পাতাল রেলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে অনুমোদন
- ১৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
ঢাকায় পাতাল রেল (সাবওয়ে) নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। স্প্যানিশ প্রতিষ্ঠান তিপসা এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করবে। ২২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকায় চারটি পাতাল রেল রুট নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করবে প্রতিষ্ঠানটি। গত বুধবার এ প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
ঢাকার যানজট নিরসনে ২০ বছর মেয়াদি সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (আরএসটিপি) অনুযায়ী, পাঁচটি মেট্রোরেল রুট নির্মাণ করা হবে। এর একটির (এমআরটি-৬) নির্মাণ কাজ চলছে। মেট্রোরেল বিদ্যমান সড়কের ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হবে। কিছু অংশ থাকবে মাটির নিচে। কিন্তু সাবওয়ের পুরোটাই থাকবে মাটির নিচে।
ঢাকায় চারটি সাবওয়ে রুট নির্ধারণ করে সমীক্ষা কাজ চলবে। রুট-১ এর আওতায় গাজীপুরের টঙ্গী থেকে বিমানবন্দর-কাকলী-মহাখালী-মগবাজার-মতিঝিল শাপলা চত্বর-সায়েদাবাদ হয়ে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড পর্যন্ত সমীক্ষা চালানো হবে। এ রুটের দৈর্ঘ্য ৩২ কিলোমিটার। রুট-২ এর আওতায় সাভারে আমিনবাজার থেকে গাবতলী-আসাদগেট-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-ইত্তেফাক মোড়-সায়েদাবাদ পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার পথে সমীক্ষা হবে।
রুট-৩ এর অধীনে গাবতলী থেকে মিরপুর-১-মিরপুর-১০-কাকলী-গুলশান-২-নতুনবাজার-রামপুরা টিভি স্টেশন-খিলক্ষেত-শাপলা চত্বর-জগন্নাথ হল হয়ে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত সমীক্ষা চলবে। রুট-৪ এর আওতায় রামপুরা টিভি স্টেশন থেকে নিকেতন-তেজগাঁও-সোনারগাঁও হোটেল-পান্থপথ-ধানমন্ডি-২৭-জিগাতলা-আজিমপুর-লালবাগ হয়ে সদরঘাট পর্যন্ত পাতাল রেলে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। রুট-৩ ও ৪ এর দৈর্ঘ্য এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
পাতাল রেল নির্মাণের উদ্যোগ নিতে ২০১৬ সালে সেতু বিভাগকে চিঠি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। একই বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন উন্নত দেশগুলোর মতো ঢাকায় পাতাল রেল নির্মাণ করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ঢাকায় দু’টি পাতাল রেল রুট চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সেতু বিভাগের। প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে কমিটির নথিতে বলা হয়েছে, সাবওয়ে নির্মিত হলে জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ মাটির নিচ দিয়ে চলাচল করতে পারবে। এতে মাটির ওপরে রাস্তায় মানুষের চলাচল কমবে। বাড়বে ফাঁকা জায়গা। যানজট দূর হবে।
সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাটির ২০ থেকে ৪০ মিটার গভীরে পাতাল রেলপথ নির্মাণ করা হবে। অত্যাধুনিক টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ব্যবহার করা হবে এ কাজে। তাই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় জনদুর্ভোগ হবে না। মাটির ওপরে খোঁড়াখুঁড়ি করতে হবে না।
সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উড়াল সড়ক, ফ্লাইওভারের সম্ভাব্য আয়ুষ্কাল ৫০-৭৫ বছর। পাতাল রেলের আয়ুস্কাল ১০০ থেকে ১২৫ বছর। লন্ডনের শতবর্ষী পাতাল রেল এখনো সচল রয়েছে। যানজট নিরসনে লন্ডন ছাড়াও নিউইয়র্ক, সানফ্রান্সিসকো, বাগোতার মতো শহরে উড়াল সড়ক, ফ্লাইওভার, ভায়াডাক্ট অপসারণ করে সাবওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।