হাজার জন।
এদিকে চলতি সপ্তাহে জার্মানিতে এক দিনে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে রেকর্ড সংখ্যক। যা সংখ্যায় প্রায় ১২ হাজার। যদিও করোনার প্রথম ধাপে দেশটি যথেষ্ট দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করেছিল কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে করোনার ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী ২ নভেম্বর থেকে আংশিক লকডাউন ঘোষণা করেছে দেশটি।
ইংল্যান্ডে প্রতিদিনই বাড়ছে নতুন সংক্রমণ আর মৃত্যুর সংখ্যা। শনিবার নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে ২৪ হাজার ৪০৫ জন ও মৃত্যু হয়েছে ২৭৪ জন। ২ নভেম্বর থেকে জাতীয়ভাবে লকডাউন ঘোষণা হতে পারে বলে জানা যায় দেশটির গণমাধ্যম সূত্রে।
এদিকে শনিবার স্পেনে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে ২৫ হাজার ৬০০ আর মারা গেছেন ২৩৯ জন। করোনার প্রথম ধাপ স্পেন ও ইতালির জন্য ছিলো মৃত্যুর মিছিলের মতো। তাই করোনার দ্বিতীয় ধাপ মোকাবেলায় দেশটির সরকার ইতোমধ্যেই জারি করেছে জরুরী অবস্থা। এই জরুরি অবস্থা আগামী ছয় মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার ইতালিতে সংক্রমিত হয়েছে প্রায় ৩১ হাজার ও মারা গেছে প্রায় ২০০ জন। করোনার প্রথম ধাপ ইতালির জন্য লাশের সমুদ্র হলেও জুলাই-আগস্ট মাসে সংক্রমণ ছিল বেশ নগণ্য, কিন্তু দ্বিতীয় ধাপ মোকাবেলায় দেশটির সরকার ইতোমধ্যে জারি করেছে রাত্রিকালীন কারফিউ। ক্যাফে, বার, রেস্তোরা, জিম, পানশালায় ও ক্লাবে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এদিকে, পর্তুগাল সরকার করোনার প্রথম ধাপ যথেষ্ট সাহসিক ও বিচক্ষণতার সাথে মোকাবেলা করলেও করোনার দ্বিতীয় ধাপ দেশটির জন্য সত্যিই এলার্মিং। শনিবার প্রায় ৪ হাজার ৬০০ জন আক্রান্ত হয়েছে ও মারা গেছে ৪০ জন। পর্তুগাল সরকার ইতোমধ্যেই স্ট্যাট অফ ক্ল্যামিটি জারি করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে ইউরোপকে করোনার হট স্পট বলে ঘোষণা করেছে। শীত যতো বাড়বে করোনার প্রকোপ ততো বাড়তে পারে বলে এর মধ্যেই ইউরোপকে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।