গণতন্ত্র আরো রঙ হারাচ্ছে
- জসিম উদ্দিন
- ০৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:৫৫
গত শতাব্দীতে বিশ্ববাসীর ঝোঁক ছিল ব্রিটিশ ও মার্কিন আদলে গণতন্ত্র চর্চার দিকে। শতাব্দীর শেষে এসে এর জোয়ার বয়ে যায়। চলতি সহস্রাব্দের শুরুতে, ঠিক এর বিপরীত প্রবণতা দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সূচক নিম্নগামী। ২০০৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিশ্বের ১৭৯ দেশের ১৫৮টির গণতন্ত্র চর্চায় অবনতি লক্ষণীয়। কিংবা বলা যাচ্ছে না, এসব দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ‘উন্নতি’ হয়েছে। বিশ্বে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম পথিকৃত যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র চর্চার মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারত, লাতিন আমেরিকার ব্রাজিলসহ বিশ্বের গণতন্ত্র চর্চাকারী ২৪টি দেশ কর্তৃত্ববাদী শাসনের দিকে ঝুঁকছে। সুইডেনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ভ্যারাইটিজ অব ডেমোক্র্যাসি ইনস্টিটিউটের (ভি-ডেম) একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কর্তৃত্ববাদ কত দ্রুত বিশ্ববাসীকে নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে ভি-ডেমের ওই গবেষণা থেকে তা জানা যায়। সংশ্লিষ্ট গবেষণা মতে, ২০১৬ সালে বিশ্বের ৪১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ কর্তৃত্ববাদী শাসনের পীড়নের শিকার। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ২০১৮ সালে এই পীড়নের শিকার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৩০ কোটি। কর্তৃত্ববাদী শাসনের এমন উল্লম্ফনেই সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মতো বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যথাক্রমে ট্রাম্প ও মোদির মতো শাসকের আবির্ভাব হয়েছে। এখন সব মিলিয়ে বিশ্বে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ কর্তৃত্ববাদী শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক মিডিয়া সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে এখন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের মূল্যবোধ ধ্বংসকারীদের বেশির ভাগই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত।
ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি কর্তৃত্ববাদী শাসনের অধীনে বলে উদাহরণ এসেছে ভি-ডেমের রিপোর্টে। তবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কার্যকলাপ সম্ভবত এখনো ওই প্রতিবেদনে সংযুক্ত হয়নি। ট্রাম্পের অনুসারী জনসনের উগ্র জাতীয়তাবাদের উন্মাদনা শেষ পর্যন্ত দেশটিকে কর্তৃত্ববাদী করে তুলবে কি না, সেটি দেখার অপেক্ষায় রয়েছে গণতন্ত্রকামী বিশ্ব। ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমেরিকার বেহাল দশা ইতোমধ্যে বিশ্ববাসী ভালোভাবে টের পাচ্ছে। সে দেশের মুসলিম এবং অভিবাসীরা এর মধ্যে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের উগ্র ঘৃণার শিকার হয়েছেন। দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল ও ভেনিজুয়েলা, আফ্রিকার মালি ও বুরুন্ডি এবং এশিয়ার ভারত ও ফিলিপাইন এমন কর্তৃত্ববাদী দেশের উদাহরণ।
এখন আলোচিত বিষয়, গণতন্ত্রের হাত ধরে কর্তৃত্ববাদের উত্থান। কেউ আর সমাজতন্ত্র কিংবা সাম্যবাদ কায়েমের জন্য বিপ্লবের পথে হাঁটছে না। বন্দুকের নল ব্যবহারের অপেক্ষায় কেউ থাকছেন না। গণতন্ত্র এখন ব্যবহৃত হচ্ছে কর্তৃত্ববাদীদের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে। এ ক্ষেত্রে জনগণ নিজেরাই যেন পথ করে দিচ্ছে কর্তৃত্ববাদীদের। নতুন একটি শব্দের আবির্ভাব ঘটেছে ‘লোকরঞ্জনবাদ’। মূলত জনপ্রিয়তার যথেচ্ছ ব্যবহারের প্রবণতা লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে নেতারা ঘৃণা আর ভীতিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। মানুষ তাদের ‘জাতীয়তাবাদী’ মধুর কথায় পটে যাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরই জনপ্রিয়তাবাদের কুশলী কারিগর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি হিন্দু ধর্মকে পুঁজি করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা মুন্সিয়ানার সাথে ব্যবহার করছেন। সে দেশে কোন ফাঁকে গণতন্ত্রে ধস নেমেছে, জনগণ তা ঠাহরও করতে পারছে না। মোদির ম্যাজিকে পরাস্ত হয়ে নেতারা এখন আওয়াজ তুলেছেন। তাদের বক্তব্য- একটি উদার ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ৫০ বছর ধরে ভারত নিজেকে বিশ্বে পরিচিত করিয়েছে। তবে দেশটির প্রধান দল কংগ্রেস এবং আমলাতন্ত্র হিন্দু অভিজাত শ্রেণী দ্বারাই পরিচালিত ছিল। নিজের দেশে গণতন্ত্রের চর্চা করলেও আশপাশের দেশে পছন্দের সরকার ক্ষমতায় রাখতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে ভারত। কংগ্রেসের এসব নেতা এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত আমলাতন্ত্র নিজ দেশে গণতন্ত্রকে যুৎসই শাসনব্যবস্থা হিসেবে পছন্দ করলেও প্রতিবেশী দেশে তাদের সব সময়ের পছন্দ হলো নিজেদের প্রভাবাধীন সরকার। সেটি গণতন্ত্র, আধা গণতন্ত্র কিংবা গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে সামরিক সরকার- যাই হোক না কেন।
এখন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বেকায়দায় পড়ায় এসব নেতার চেতনা হঠাৎ জেগে উঠেছে। তারাই বলছেন, মোদির নেতৃত্বাধীন ভারত এখন ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ হিসেবে পরিচিত হতে সচেষ্ট। এতে তাদের ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভাবমর্যাদা লুণ্ঠিত হওয়ার উপক্রম বলে তারা সারা ভারতে শোরগোল তুলছেন। তাদের জন্য বর্তমান বিশৃঙ্খল ভারত শিক্ষণীয় একটি পাঠশালা। নিজের জন্য কোনো কিছু ভালো মনে করলে অন্যের জন্যও তা উত্তম মনে করতে হয়। তা না হলে নিজেদের ভালো নিয়েও টিকে থাকা যায় না।
গণতন্ত্র মার খাচ্ছে নিজের উদারতার কাছেই। গণতন্ত্র নিজের নিরাপত্তা পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি। ভেতরে এ শাসনব্যবস্থা এমন ফুটো রেখে দিয়েছে, যা দিয়ে অনায়াসে এর শত্রুরা ঢুকে পড়ছে। যারা যখন ফুটো দিয়ে প্রবেশ করছেন তখন তারা বলছেন, আমরা অগণতান্ত্রিক। বরং তারা নিজেদের ব্যাপারে ধাপ্পা দিচ্ছেন; আমরা অতিমাত্রায় গণতান্ত্রিক। কর্তৃত্ববাদীরা গণতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে ব্যবস্থাটিকে ধসিয়ে দিয়ে নিজেদের প্রভুত্ব কায়েম করে থাকে। ট্রাম্প গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে আমেরিকার সরকারে প্রবেশ করে স্বল্প সময়ের মধ্যেই সে দেশে উদার গণতান্ত্রিক পরিবেশ তছনছ করে দিয়েছেন।
রিপাবলিকানরা এখন তার কাছে ধরাশায়ী। দলের ভেতর থেকে কেউ ট্রাম্পের জোরালো সমালোচনা করছেন না। কারণ এ ধরনের সমালোচনার পরিণতি কী, তা সবাই জানেন। একই অবস্থা ভারতেও। মোদি-অমিত শাহ জুটির সমালোচনা করবেন, এমন ‘বাপের বেটা’ বিজেপিতে নেই। সংস্কার কিংবা সংশোধন গণতন্ত্রের মধ্যে হতে পারে। সেটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে থেকে গণতান্ত্রিক পন্থায় হতে পারে বলে মনে করেন উদার গণতন্ত্রীরা। তাদের এমন উদারতার সাথে একমত নন গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে ক্ষমতায় আসা কথিত গণতন্ত্রীরা।
ভি-ডেমের প্রতিবেদনে গণতন্ত্র নিয়ে হতাশার খবরের পাশাপাশি কিছু আশাব্যঞ্জক কথাও জানাচ্ছে। তাদের গবেষণা অনুযায়ী, গত এক দশকে ২১টি দেশে গণতন্ত্র চর্চার উন্নতি হয়েছে। এর মধ্যে আফ্রিকার তিউনিসিয়া ও গাম্বিয়া রয়েছে। তিউনিসিয়ায় স্বৈরতন্ত্র উৎখাতের পর গণতান্ত্রিক সরকার এক দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় রয়েছে। ক্রমেই দেশটিতে গণতন্ত্র বিকশিত হচ্ছে। অন্য দিকে আরব দেশগুলোতে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল, সেগুলো পথ হারিয়ে ফেলেছে। বেশির ভাগ আরব দেশে দীর্ঘ দিন ধরে স্বৈরশাসন জেঁকে বসে আছে। সেখানে গণমানুষের মতামত প্রকাশের সুযোগ খুবই সীমিত। অন্য দিকে ছোট দেশ হলেও গাম্বিয়া বিশ্ব অঙ্গনে নতুন করে আলো ছড়াচ্ছে। মাত্র সাড়ে ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারের দেশটিতে বাস করে সাড়ে ১৮ লাখ মানুষ। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশটির আয়তন ও প্রভাব উল্লেখ করার মতো নয়। সেখানে এমন কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ নেই কিংবা দেশটি কোনো ভৌগোলিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত নয় যে, বিশ্ব রাজনীতিতে তাদের কথা আলোচনায় আসতে পারে। বিশ্ব দেখল, এক নিপীড়িত নির্যাতিত জাতির পক্ষে সাহসী অবস্থান নিয়েছে গাম্বিয়া। রোহিঙ্গা গণহত্যার ইস্যুতে চীন, রাশিয়া ও ভারতের আশীর্বাদপুষ্ট, শক্তিশালী মিয়ানমারকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে তারা।
কাজটি এর আগে প্রায় ১৬০ কোটি মুসলমানদের কেউ করতে পারেনি। এমনকি রোহিঙ্গাদের বন্ধু বলে পরিচিত অনেক প্রতিবেশী রয়েছে; কেউ সেটি করে দেখাতে পারেনি। গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বাস্তুহারা লাখ লাখ রোহিঙ্গা বিচার পাওয়ার একটা স্বপ্ন দেখছে এখন। সেটি তাদের কাছে অসম্ভবই মনে হয়েছিল এত দিন। এখন রোহিঙ্গারা গাম্বিয়া ও সে দেশের বিচারমন্ত্রীর নামে সেøাগান দিচ্ছে। তারা মনে করছে, তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত জঘন্য অপরাধ প্রথম কার্যকরভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্থাপন করেছে ছোট দেশ গাম্বিয়া। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র যখন হোঁচট খাচ্ছে, সাধারণ মানুষের বিপক্ষে এর ব্যবহার হচ্ছে- তখন শ্রীলঙ্কায় বাড়ছে এর চর্চা। সাম্প্রদায়িক হানাহানির মধ্যেও দেশটিতে ক্রমেই গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকতা পাচ্ছে। গত বছর সফলভাবে দেশটির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা গ্রহণ করতে কোনো ধরনের বেগ পেতে হয়নি।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখনো ‘এক দিনের ভোটের চর্চায়’ সীমাবদ্ধ। তাও প্রশ্নবিদ্ধ। গণতান্ত্রিক মানসিকতার ব্যাপক চর্চার ধারণাটি এখনো এ দেশে অপরিচিত, অজানা। এখানে প্রতি পাঁচ বছর পর একবার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অন্য দিকে বিভিন্ন মেয়াদে স্থানীয় সরকারের নানা স্তরে নির্বাচন হচ্ছে। এসব নির্বাচনের অবস্থা কেমনÑ সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনারদের মন্তব্য থেকে ধারণা করা যায়। ২০১৯ সালের ৮ মার্চ নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন বলেছিলেন, উপজেলা নির্বাচনের আগের রাতে ভোট চলবে না, তবে তিনি এর পটভূমিটি বলেননি। মূল ব্যাপার হলো- ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক জায়গায় আগের রাতেই ভোট ‘সম্পন্ন হয়ে যায়’। পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো ধরনের তদন্ত পরিচালনার দায়বোধ করেনি নির্বাচন কমিশন।
