নানা আয়োজনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪০ বছর পূর্তি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আলোকিত মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। গতকাল সকাল ৯টায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে বর্ণিল র্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের যাত্রা। র্যালিতে দেশবরেণ্য ব্যক্তি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বিভিন্ন অংশের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থী ও শুভাকাক্সক্ষীরা অংশগ্রহণ করেন। এরপর সকাল ১০টা থেকে বিশ^সাহিত্য কেন্দ্র ভবনের দ্বিতীয় তলার মঞ্চে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশের প্রথিতযশা শিল্পীদের কণ্ঠের মাধুরীতে মুখরিত ছিল মিলনমেলা। ছিল কথক, মনিপুরী, ভরতনাট্যম ও গৌড়িও নৃত্যের ছান্দিক পরিবেশনা। সংগঠনের সদস্যরাও আবৃত্তি, নাচ ও গান পরিবেশন করেন।
নিচতলা ও ছাদে ছিল মুখরোচক খাবারের অবারিত আয়োজন। বাতাসা, শিঙ্গাড়া, জিলাপি, খই, পিঠার ঘরোয়া স্বাদে জমে উঠেছিল সদস্যদের আড্ডা। উৎসব আয়োজন উপলক্ষে পুরনো ভবন সাজানো হয়েছিল হলুদ-লালের অপরূপ মাধুরীতে। দেয়ালে দেয়ালে রঙিন আলপনা। উদযাপন চলার ফাঁকে ফাঁকেই দেশের প্রথিতযশা ব্যক্তিরা স্মৃতিচারণ করতে থাকেন ৪০ বছরের। স্মৃতিচারণ করেন অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাংবাদিক মাহফুজ আনামসহ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের গুণীজনেরা।
১৯৭৮ সালে ঢাকা কলেজের পেছনে শিক্ষা সম্প্র্রসারণকেন্দ্রে (বর্তমানে নায়েম) ছোট মিলনায়তনে ১৫ জনের পাঠচক্র দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের। সে সময় ১০ জন তরুণের জন্য দশটি বই কিনতে একজনের দান করা ৩৪ টাকা দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়। চার দশকের এই পথ চলায় দেশব্যাপী ৯০ লাখ পাঠকের হাতে বই তুলে দিয়েছে বিশ^সাহিত্য কেন্দ্র। দুই হাজার ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনে কেন্দ্রের কার্যক্রম চলছে। নিয়মিত পাঠকসংখ্যা দুই লাখ ১৭ হাজার। জেলা ছাড়িয়ে পাঠাভ্যাস উন্নয়নকার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে ২৫০টি উপজেলায়। শুভাকাক্সক্ষী ও সদস্যদের সহযোগিতায় বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পাশাপাশি সরকারের কিছু সহায়তা মেলে।
প্রথমে ইন্দিরা রোডে একটি ভাড়া বাসায় কার্যক্রম চলতে থাকে। আশির দশকে বর্তমান স্থানে চলে আসে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। পরিত্যক্ত এই বাড়িটি সরকার বরাদ্দ দেয়। পরে সেখানে বহুতল ভবন গড়ে তোলা হয়। ১৯৮৪ সালে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই পড়ানোর কর্মসূচি শুরু হয়। ধীরে ধীরে আরো যুক্ত হয় আলোর স্কুল এবং পাঠকের দরজায় বই পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার, যা বিকশিত করছে দেশের লাখো তরুণ-কিশোর মনন। এর মাধ্যমে তারা তাদের ‘স্বপ্নের সমান’ বড় হচ্ছে।
শুধু বই পৌঁছে দিয়ে নয়, নিজেরাই বিশ^ ও দেশের সেরা সাহিত্যগুলো একত্র করে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করে দেশের পাঠকসমাজের কাছে তুলে দিচ্ছে বিশ^সাহিত্য কেন্দ্র। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ লিখেছেনÑ ‘অনেক আলোকিত মানুষ চাই আমাদের, চাই অনেক সম্পন্ন মানুষ, না হলে ... এই জাতিকে শক্তি ও সম্ভাবনার দরজায় উত্তীর্ণ করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব হবে।’ তাই সবার প্রত্যাশা আলোর এই মিছিল আরো অনন্তকাল ধরে আলোকিত করে যাক তরুণ-কিশোরদের। বাংলাদেশ তথা বিশ^কে নিয়ে যাক সাম্য ও আলোর প্রান্তরে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা