চাকরি দেয়ার নামে নতুন প্রতারণা
- ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
চাকরি দেয়ার নামে জামানত হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকা রেখে বেকারদের নিয়োগ দেয় উইনেক্স টেক্স করপোরেশন লিমিটেড নামে একটি ভুঁইফোঁড় প্রতিষ্ঠান। এরপর তাদের কিছুদিন প্রশিক্ষণ দিয়ে এই কোম্পানিতে আরো জনবল নিয়োগ করার দায়িত্ব দেয়া হয়। কোনো সদস্য নতুন একজনকে ৪৬ হাজার টাকার জামানতে কোম্পানির সদস্য করতে পারলে তাকে ৯ হাজার টাকা কমিশন দেয়া হয়। এভাবে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে উইনেক্স টেক্স করপোরেশনের প্রতারকেরা। সম্প্রতি কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে এ প্রতিষ্ঠানের ১৬ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।
রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বারিধারা আবাসিক এলাকার জে-ব্লকের ২ নম্বর সড়কের (নুরের চালা) ১০ নম্বর বাড়ি ভাড়া নিয়ে উইনেক্স কার্যালয় খুলে বসে প্রতারকচক্র। এক বছর ধরে এই বাড়িতে কার্যক্রম চালায় তারা। এর আগে এই প্রতিষ্ঠানের অফিস ছিল উত্তরায়। ধরা পড়ে যাওয়ার আতঙ্কে দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে অফিস বদল করে ফেলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনাকারীরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১ আগস্ট নুরের চালার অফিসে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৬ জনকে গ্রেফতার করে। এরপর থেকেই সেটি তালাবদ্ধ। চাকরি দেয়ার নামে জামানত হিসেবে তিন ক্যাটাগরিতে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় এসব প্রতারক। প্রথম ক্যাটাগরিতে ৪৬ হাজার টাকা, দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে ৪৪ হাজার ৫০০ এবং তৃতীয় ক্যাটাগরিতে ২২ হাজার টাকা। এভাবে প্রতিদিন অন্তত চার-পাঁচ লাখ টাকা নিরীহ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারকেরা। এ পর্যন্ত কয়েক কোটি টাকা তারা আত্মসাৎ করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। কেউ জামানত ফেরত চাইলে তাকে হুমকি দিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নিত প্রতারকরা।
গ্রেফতার হওয়া ১৬ জন হলোÑ ভাটারার আরিফুল ইসলাম ওরফে জুয়েল, রংপুরের পীরগঞ্জের কাবিলপুরের বাবু প্রামাণিক, একই জেলার প্রতাববিষু গ্রামের আশিকুর রহমান ও ডারারপাড়ের নুর আলম সিদ্দিকী, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠি গ্রামের জগবন্ধু মণ্ডল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিশ্বাসপাড়ার মোহাম্মদ আলী, রাজশাহী পুঠিয়ার কান্দেরা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ও একই জেলার দুর্গাপুরের উজ্জ্বল হোসেন, নওগাঁর ধামইরহাটের দুর্গাপুর গ্রামের মাহফুজুর রহমান, চুয়াডাঙ্গার সরিষাডাঙ্গা গ্রামের তুহিন আলী, বিষ্ণুপুরের হিমেল আলী মণ্ডল ও আহসান হাবিব, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঘাটিগ্রামের জামাল উদ্দিন বিশ্বাস, দৌলতপুর উপজেলার শিখালাইপাড়ার রবিউল ইসলাম ও মাসুদ রানা এবং জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার কাছিমা উত্তরপাড়া গ্রামের মাজেদুল ইসলাম আকন্দ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এজাহারভুক্ত আসামিরা অর্ধশিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত বেকার মানুষকে চাকরি দেয়ার নামে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানিয়েছে, নুরের চালা অফিসে চাকরি দেয়ার নামে দেড় হাজার মানুষকে সদস্য করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা।