১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঢাকায় দাম বেড়েছে চাল মুরগি সবজির

বাজার - সংগৃহীত

বেশ কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর ঢাকার বাজারে চালের দাম বেড়েছে। কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, সরকারিভাবে বাড়তি দামে চাল কিনতে শুরু করায় বাজার চড়া হয়ে উঠেছে। দাম বেড়েছে ডিম-মুরগিরও। এজন্য কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, শীতের কারণে উৎপাদন ঘাটতির কথা। আর সবজির দাম বেড়েছে সরবরাহ ঘাটতির কারণে। বেড়েছে আটার দামও। কারণ হিসেবে বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধির কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানী ঢাকার কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে বেশকিছু নতুন সবজি এসেছে। কিছুদিন বিরতি দিয়ে আসা চিচিঙ্গা, করল্লা, ঝিঙ্গা, ঢেঁড়শ, ধুন্দল প্রভৃতির দাম অত্যধিক। ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি। কারণ হিসেবে বিক্রেতারারা জানান, শীতকালীন সবজি এখন পুরনো হয়ে আসছে। স্বাভাবিক কারণেই নতুন সবজির প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ বেড়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেশি। তবে পুরনো হয়ে যাওয়া শীতকালীন সবজির দাম অপেক্ষাকৃত কম।

বাজারে গতকাল প্রতি কেজি আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পুরনো আলু ২০ থেকে ২২, শিম ৩০ থেকে ৫০, টমেটো ৩০ থেকে ৪০, শালগম ২০ থেকে ৩০, মুলা ও গাজার ২৫ থেকে ৩০, শসা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। প্রতি পিস লাউ ৩০ থেকে ৫০ টাকা, ফুলকপি ২০ থেকে ৪০, পাতাকপি ২০ থেকে ৩০, মিষ্টি কুমড়া ৫০ থেকে ৭০, কাঁচা পেঁপের কেজি ২৫ থেকে ৩০, কলার হালি ২৪ থেকে ২৮ এবং লেবুর হালি ২৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।

চালের বাজার ঘুরে জানা যায়, গত কয়েক দিনে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা জানান, গত কয়েক মাস চালের দাম স্বাভাবিক ছিল। এখন কিছুটা বেড়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলেন, প্রতি বছরই আমন মওসুম এলে চালের দাম কিছুটা বাড়ে। তা ছাড়া সরকারিভাবে চাল সংগ্রহ শুরু হওয়ায় মিলমালিকেরা চাল সরবরাহে গড়িমশি করছেন। বাড়তি দামেও চাল পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারিভাবে এখন ৩৬ টাকা কেজি দরে মোটা চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। এজন্যে মিলমালিকেরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

আড়তদারেরা জানান, ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চালের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। মোটা চালের পাইকারি দর উঠেছে কেজিপ্রতি ৩৫ টাকা। অন্য দিকে মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ৩৮ থেকে ৪২ টাকায়। এ ছাড়া ভালো মানের সরু মিনিকেট চাল পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ৫২ থেকে ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজার ও মহল্লার দোকানগুলোতে চাল বিক্রি হচ্ছে কেজিতে আরো দুই থেকে চার টাকা বেশি দামে। খুচরা পর্যায়ে মোটা চাল ৩৬ থেকে ৩৮, মাঝারি মানের চাল ৪৪ থেকে ৪৫ এবং সরু চাল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা কেজিদরে বিক্রি করতে দেখা যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্ববাজারে গমের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারেও আটা-ময়দার দাম বেড়েছে। প্যাকেটজাত আটা ৩৩ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করেছে বিভিন্ন কোম্পানি। খোলা আটার দাম ২৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা। কেজিপ্রতি ২ টাকা করে বেড়েছে ময়দার দামও। দুই কেজির এক প্যাকেট ময়দার দাম এখন ৯২ টাকা। বিক্রেতাদের অনুমান, দেশে এ বছর গমের উৎপাদন কম হওয়ায় আটা-ময়দার ক্ষেত্রে বিদেশনির্ভরতা বেড়েছে।

এ দিকে গত কয়েক দিন থেকে বাড়তে থাকা ডিম-মুরগির দাম নতুন করে না বাড়লেও কমেনি। পাইকারি বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ৯৮ টাকা এবং খুচরা বাজারে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ডিমের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। উৎপাদনও কিছুটা কমেছে। এক সপ্তাহ আগে এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকায়। এখন সেই ডিম ১০০ টাকা ডজন বিক্রি করতে হচ্ছে। 
মুরগি বিক্রেতারা জানান, সারা দেশে এখন অনুষ্ঠান ও পিকনিকের মওসুম চলছে। অথচ শীতের তীব্রতায় মুরগির উৎপাদন হচ্ছে তুলনামূলক কম। ফলে দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। খুচরা বাজারে ১১০ টাকার ব্রয়লারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা। এ ছাড়া পাকিস্তানি জাতের কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা হালিদরে। দেশী মুরগির হালি ১৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা। গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিদরে। খাসির গোশতের কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement