২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রোজা যেভাবে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর সুস্থ রাখে

রোজা যেভাবে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর সুস্থ রাখে - ছবি : সংগ্রহ

সারা দিন খাবার সরবরাহ না করলে আমাদের দেহ লিভার ও মাংসপেশির সঞ্চিত গ্লুকোজ ব্যবহার করতে থাকে শক্তির জোগান দিতে। রোজা শুরুর প্রথম দুই দিন খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায় শরীর। খাবার গ্রহণের আট ঘণ্টার মধ্যে ইনটেস্টাইন (পাকস্থলীর নিচ থেকে পায়ুপথ পর্যন্ত অংশ) খাবারের পুষ্টি শোষণ করে নেয়। এরপরই আমাদের শরীর লিভার ও পেশিতে সঞ্চিত গ্লুকোজ ব্যবহার করতে থাকে। গ্লুকোজের সঞ্চয় শেষ হওয়ার পর শক্তি উৎপাদনের জন্য আমাদের শরীর সঞ্চিত চর্বি ব্যবহার করতে থাকে। 

শরীর চর্বি পোড়াতে শুরু করলেই ওজন কমতে শুরু করে, কলেস্টেরল হ্রাস পায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমতে থাকে। কিন্তু সাবধান হওয়া লাগবে ব্লাড সুগার কমে যেন হাইপো হয়ে না যায়। ব্লাড সুগার কমে গেলে শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং চলার শক্তি হারিয়ে যেতে পারে। 

রমজানের ৩ থেকে ৭ দিন
শরীর রোজায় অভ্যস্ত হয়ে গেলে তিন থেকে সাত দিনের মধ্যে চর্বি ভেঙে যায় এবং তা রক্তে জমা হয় ‘সুগার’ হিসেবে। এ কারণে রাতে অথবা সাহরিতে যুক্তিসঙ্গত অনুপাতে শক্তি জোগায় এমন খাদ্য খাওয়া উচিত। যেসব খাবারে কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি থাকে সেগুলো খাওয়া উচিত। খনিজলবণ, আমিষ, পানি এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খাওয়া তখন খুবই গুরুত্বপুর্ণ। 

রোজার ৮ থেকে ১৫ দিন
ক্যামব্রিজের এডিনব্রুক হাসপাতালের অ্যানেসথেশিয়া ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের কনসালট্যান্ট ড. রাজিন মাহরুফ বলেন, আপনি রোজার ৮ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখতে পাবেন। তিনি বলেন, ‘দৈনন্দিন জীবনে আমরা প্রায় অনেক বেশি ক্যালরি গ্রহণ করে থাকি। এই বেশি ক্যালরি শোষণে ব্যয় করার কারণে শরীর অন্য কোনো কাজ যেমন স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুর্বল কোষগুলো মেরামতের কাজ করতে পারে না। এই মেরামতের কাজটি হয় রমজান মাসের রোজায়। রোজায় আমাদের পাকস্থলী দিনের বেলা খাবার না পাওয়ায় শরীর অন্যান্য কাজে মনোযোগ দিতে পারে এবং প্রয়োজনীয় (দুর্বল কোষ) মেরামতের কাজ শুরু করে দেয়। ড. মাহরুজ বলেন, রোজা রোগ প্রতিরোধ করতে, সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। 

১৬ রমজান থেকে শেষ দিন 
রোজার অর্ধেক পেরোনোর পর থেকেই শরীর রোজায় একেবারে অভ্যস্ত হয়ে যায়। কোলন, লিভার, কিডনি এবং ত্বক নিজেদের মধ্যে ডিটেক্সিফিকেশনের (বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়ার কাজ) কাজ শুরু করে। ড. মাহরুজ বলেন, ‘শরীরের এই অঙ্গগুলোর কার্যকারিতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে আসে। স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেয়। অনাহারে থাকলেও শরীর প্রোটিনকে কখনো এনার্জি (শক্তি) তৈরিতে ব্যবহার করে না এবং বরং পেশিকে শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করে না। 

ড. মাহরুজ বলেন, রোজা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তিনি বলেন, এটা নির্ভর করে আমরা কী খাচ্ছি এবং কখন খাচ্ছি। এটা শুধু এক মাস কালই উপযুক্ত এবং এর বেশি চালিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। ওজন হ্রাসের জন্য অনরত দিনের পর দিন রোজা রাখা বা অনাহারে থাকা ভালো নয়। কারণ শরীর এক সময় চর্বিকে শক্তিতে রূপান্তর করা বন্ধ করে দেয় এবং এর পরিবর্তে পেশিকে ব্যবহার করে। ড. মাহরুজ বলেন, এটা স্বাস্থ্যের জন্য কল্যাণকর নয়। তিনি সুপারিশ করেন এক মাস রোজা পালনের পর সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন পর পর পর্যাপ্ত খাবার খেয়ে রোজা রাখা হলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকার বয়ে আনবে। কেবল রমজানের এক মাস যথাযথভাবে রোজার অভ্যাস করা হলে ওজন হ্রাস করে শরীর সুস্থ রাখা সম্ভব মূল্যবান পেশি কোষ না পুড়িয়েই।


আরো সংবাদ



premium cement
গফরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজছাত্র নিহত রাজনীতিকে দু’ভাগ করা হয়েছে : জি এম কাদের ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে জামায়াত : ডা. শফিকুর রহমান কুর্মিটোলা হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া নবজাতক উদ্ধার মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোর আঘাতে মৃত বেড়ে ৯৪ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব : সাকি আ’লীগ নেতাদের নিয়ে ’জাগোনারীর’ সমাবেশ, আমন্ত্রণে নেই বিএনপি-জামায়াত জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব হলেন সরওয়ার আলম প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক পরিচালকের বিদায়ী সাক্ষাৎ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

সকল