২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কী করেছেন ডা: জাফরুল্লাহ!

ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী - ছবি : সংগৃহীত

সরকারি আক্রোশ এমন নিম্ন পর্যায়েও যে যেতে পারে, একে একে তার প্রমাণ মিলছে। প্রথম আমরা তা দেখলাম ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায়। এ মামলা জামিনযোগ্য হলেও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন মানহানির মামলায় এখন কারাগারে। এর কোনো কিছুই ঘটত না, যদি তারা সরকারের তাঁবেদারি করতেন। কিন্তু এ দু’জন ব্যক্তি দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। গণতন্ত্র যে নেই বাংলাদেশে, সেটা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। কিছুকাল আগে জার্মান থিঙ্কট্যাঙ্ক বাংলাদেশ সরকারকে নব্য স্বৈরাচারী বলে অভিহিত করেছিল। তাতে সরকার থেমে যায়নি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম প্রায় ধমকের সুরে বলেছিলেন, গণতন্ত্র কি জিনিস তা ফ্যাসিবাদী জার্মানির কাছ থেকে আমাদের শিখতে হবে না। জার্মানিকে ফ্যাসিবাদী বলা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। ফ্যাসিবাদী ছিল সে দেশে হিটলারের সরকার। দেশ ফ্যাসিবাদী হয় না। সরকার ফ্যাসিবাদী হয়।

আমাদের দেশের সরকার এখন জনগণের ওপর নির্যাতনের যে স্টিমরোলার চালাচ্ছে, সেটি সাম্প্রতিক সময়ে পৃথিবীর কম দেশেই লক্ষ করা যায়। এখানে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই, পুলিশকে এমন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যে, তারা বিনা পরোয়ানায় যেকোনো মানুষকে আটক করতে পারে। এ ছাড়া তারা যদি হত্যাও করে তাহলে তার দায়মুক্তিও দেয়া হয়েছে। কিন্তু দায়মুক্তি নেই যারা সত্য বলায় ‘অপরাধী’ তাদের বেলায়। সেটিই ঘটেছে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মইনুলের ক্ষেত্রে। ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী সেনাবাহিনী প্রধান সম্পর্কে একটি ভুল তথ্য উপস্থাপন করে একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেটা উপলব্ধি করে তিনি পরদিনই সংবাদ সম্মেলন করে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। ব্যাপারটা সেখানেই মীমাংসা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না করে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হলো প্রথমে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। তারপর একের পর এক মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি চাঁদাবাজি ও জমি দখলের মামলা করেছে আশুলিয়ার কিছু লোক। এসব লোক হঠাৎ করে কেন জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে উৎসাহিত হয়ে উঠল, সেটি ভাবার বিষয়। তারা কি উৎসাহিত হলো, নাকি কেউ তাদের উৎসাহিত করে তুলল সে প্রশ্ন এখন মানুষের মনে।


সর্বশেষ মামলাটি দায়ের হয়েছে গত ২৫ অক্টোবর। আশুলিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন কাজী মুহিবুর রব নামের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মোট পাঁচটি মামলা দায়ের হলো। সর্বশেষ মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার মালিকানাধীন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে একটি জমি দীর্ঘদিন ধরে জবরদখল করার চেষ্টা করে আসছেন। তিনি জমির মালিকের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা দাবিসহ ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দিয়ে আসছেন। মামলায় জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার লোকজন নিয়ে জমিতে থাকা পুকুরের মাছ চুরি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই ব্যক্তি। হাসান নামে আরো এক ব্যক্তি গত ২১ অক্টোবর ডা: জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া সেলিম আহমদ নামক এক ব্যক্তি ২৩ অক্টোবর, নাসির উদ্দিন নামে আরো এক ব্যক্তি জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় জমি দখল ও চাঁদাবাজির আরো দুটি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে দুটি মামলায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন লাভ করেছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে এখন সরব দেশের তরুণ সমাজ। নানা ব্যঙ্গ-রসাত্মক স্ট্যাটাস দিয়ে তারা তার প্রতিবাদ করছেন। কেউ বলেছেন, আস্ত মাছ চুরি করেছেন তিনি, নাকি ভাগা। কেউ বলেছেন, ইলিশ মাছ নাকি কাচকি মাছ। এমনিতর নানা মন্তব্য ফেসবুকে প্রকাশিত হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, গত ২৩ অক্টোবর র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত দুটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালান। গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের অভিযানে এন্টিবায়োটিকের কাঁচামাল জব্দ ও এন্টিবায়োটিক বিভাগ সিলগালা করা হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই প্রতিষ্ঠানকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করে। একই দিন সন্ধ্যায় তিনজন ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অভিযোগে হাসপাতালকে আরো ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একেই বোধহয় ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বলে। ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী দেশের শীর্ষস্থানীয় একজন মুক্তিযোদ্ধা, এখন তার বয়স ৭৮। সপ্তাহে তিন দিন তাকে ডায়ালাইসিস করতে হয়। ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করার পর তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য বিলাত যান। ১৯৬৭ সালে বিলাতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে জেনারেল ও ভাস্কুলার সার্জারিতে এফআরসিএস প্রাইমারি পর্ব পাস করেন।

বিলাতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে এফআরসিএস পড়ার সময় বাংলাদেশে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়। তখন তিনি দেশে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য এফআরসিএসের চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করেই ১৯৭১ সালে আগরতলায় চলে আসেন। সেখানকার মেলাঘর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন। উচ্চতর ডিগ্রিধারী একজন চিকিৎসক হয়েও সাধারণ সৈনিক হিসেবে অস্ত্র হাতে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে যোগ দেন। পরে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় একটি ফিল্ড হাসপাতালের প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী ডা: মবিনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে গড়ে তুলেন ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল’। সেখানে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।

স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে ওই হাসপাতালটিকে তারা প্রথমে কুমিল্লায় ও পরে ঢাকায় স্থানান্তর করেন, যা এখন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তার অবদান অবিস্মরণীয়। তিনি গ্লোবাল প্যারামেডিক কনসেপ্টের উদ্ভাবক। তার সম্পাদিত ‘যেখানে ডাক্তার নেই’ একসময় ঘরে ঘরে পাওয়া যেত। এই সবকিছুর লক্ষ্য ছিল গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা। তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ১৯৮২ সালের ওষুধনীতি। তখন বাংলাদেশে চার হাজার কমার্শিয়াল ড্রাগস পাওয়া যেত, যা বিদেশী কোম্পানির মাধ্যমে তৈরি ও আমদানি হতো। ওইসব ওষুধের অনেকগুলো ছিল অদরকারি ও জনগণের ক্রয়সীমার বাইরে। অথচ অতীব দরকারি ওষুধ ছিল মাত্র ১৫০টি। তার প্রচেষ্টায় উন্নয়নশীল দেশের জন্য আমদানি ওষুধের সংখ্যা দাঁড়ায় ২২৫ এবং এখন বাংলাদেশ একটি ওষুধ রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। এটা কিভাবে সম্ভব হলো তা নিয়ে বিদেশে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। বিদেশী পত্র-পত্রিকায় ডা: জাফরুল্লাহকে নিয়ে ধন্য ধন্য হয়েছে। আর এসব কারণে ডা: জাফরুল্লাহকে দেয়া হয়েছে স্বাধীনতা পদক। নোবেল পুরস্কারের পর সর্বোচ্চ সম্মানিত আন্তর্জাতিক পুরস্কার ‘রেমন-ম্যাগস্যাসই অ্যাওয়ার্ড’ তিনি অর্জন করেছেন ১৯৮৫ সালে। সুইডেন থেকে অর্জন করেছেন বিকল্প নোবেল হিসেবে পরিচিত ‘রাইট লাভলিহুড’। সেটাও ২৬ বছর ১৯৯২ সালে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় ২০০২ সালে তাকে ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো উপাধি দিয়েছে।

ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কম দামে সাধারণ মানুষের মধ্যে ওষুধ সরবরাহের উদ্দেশ্যে। দামি অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের বদলে ট্যাবলেট তিনি প্যাকেট করার প্রচলন করেন সাধারণ কাগজে। ফলে ওষুধের দাম কমে যায়, ওষুধ সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আসে। গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছেন, মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য যুদ্ধ করেছেন, এখন সস্তায় ডায়ালাইসিস করার ব্যবস্থা করেছেন গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে। সঙ্গতিহীন দরিদ্র মানুষ মাত্র এক হাজার ২০০ টাকায় সেখানে ডায়ালাইসিস করাতে পারেন। সেই ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী কারো পুকুরের মাছ চুরি করেছেন?

