ছেলে দিপুকে আসন ছেড়ে দেবেন মায়া?
- আশরাফ আলী
- ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৩১
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও দণি) আসনে ‘নৌকা’ প্রতীক পেতে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং তার বড় ছেলে সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দিপু। তবে কেউ কারো প্রতিপ হবেন না। পারিবারিক ঐকমত্যের ভিত্তিতেই বাবা-ছেলে দুইজনেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
বাবা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এই আসনে দীর্ঘ দিন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে দায়িত্ব পালন করলেও এবার তার ইচ্ছা ছেলে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়ে একদিকে যেমন স্থানীয় আওয়ামী লীগের হাল ধরবেন, অন্য দিকে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের সাথে তাল মিলিয়ে এলাকার উন্নয়নকাজ তরান্বিত করবেন। এই কারণে নিজের পরিবর্তে আওয়ামী লীগ এবার দিপুকে মনোনয়ন দিলেই বেশি খুশি হবেন মায়া চৌধুরী।
মন্ত্রী মায়া চৌধুরীর পরিবারের একাধিক সদস্য নয়া দিগন্তকে জানান, এই আসনটি থেকে মায়া চৌধুরী একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের ’৯৬-২০০১ শাসনামলে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন, বর্তমানে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা মহানগরসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও দীর্ঘ দিন তিনি সক্রিয়। কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত থাকার কারণে ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি নিজ নির্বাচনী এলাকায় পর্যাপ্ত সময় দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। সেই কারণে মায়া পরিবারের ইচ্ছা, মায়া চৌধুরী দলের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে পর্যাপ্ত সময় দেবেন, আর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে নির্বাচনী এলাকায় কাজ করতে চান ছেলে দিপু চৌধুরী।
এ বিষয়ে দিপু চৌধুরী বলেন, ‘বাবা দীর্ঘ দিন রাজনীতিতে যুক্ত। আমাদের পরিবার, এমনকি বাবাও চান এবার আমি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করি। বাবা চান দলের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে আরো বেশি করে সময় দিতে, পাশাপাশি মন্ত্রণালয় নিয়েও ব্যস্ত থাকতে আগ্রহী তিনি। আর আমি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হতে পারলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমার বাবার অসমাপ্ত কাজ শেষ করার আপ্রাণ চেষ্টা করব। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেই সিদ্ধান্ত দেবেন সেটিই আমাদের পরিবার খুশিমনে মেনে নেবে।
এক প্রশ্নের জবাবে দিপু বলেন, কোনো পদ-পদবি পেতে নয়, আসলে একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে রক্তেই তার রাজনীতি, রক্তেই তার বঙ্গবন্ধুর আদর্শ।
চাঁদপুর-২ আসনের সর্বত্র আওয়ামী লীগের প্রতিটি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের প থেকে ‘দিপু চৌধুরীকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই’- স্লোগান সংবলিত বিপুলসংখ্যক ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে। এসব ব্যানার- পোস্টারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ছাড়াও মায়া চৌধুরীর ছবি শোভা পাচ্ছে। দিুপ জানান, তিনি তরুণ প্রজন্মেরও নেতৃত্ব দিতে চান। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে এলাকার স্থানীয় নেতাকর্মী-সমর্থকেরাও চাচ্ছেন তিনি যেন এবার দলীয় মনোনয়ন পান।
একসময় ঢাকা মহানগর যুবলীগের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেয়া দিপু চৌধুরী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত কয়েক বছর ধরেই এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করে আসছেন। বিশেষ করে গত দুই বছর ধরে সপ্তাহের পাঁচদিনই তিনি এলাকায় দলকে সংগঠিত করার পাশাপাশি উন্নয়নকাজে বাবাকে সার্বণিক সহযোগিতা করছেন। নিজ এলাকার ছেংগারচর কলেজকে সরকারীকরণ করাসহ বিভিন্ন শিাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও ভূমিকা রেখেছেন দিপু চৌধুরী। স্থানীয় তরুণদের শিা, সংস্কৃতি বিকাশে ও ক্রীড়ানুরাগী করতেও তিনি নানা পদপে নেন। যার কারণে দলমত নির্বিশেষে স্থানীয়রাও এবার ‘নৌকা’ প্রতীকে নির্বাচন করতে দিপুকে উৎসাহ দিচ্ছেন। মায়াপুত্র জানান, তিনি এই এলাকাকে একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চান। এখানে যে ইকোনমিক জোন রয়েছে সেটিকে আরো উন্নত করতে চান।