বর্তমান জোট সরকারের অনেকে এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন। সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ কোনো এক অশুভ শক্তি নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে।’ তিনি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান। সরকারি দলের শরিকদের আরো অনেকে রাতের বেলায় ভোটগ্রহণের কথা স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশের ভোট কিভাবে প্রহসনে পরিণত হয়েছে; তা কমিশনের প্রকাশিত ফল থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর কমিশন পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশ করেছে। সেই ফলে দেখা যায়, ২১৩টি ভোটকেন্দ্রে ভোট পড়েছে ‘শতভাগ’। কিন্তু ভোটের দিনের প্রকৃত চিত্র ছিল স¤পূর্ণ বিপরীত। প্রধান বিরোধী দল প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের প্রবল বাধার মুখে নির্বাচনের আগেই মাঠ থেকে ছিটকে পড়েছিল। ফলে ভোটের দিন মানুষের বিপুল উৎসাহ দেখা যায়নি নির্বাচন নিয়ে। ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। সাধারণত বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যেও শতভাগ ভোট পড়ে না। এ অবস্থায় ‘শতভাগ ভোট পড়া’র ব্যাপারটি বাংলাদেশে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে আরো দুর্বল করেছে। বাংলাদেশে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের অবস্থা আরো নড়বড়ে।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চা বিশ্ববাসীর জন্য কৌতূহলের কারণ হতে পারে। দেশটি স্বাধীনতার পর ৫০ বছর ধরে গণতন্ত্র চর্চা করছে বলে দাবি করে। জনসংখ্যার দিক দিয়ে দেশটি বিশ্বের অষ্টম। গণতন্ত্র চর্চাকারী দেশের তালিকায় এটি সপ্তম বৃহৎ। গণতন্ত্রের হালচাল নিয়ে গবেষণা চালায় সুইডেন-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ভি-ডেম। অন্য দিকে এ ব্যাপারে আরো বড় পরিসরে কাজ করে আমেরিকান প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউজ। গণতন্ত্র, রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে ফ্রিডম হাউজ। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অনেক কিছু বলার আছে। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণায় বাংলাদেশ নিয়ে খুব একটা কিছু পাওয়া যায় না।
মানবতার যে উচ্চ আশাবাদের ঝিলিক গণতন্ত্র দেখিয়েছে; সেখান থেকে বিশ্বমানবতার এমন পতন কেন? এই প্রশ্নের জবাবে বিশেষজ্ঞ অনেকে বলেছেন, ‘বিশ্বায়ন’। তাদের মতে, বিশ্বায়ন মানুষের মধ্যে বৈষম্য বাড়িয়ে তুলেছে। সম্পদের স্রোত ভয়াবহভাবে একমুখী করেছে। ধনী আরো ধনী হচ্ছে। প্রান্তিক গোষ্ঠী নিঃস্ব আর হীনবল হচ্ছে। এ অবস্থায় জাতীয়তাবাদ ও স্বাদেশিকতার উত্থান ঘটছে। বিশ্বজুড়ে নতুন স্বাদেশিকতা জোরালো হচ্ছে। একে ঠেকানোর মতো কোনো হাতিয়ার সম্ভবত উদার গণতন্ত্রীদের কাছে আপাতত নেই। যারা নিজেদের ‘আমেরিকান’ দাবি করছেন তাদের মত- অভিবাসীরা তাদের সম্পদে ভাগ বসাচ্ছেন। যেখানে তাদের আরো বেশি সম্পদ থাকতে পারত তা আর সম্ভব হচ্ছে না। এখন তারা অভিবাসী ঠেকাতে চাচ্ছেন। সুতরাং ট্রাম্পের ‘কোনো বিকল্প নেই’। একই কারণে ব্রিটিশরা কেটে পড়তে চাচ্ছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে। ‘অভিজাত’ একরোখা ব্রিটিশদের জনপ্রিয় নেতা তাই বরিস জনসন। গণতন্ত্র হয়ে পড়ছে অপ্রাসঙ্গিক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা