ইঞ্জিনিয়ার হয়েও কেন ঝাড়ুদারের চাকরির আবেদন?
- ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:২৫
প্রায় ৪ হাজার যুবক যারা ঝাড়ুদার এবং সাফাইকর্মীদের ১৪টি শূন্যপদে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে প্রায় শ’খানেক প্রার্থী রয়েছে যারা এমবিএ, এমসিএ, বি টেক, এম কম, বি কম, বিবিএ এবং এম ফিল পাস করা।
পড়াশোনা করেছেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে। শুধু পড়াশোনাই করেননি, ওই বিভাগে ফার্স্ট ক্লাসও তিনি। তা সত্ত্বেও তামিলনাড়ুর বিধানসভায় ঝাড়ুদারের চাকরির জন্য আবেদন করলেন ২৩ বছর বয়সী ধনসিংহ আরুল।
বিগত চার মাস ধরে চাকরি নেই তার। ধনসিংহ বলেন, ‘আমি কোনও চাকরি পাচ্ছি না। হতে পারে আমি একজন ইঞ্জিনিয়ার, কিন্তু আমি এখন ঝাড়ুদারের চাকরি করতেও রাজি। এজন্যই আমি এই পদে আবেদন করেছি।’
তবে, ধনসিংহ একা নন। প্রায় ৪ হাজার যুবক যারা ঝাড়ুদার এবং সাফাইকর্মীদের ১৪টি শূন্যপদে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে প্রায় একশ’ জন প্রার্থী রয়েছেন যারা হয় এমবিএ, এমসিএ, বি টেক, এম কম, বি কম, বিবিএ এবং এম ফিল পাস করা।
ধনসিংহ এখন মরিয়া হয়ে চাকরির আবেদন করছেন। সরকারের দেওয়া ল্যাপটপে যদিও নেট কানেকশন নেওয়ার সামর্থ্য নেই তার। বন্ধুর থেকে হটস্পটে ইন্টারনেট নিয়েই কাজ করছেন তিনি। স্মার্ট ফোন নেই এই যুগেও। পুরনো মডেলের একটি ফোন যদিবা আছে, তাতে ফোন করার মতো ব্যালেন্স নেই।
নির্বাচনের কাছাকাছি চলে আসায়, রাজ্য সরকার এমন ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক' বলেই মনে করছে। কিন্তু সরকার এও জানিয়েছে, তারা চান তরুণ তরুণীরা সরকারের সিঙ্গল উইন্ডো ক্লিয়ারেন্স স্কিমের সুবিধা নিয়ে নিজেরা উদ্যোক্তা হয়ে স্ব-নিযুক্তি ঘটাক। রাজ্যের মৎস্য ও কর্মপরিষদমন্ত্রী ডি জয়াকুমার বলেন, ‘চাকরি সরবরাহের দায়িত্ব আমাদের কর্তব্য হলেও আমরা পাঁচ বছরে ৬০ লাখ চাকরি দিতে পারব না। প্রার্থীরা বেসরকারি চাকরিরও সন্ধান করুক। শিক্ষার্থীরা কেবল সরকারি চাকরি চায়, কারণ তারা মনে করে এটি নিরাপদ।’
তামিলনাড়ু সরকারের এখন চার লাখ শূন্যপদ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের সম্মেলনে রাজ্যে তিন লাখ চাকরির প্রত্যাশা পূরণ ব্যর্থ হয়। ২.৫ লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগও বন্ধ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্নাতকদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশই চাকরি পাওয়ার যোগ্য এবং তারা আরও জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শহরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে প্রতিবছর অদক্ষ এবং চাকরির অযোগ্য বেকার স্নাতকরা পাস করছেন। কনভেনান্ট গ্রুপের সিইও জোশুয়া মাদান বলেন, ‘মূলত এই রাজ্যের বেকারত্বের কারণ হল আমাদের রাজ্যের শিক্ষার মানের অভাব। পাঠ্যক্রম শিল্পে যোগদানের জন্য কোনও পড়ুয়াকেই তৈরি করে না, যার ফলে প্রযুক্তিগত ও যোগাযোগের দক্ষতার অভাব দেখা দেয়। অন্যদিকে চাকরি পাওয়ার সুযোগও কমে যায়।’