তেমনি ঘটনা ঘটেছে ব্যারিস্টার মইনুলকে নিয়ে। একটি টেলিভিশন টকশোতে একজন নারী সাংবাদিক ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রশ্ন করেন যে, তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করেন কি না? এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন জবাব দেন, আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে আপনি একজন চরিত্রহীন। পরের প্রশ্ন করুন। এই নিয়ে সারা দেশে তোলপাড়। সন্দেহ নেই এরকম একটি বক্তব্য দেয়া তার জন্য ঠিক হয়নি। সে কথা তিনি দ্রুতই উপলব্ধি করেন এবং ফোন করে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে নিউ নেশন পত্রিকার প্যাডে তিনি লিখিতভাবে ওই অনুষ্ঠানের প্রযোজকের কাছেও দুঃখ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তার ভুল স্বীকার করেন। তার পরেও কোথায়ও আক্রোশ থেমে থাকে না। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেত্রীরা একে একে মামলা দায়ের করতে থাকেন। যার মানহানি হয়েছে তিনিও মামলা করেছেন আর আওয়ামী নেত্রীরা মামলা করেই যাচ্ছেন।

এ সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বলেছেন, যার মানহানি হয়েছে মামলা শুধু তিনিই করতে পারেন। আর একটি ইস্যুতে একটিই মামলা হতে পারে। শত শত মামলা হওয়ার দরকার নেই। কিন্তু এর আগেও আমরা দেখেছি ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনামের এক বক্তব্যের বিরুদ্ধে সারা দেশে ৮০টি মানহানির মামলা করা হয়েছিল। ড. কামাল হোসেন বলেছেন, মানহানির মামলা জামিনযোগ্য অপরাধ। তার পরও ব্যারিস্টার মইনুলকে কেন কারাগারে নেয়া হয়েছে। এখনও তিনি কারাগারেই আছেন। বিভিন্ন ধারায় তার বিরুদ্ধে আওয়ামী নেত্রীরা মামলা করেই যাচ্ছেন।

এ ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, সরকার কতটা অসহিষ্ণু ও বিচলিত। তাছাড়া সরকারের কথারও কোনো ঠিকঠাক নেই, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যখন গঠিত হলো তখন সরকার তাকে স্বাগত জানাল এই বলে যে, আওয়ামী লীগ-বিরোধী লোকদের ভোট দেয়ার একটা জায়গা থাকা দরকার। কিন্তু এর কিছু দিন পরেই তারা একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ল যে, ঐক্যফ্রন্টের লোকদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করতে হবে।

সেই প্রতিহতকরণের কিছু নমুনা আমরা সিলেটের জনসভাকে কেন্দ্র করে দেখলাম। জনসভার আগে-পরে শত শত বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করা হলো। তারা কারারুদ্ধ। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী আবার নতুন কথা বললেন, নতুন জোট গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করবে। তাই যদি করে তাহলে চট্টগ্রামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সভায় কেন বাধা সৃষ্টি করছেন। বলছেন ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার কারণে। ২৭ অক্টোবর জনসভার অনুমতি দেয়া যাবে না। অথচ সেখানে জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশের মধ্যে খেলা হয়েছে ২৬ অক্টোবর। আবার খেলার ময়দানকে জনসভাস্থল থেকে কমপক্ষে ১৫ কিলোমিটার দূরে। অপর দিকে যে র‌্যাডিসন ব্লু হোটেলে খেলোয়াড়রা থাকবেন সেটার দূরত্বও জনসভাস্থল থেকে কমপক্ষে ৫ কিলোমিটার। তাহলে এটা তো কোনো যুক্তি হতে পারে না যে, ওই দিন সেখানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে জনসভা করতে দেয়া যাবে না। আসলে এটি জনসভা না করতে দেয়ার অজুহাত মাত্র। তবে শেষ পর্যন্ত লালদিঘি ময়দানে নয়, কাজীর দেউড়িতে সভা করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এভাবেই বিরোধীদের সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে সরকার। বাধা দিচ্ছে।

কিছু দিন আগে এক টেলিভিশন টকশোতে উপস্থাপিকা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানককে প্রশ্ন করেছিলেন, বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের জনসভা করতে দিতে নানা ধরনের শর্ত আরোপ করা হয়। আপনাদের জনসভা করতেও কি পুলিশ এ ধরনের কোনো শর্ত আরোপ করে? জনাব নানক তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। কিন্তু এই প্রতিহিংসা, এই ক্ষমতার দাপট, সম্মানিত লোকদের এভাবে অসম্মান প্রাকৃতিক নিয়মেই বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে। আশা করি সরকার সতর্ক হবে।
লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
rezwansiddiqui@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement