সৈয়দপুর বিমানবন্দর নিয়ে আগ্রহী নেপাল : বাণিজ্যমন্ত্রী
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:০৮
নেপালের সাথে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষরের জন্য দ্রুত কাজ চলছে বলে সোমবার জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ‘নেপাল বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। আমরা উভয় দেশ এফটিএ স্বাক্ষরের জন্য একমত হয়েছি। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে।’
বাংলাদেশ নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা প্রদান করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, উভয় দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করার জন্য সড়ক, নৌ এবং আকাশ পথ চালু করার বিষয়ে কাজ চলছে।
‘নেপাল সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ চিন্তা ভাবনা করছে,’ বলেন মন্ত্রী। সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশে সফররত নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদ্বীপ কুমার গায়ওয়ালীর মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে নেপালের। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ নেপালে ৩৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ১৮ দশমিক ১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাংলাদেশ এখন পাটজাত পণ্য, ব্যাটারি, তৈরি পোশাক, টয়লেট্রিজ পণ্য, ওষুধসহ বেশ কিছু পণ্য নেপালে রপ্তানি করছে। উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। এফটিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে এ বাণিজ্য বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে মন্ত্রী মনে করেন।
টিপু মুনশি আরও বলেন, নেপালের সাথে বাণিজ্যে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে উভয় দেশের বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। আগামী ৩ ও ৪ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এফটিএ স্বাক্ষর ও উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলেও জানানো হয়।
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নেপাল বাংলাদেশকে খুবই গুরুত্ব দেয়। উভয় দেশের মানুষ ও জীবনযাত্রার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, নেপাল তারপরই অবস্থান করছে। বাংলাদেশের সাথে নেপালের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং পর্যটক বিনিময়ের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা উভয় দেশ এ সুযোগ ও সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে চাই। নেপাল ভারতের সহযোগিতায় হাইড্রো পাওয়ার উৎপাদন করছে, যা বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা প্রদান করেছে, এজন্য নেপাল বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল (বিবিআইএন) প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট সকল দেশ এবং দেশের মানুষ উপকৃত হবেন।
বাংলাদেশের সাথে নেপালের বাণিজ্য বৃদ্ধির টেকনিক্যাল বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব দিয়ে নেপাল কাজ করছে জানিয়ে প্রদ্বীপ কুমার গায়ওয়ালী বলেন, এফটিএ স্বাক্ষরিত হলে উভয় দেশের মধ্যে নতুন অর্থনৈতিক যুগের সূচনা হবে। আসন্ন সচিব পর্যায়ের বৈঠকে উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান (সচিব) ফাতেমা ইয়াসমিন, নেপালের পররাষ্ট্র সচিব সংকর দাস বৈরাগী, ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বানশিধর মিশ্র, নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ইয়াগা বাহাদুর হামালসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : ইউএনবি।