২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সোনার অলঙ্কার : কোন দেশের লোক কত নম্বরে?

সোনার অলঙ্কার : কোন দেশের লোক কত নম্বরে? - ছবি : সংগৃহীত

সোনার গয়না কেনা যেমন একটা লাভজনক অভ্যাস, তেমনই কোনো কোনো ক্ষেত্রে হয়তো এটা নেশাও। উপহারেও সোনার গয়না দিতে পছন্দ করেন অনেকে। শুধু সোনার গয়না কেনার জন্য উৎসবও হয় কোথাও কোথাও। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সোনার গয়না কেনে বেশ কয়েকটি দেশ। জেনে নেয়া যাক সেগুলো সম্পর্কে।

চীন : সোনার গয়না কেনাকাটিতে শীর্ষে রয়েছে চীন। মোট ৬১২.৫ মেট্রিক টন সোনার গয়না রয়েছে এই দেশের নাগরিকদের কাছে। ২০২৫ সালে গ্লোবাল লাক্সারি মার্কেটের প্রায় ৪৪ শতাংশই চীনের দখলে থাকার কথা, বলছে মার্কিন ম্যানেজমেন্ট সংস্থা ম্যাককিনসে অ্যান্ড কোম্পানি।

ভারত : ৪৬৩.২ মেট্রিক টন সোনার গয়না রয়েছে ভারতে। দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন মন্দিরে দেবতাকে সোনা দান করা হয়, দীপাবলি উৎসবের সময়ে ধনতেরাসেও রয়েছে সোনার গয়না কেনার চল। বিবাহের অনুষ্ঠানেও সোনার গয়না পরার রীতি রয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র : এই রাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যেও রয়েছে গয়নার বিপুল চাহিদা। মোট ১৩৮.২ মেট্রিক টন সোনার গয়না রয়েছে আমেরিকার নাগরিকদের কাছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত : শুধুমাত্র দুবাইয়ে ৩০০টি সোনার গয়নার দোকান রয়েছে। ৪৬.২ মেট্রিক টন সোনার গয়না রয়েছে আরব আমিরশাহির নাগরিকদের কাছে। তবে চাহিদা বেড়ে চলেছে প্রতি মুহূর্তে, এমনটাই বলছে ইতালির ট্রেড কমিশনের সমীক্ষা।

ইরান : ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল জানিয়েছে, ইরানে সোনা কেনার চাহিদা শেষ চার বছরে ২৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। মোট ৩৯.৭ মেট্রিক টন গয়না রয়েছে ইরানের নাগরিকদের কাছে।


তুরস্ক : ৩৯.৭ মেট্রিক টন সোনা রয়েছে তুরস্কের নাগরিকেদর কাছেও। ১৯৯৫ সালে এই দেশে মেটাল মার্কেট তৈরি হওয়ার পর চাহিদা তৈরি হয় নাগরিকদের মধ্যে। বেশিরভাগ সোনাই গচ্ছিত আছে দেশের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে।

সৌদি আরব : ৩৮.১ মেট্রিক টন সোনার গয়না রয়েছে সৌদির নাগরিকদের কাছে। সোনার বাঁটের তুলনায় গয়নাই তাদের বেশি পছন্দ।

ইন্দোনেশিয়া : পৃথিবীর অন্যতম বড় সোনার খনি থাকবে, আর সোনার গয়না কেনার ইচ্ছা থাকবে না, তা কখনো হয়? ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকদের কাছেও রয়েছে ৩৪.২ মেট্রিক টন সোনা।

রাশিয়া : গত কয়েক বছরে রুশ সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে হলুদ ধাতুটির তৈরি গয়না কম কিছু জমা পড়েনি। ২০১৬ সালেই ৩০.২ মেট্রিক টন সোনা ছিল রুশ নাগরিকদের কাছে, এমনটাই জানানো হয়েছিল ব্যাঙ্কের তরফে।

মিসর: ১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের প্যাপিরাসের তৈরি মানচিত্রেও রয়েছে সোনার গয়না মজুত থাকার কথা। মিসরের নাগরিকদের কাছে সব মিলিয়ে ২৭.৫ মেট্রিক টন সোনা রয়েছে।

কোন দেশে আছে কত সোনা মজুত

বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সোনার দামের ওঠাপড়ার সম্পর্ক খুবই গভীর। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের মতে, বিশ্বের বেশির ভাগ সোনা কয়েকটি দেশের হাতে গচ্ছিত। সোনার বার, গয়না সবমিলেই ধার্য করা হয়েছে এই পরিমাণ। এই তালিকায় ভারত কত নম্বরে জানেন?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে এক নম্বরে। ৮,১৩৩.৫ টন সোনা গচ্ছিত রয়েছে এই দেশে। মূলত সোনার বারের আকারেই রয়েছে এই সোনা।


জার্মানি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। প্রায় ৩,৩৭৩ টন সোনা রয়েছে এই দেশে। কোল্ড ওয়ারের সময় এই দেশের বেশ কিছু সোনা তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের দখলে চলে যাওয়ায় সোনার পরিমাণ খানিকটা কমে গিয়েছিল।

আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের কাছে সবমিলে প্রায় ২,৮১৪ টন সোনা মজুত রয়েছে। পারস্পরিক সহযোগিতার উদ্দেশ্য নিয়েই ১৮৯টি দেশ মিলে এই সংস্থা তৈরি হয়েছিল।

ইতালির দখলে রয়েছে প্রায় ২,৪৫১ টন সোনা। তালিকায় তারা চার নম্বরে।

ফ্রান্সের দখলে রয়েছে মোট ২৪৩৫.৯ টন সোনা। এর মধ্যে বেশির ভাগটাই ১৯৫০-৬০ সালের মধ্যে ফ্রান্সের আওতায় আসে। ফ্রান্স রয়েছে পঞ্চম স্থানে।

চীনের কাছে রয়েছে প্রায় ১,৮৪২.৬ টন সোনা। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সোনা উৎপাদনকারী দেশ হল চীন। তারা রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। এ দেশের মধ্যবিত্তদের কাছে সোনার চাহিদা বিপুল।

রাশিয়ার কাছে প্রায় ১৭৭৮.৯ টন সোনা গচ্ছিত রয়েছে। তারা সপ্তম স্থানে রয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের দখলে রয়েছে প্রায় ১,০৪০ টন সোনা। তারা রয়েছে অষ্টম স্থানে।

জাপানের কাছে রয়েছে মোট ৭৬৫.২ টন সোনা। তালিকায় জাপানিরা ৯ নম্বরে।

নেদারল্যান্ডসের দখলে রয়েছে মোট ৬১২.৫ টন সোনা।

একাদশ স্থানে রয়েছে ভারত। প্রায় ৫৫৭.৮ টন সোনা রয়েছে ভারতের দখলে। মূলত গয়নার আকারেই সোনা রয়েছে ভারতের কাছে।

ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের কাছে রয়েছে ৫০৪.৮ টন সোনা। যা ভারতের মোট সোনার পরিমাণের চেয়ে কম! 
তুরস্কের কাছে ৪৯৫.৬ টন, তাইওয়ানের কাছে ৪২৩.৬ টন, সৌদি আরবের কাছে রয়েছে ৩২২.৯ টন সোনা।


আরো সংবাদ



premium cement