২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঐক্যফ্রন্ট ছাড়লেন কাদের সিদ্দিকী

- ছবি : সংগৃহীত

বিশিষ্ট আইনজীবী গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ জোট ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে ভবিষ্যতে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে যেকোন ধরণের উদ্যোগ বা জোট গঠনের সাথে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ একযোগে কাজ করবে বলে জানিয়েছে জোটটি।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দলীয় অবস্থান ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য তুলে ধরা হয়।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের যুগ্ম-সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী। উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, হাবিবুর রহমান তালুকদার, দেলোয়ার হোসেন, নাসরিন সিদ্দিকী, কুড়ি সিদ্দিকী প্রমুখ।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠের আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমসহ বলেন, সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করলে এখন অনেকের কাছে মনে হয় কোন কালে জাতীয় ঐকফ্রন্ট নামে বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক জোট বা ফ্রন্ট গঠন হয়নি। তবে দেশের জনগণের প্রকৃত পাহারাদার হিসাবে গঠিত কৃষক শ্রমকি জনতা লীগ নিষ্ক্রিয় বসে থাকবে না।

তিনি বলেন, দেশে একটি সার্বিক ঐক্যের প্রয়োজন। সবাই মিলে ইস্পাত কঠিন সুদৃঢ় একটি জনগণের ঐক প্রতিষ্টিত না হলে দেশে স্বাভাবিক রাজনীতি, অর্থনীতি ও সাংস্কৃতিক সুবাতাস বইবে না। সমমনা গণতন্ত্রকামী সকল দল, মত ও গোষ্ঠীর সাথে ব্যাপক আলাপ আলোচনা মাধ্যমে একটি সার্বিক জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে গণআন্দোলনের সূচনা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

এদিকে জোট ছাড়ার ব্যাপারে লিখিত বক্তব্যে প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সার্বিক জাতীয় ঐক্যের মানসে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট্রে শরিক হয়েছিল, বিএনপি’র নেতৃত্বে নয়। কিন্তু ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব দানে অনীহা ঐকফ্রন্টকে কখনো সুদৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে দেয়নি।

তাছাড়া ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়েছিল। মূল নেতৃত্ব ড. কামাল হোসেনের। এখানে কোন একক দলের নেতৃত্ব ছিল না। কিন্তু মূল নেতাকে ফ্রন্ট গঠনের পর থেকেই তেমন সক্রিয় থাকতে দেখা যায়নি। প্রাথী বাছাই এবং মনোনয়ন দেয়ার কথা ঐক্যফ্রন্টগতভাবে এবং তা পল্টনের ঐক্যফ্রন্ট অফিস থেকে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ও কর্তৃত্বে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মনোনয়ন যাচাই বাছাই হয়েছে বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের গুলশানের দপ্তর থেকে বিএনপির কর্তৃত্ব ও নেতৃত্বে। যেটা ছিল ঐক্যফ্রন্ট গঠনের প্রাথমিক নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

ঐক্যফ্রন্টের কোনমতেই জামায়াতের সাথে সংশ্লিস্ট থাকা বা হবার কথা ছিল না। কিন্তু স্বনামে-বেনামে যেভাবেই হোক ২০-২৫ জন জামায়াত নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। জাতীয় ঐক্যের সাথে ঐক্যফ্রন্ট ধানের শীষকে সংগ্রামের প্রতীক হিসাবে গ্রহণ করেছিল।

অপরদিকে নির্বাচন পরবর্তী এ সাত মাস জাতীয় ঐকফ্রন্টের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আনুষ্ঠানিকভাবে মতিঝিলে প্রবীণ নেতার অফিসে ঐক্যফ্রন্টের একটি অসমাপ্ত বৈঠক ছাড়া কখনো কোন নিদিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে মিটিং হয়নি। তাতে মনে হয় কোনকালে কখনো জাতীয় ঐকফ্রন্ট নামে বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক জোট বা ফ্রন্ট বা ঐক্য হয়নি।

এঅবস্থায় দেশের জনগণের প্রকৃত পাহারাদার হিসাবে গঠিত কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নিষ্ক্রিয় বসে থাকতে পারে না। তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্থিত্ব বা ঠিকানা খোঁজার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে জনগণের সকল সমস্যায় তাদের পাশে থাকার অঙ্গিকারে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নতুন উদ্যমে পথ চলা শুরু করছে।


আরো সংবাদ



premium cement