মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রিগ্যানের মাথায় ‘আইএস লোগো’ টুপি : তদন্ত কমিটির কাজ শুরু
- মনির হোসেন
- ২৯ নভেম্বর ২০১৯, ০৬:১৭, আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯, ০৬:৪১
রাজধানীর গুলশানে হোলে আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো: রাকিবুল হাসান রিগ্যানের মাথায় ‘আইএস লোগো’সংবলিত টুপি কিভাবে এলো, কারা তাকে এই টুপি দিলো তা নিয়ে কারাগার, আদালতপাড়াসহ সর্বমহলে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
আলোচিত টুপি রহস্য উদঘাটনে অতিরিক্ত আইজি প্রিজন্স কর্নেল আবরারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি অনুসন্ধান শুরু করে। তারা ঘটনাস্থল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও হোলে আর্টিজান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের সাথে কথা বলেন। এ সময় কারাগেটের সার্ভার থেকে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে নেয়ার সময়কার ভিডিও ফুটেজের কিছু আলামত সংগ্রহ করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আইজি প্রিজন্স এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, অতিরিক্ত আইজি প্রিজন্স কর্নেল আবরারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। তারা পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দু’দিনই তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না বলে জানান তিনি। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হচ্ছেন : ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স টিপু সুলতান এবং এআইজি আমিরুল ইসলাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার কারা অধিদফতর-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, অতিরিক্ত আইজি প্রিজন্সের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের কমিটি বুধবার বিকেল ৫টা ২৩ মিনিটে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকয় যায়। এ সময় তারা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার, ফাঁসির আসামিদের সাথে কারা অভ্যন্তরে গিয়ে কথা বলেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় কারাগার এলাকায় অবস্থান করে সার্বিক চিত্র নিয়ে তারা রাত ৯টায় বেরিয়ে যান।
জানা গেছে, তদন্ত কমিটির সদস্যরা সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল কবীর চৌধুরীর সাথে এ বিষয়ে প্রথমে তার দফতরে কথা বলেন। সেখানে আলোচনা শেষে তারা কারা অভ্যন্তরে যান। উগ্রবাদীদের সেল হিসেবে পরিচিত টাওয়ার সেলে গিয়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিগ্যানসহ অন্যদের টুপির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা তাদের বক্তব্য গ্রহণ করেন। এর আগে তারা কারাগারের গেটে এবং বাইরের চার পাশে লাগানো একাধিক সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেন।
কারাগার-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নয়া দিগন্তকে জানিয়েছে, আসামিদের যখন আদালতে পাঠানোর উদ্দেশ্যে সেল থেকে কারাগারের প্রধান গেটে আনা হয়েছিল তখন কারাগারের গেটে প্রবেশে হাতের ডান পাশে বসানো স্ক্যানার মেশিনে তাদের প্রত্যেককে ঢুকিয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়েছিল। ওই স্ক্যানার মেশিনে দাঁড় করানো হলে শরীরের অঙ্গপ্রতঙ্গের কোথায় কী আছে তার সব কিছু দেখা যায়। সেখানে নারীদের নেয়া হয় না জানিয়ে ওই সূত্রটি জানায়, যেসব আসামি সন্দেহজনক তাদেরকেই স্ক্যানার মেশিনে ঢুকিয়ে তল্লাশি করার নিয়ম। এক প্রশ্নের উত্তরে ওই সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি কারাগারে এসে প্রথমে সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল কবীরের কক্ষে গিয়ে টুপির বিষয়ে কথা বলেন।
এরপর তারা আসামিদের সাথে কথা বলতে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত ৯টায় তারা বেরিয়ে যান। যাওয়ার সময় তারা কারাগারের গেটে লাগানো ৪, ৫, ৬, ৭ নম্বর সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ সার্ভার থেকে সংগ্রহ করেন। এখন সেগুলো তারা পর্যালোচনা করছেন।