মাদকের মহামারিতে আগামী প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে : শিবির সভাপতি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৯ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:২৫
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন বলেছেন, সমাজের সর্বস্তরে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। ধনী-গরীব সবার সন্তানই মাদকে নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে। এমনকি স্কুলের কিশোর-কিশোরী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পর্যন্ত মাদকের ভয়াল থাবায় আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে মাদকের মহামারিতে আগামী প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অবিলম্বে এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে জাতিকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি শুক্রবার কেন্দ্র ঘোষিত স্বাস্থ্য সচেতনতা ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে ছাত্রশিবির গাজীপুর মহানগর শাখার ধুমপান ও মাদকবিরোধী ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো:সেলিম উদ্দিন। এসময় গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিবির সভাপতি বলেন, জাতি গড়ার মুল হাতিয়ার তরুণ সমাজ। আর তরুণ সমাজকে ধ্বংসের মূল হাতিয়ার মাদক। দুঃখজনকভাবে সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সারাদেশে মাদকের জোয়ার বইছে। নীতি নৈতিকতা ভুলে অর্থের লোভে সরকার দলীয় বিভিন্ন পর্যায়ের লোকেরা অনায়াসে মাদকের ব্যবসা করে যাচ্ছে। দেশে মাদক প্রবেশের প্রধান সড়ক কক্সবাজার এলাকার সরকার দলীয় এমপির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সারাদেশে মাদক ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যম তথ্যপ্রমাণ সহকারে প্রচার করেছে। তাছাড়া দেশের মাদকের সাথে সংশ্লিষ্টদের বেশির ভাগই সরকার দলীয় লোক যা প্রতিদিনই গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশবাসী দেখছে। তারাই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদককে সহজলভ্য করে তুলেছে। ছড়িয়ে দিয়েছে দেশের আনাচে কানাচে। জাতিকে আরও লজ্জার সাথে দেখতে হয়েছে যে, অনেক পুলিশ সদস্য মাদক ব্যবসায়ীদের শুধু মদদই দিচ্ছেনা বরং তাদের সাথে যোগসাজশ করে মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে। ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক বহন করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়েছে। ফলে দেশের জনসংখ্যার বিশাল একটি অংশ বিশেষ করে ছাত্র ও যুবসমাজ ক্ষিপ্র গতিতে মাদক সেবনের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। যার প্রভাবে সমাজে চুরি, ছিনতাই, খুন, সন্ত্রাস আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। মাদকের প্রভাবে সন্তান তার মা-বাবাকে পর্যন্ত খুন করছে। মানুষ ঘরে-বাইরে অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। আগামী প্রজন্ম ধ্বংসের মুখে ধাবিত হচ্ছে। সবই ঘটছে প্রশাসনের চোখের সামনে। অথচ সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদিচ্ছা থাকলে অল্প সময়ে দেশ থেকে মাদক নির্মূল সম্ভব। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে মাদক চূড়ান্তভাবে নির্মূলের জন্য কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা। লোক দেখানো কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও মাদক চক্রের মূলে যারা রয়েছে তারা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের এমন ভূমিকা মাদকের প্রসারে সরাসরি মদদ ছাড়া কিছু নয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো:সেলিম উদ্দিন, ছাত্রসমাজ ও অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, এখনই মাদকের বিস্তার রোধ করতে না পারলে সমাজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। তখন কেউই এর ভয়াবহ থাবা থেকে বাঁচতে পারবে না। এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়ার অধিকার কাউকে দেয়া হয়নি। অবিলম্বে মাদকের প্রসার রোধে সরকারী মদদ বন্ধ করতে হবে। চূড়ান্তভাবে মাদক নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ছাত্রসমাজকে মাদকের প্রভাব থেকে দূরে থাকতে বাস্তব জীবনে ধর্মীয় অনুশাসন অনুস্বরণ করতে হবে। কুসঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অভিভাবকদের উচিৎ তাদের সন্তানদের চলাফেরা ও কুসঙ্গ সম্পর্কে সতর্ক দৃষ্টি রাখা। সন্তানদের মাদকের প্রভাব থেকে বাঁচাতে ছোটবেলা থেকেই ধর্মীয় অনুশাসন মানে চলতে অভ্যস্থ করে তোলার কোন বিকল্প নেই। আমরা বিশ্বাস করি সবার সম্মেলিত প্রচেষ্টায় মাদকের কালো থাবা থেকে জাতিকে রক্ষা করা সম্ভব।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, দেশের সর্বস্তরের মানুষ ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। ক্যান্সারের মত বিরল রোগ এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অল্প বয়সেই মানুষ ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে জাতিকে রক্ষার অন্যতম উপায় হলো সবার মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা। ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে ছাত্রশিবির ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে সারাদেশে স্বাস্থ্য সচেতনতা ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে। আমি ছাত্রশিবিরের এই কর্মসূচিতে সকল স্তরের ছাত্রজনতাকে অংশগ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা