খুলনায় সহপাঠীকে ধর্ষণের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র গ্রেফতার
- খুলনা ব্যুরো
- ১৬ আগস্ট ২০১৯, ১৭:২৩
খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবির এক ছাত্রীকে (২০) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের নাম শিঞ্জন রায় (২৫)। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ নগরীর বয়রা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত শিঞ্জন রায়ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সে খুলনার কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়ের ছেলে।
এদিকে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গেছে। সে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা সংলগ্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে সে পড়াশুনা করতো। দীর্ঘ এক বছরের সম্পর্ক থাকলেও শিঞ্জন তাকে বিয়ে না করে গত বুধবার অন্য মেয়েকে বিয়ে করায় ওই ছাত্রী তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ আনেন।
এদিকে শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়।
ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী বলেন, নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবিতে তিনি ও শিঞ্জন রায় একসঙ্গে পড়াশুনা করেন। এক বছর আগে শিঞ্জন রায় তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এরপর বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তার ভাড়া বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। সে বর্তমানে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এদিকে কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়ের ছেলে শিঞ্জন রায়কে অন্য মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার খবরে ওই ছাত্রী বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে নগরীর মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার ১৬নং রোডে গিয়ে শিঞ্জন রায়ের দেখা পায়। এসময় তার বিয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে সে তাকে সেখান থেকে জোর করে ইজিবাইকে তুলে দিতে গেলে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। এ খবর পুলিশের কাছে পৌঁছালে পুলিশ তাদের দু’জনকেই সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় নিয়ে আসে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মোঃ মমতাজুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত উভয়পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ কারণে ওই ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য খুমেক হাসপাতালের ওসিসিতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার মেয়েটি শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্ত শিঞ্জন রায়কে আসামি করে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর দক্ষিণ টুটপাড়া মহিরবাড়ি খালপাড় এলাকায় সাত বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার শিশুটির শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ধর্ষক পলাতক রয়েছে।
ভূক্তভোগী শিশুটির পরিবার জানায়, শুক্রবার সকালে শিশুটি অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে বাড়ি থেকে বের হয়। এসময় জনৈক যুবক ফুসলিয়ে তাকে পার্শ্ববর্তী একটি নির্জন বাড়ির সিঁড়ির নিচে নিয়ে ধর্ষণ করে। রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটি পরিবারের সদস্যদের ঘটনাটি জানায়। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। শিশুটি তার পরিবারকে জানিয়েছে, সে ধর্ষকের নাম জানে না, তবে দেখলে চিনবে।
খুমেক হাসপাতালে শিশুটির মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমাদের বাসার পাশেই আমার খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল আজ শুক্রবার। সকালে মেয়েকে ১৫-২০ মিনিট পাওয়া না যাওয়ায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। একপর্যায়ে আমাদের বাড়ি থেকে একটি বাড়ি পরে দোতলা বাড়ির সিঁড়ির নিচে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
চিকিৎসকরা জানান, শিশুটির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ কারণে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এহসান শাহ বলেন, ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (খুমেক) ভর্তি রয়েছে। ধর্ষককে গ্রেফতার করতে পুলিশের বিশেষ টিম অভিযান চালাচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা