০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ জিলহজ ১৪৪৫
`

বিতর্কে দুর্বল বাইডেন কারণ দেখালেন ভ্রমণ ক্লান্তির

প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের দৃশ্য - ছবি : বিবিসি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ভ্রমণজনিত ক্লান্তিকেই দায়ী করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, নির্বাচনী বিতর্কের আগে বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েকটি ভ্রমণের কারণে তিনি ক্লান্ত ছিলেন। এ কারণে তাকে ‘খুব বেশি স্মার্ট’ দেখা যায়নি।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার কর্মকর্তাদের শুনিনি...এবং এরপর মঞ্চেই প্রায় ঘুমিয়ে পড়ছিলাম।’

৮১ বছর বয়সী বাইডেন তার শেষ ভ্রমণ শেষ করেছিলেন গত ১৫ জুন, যা ২৭ জুনের অন্তত দুই সপ্তাহ আগে।

বাইডেনের মন্তব্য এমন সময় এলো, যখন তার দলের অভ্যন্তরেই নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এবং টেক্সাসের একজন ডেমোক্র্যাটিক দলীয় কংগ্রেসম্যান তাকে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছেন।

লয়েড ডগেট মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমি আশাবাদী তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বেদনাদায়ক ও কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।’

প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে বৃহস্পতিবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বিতর্কের সময় কিছু ক্ষেত্রে জবাব দিতে সংগ্রাম করতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভার্জিনিয়ায় একটি ব্যক্তিগত তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘এটা কোনো অজুহাত নয়, তবে এটি একটি ব্যাখ্যা।’

তিনি তার পারফরমেন্সের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বলেন, তার পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য এটি সহায়ক নয়।

বাইডেন গত মাসে দুই সপ্তাহে ইউরোপে দু’টি আলাদা ভ্রমণে গিয়েছিলেন।

ইতালি থেকে রাতভর ভ্রমণ করে ফিরে এসে ১৫ জুন তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাথে একটি তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ওই দিনই তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে ফিরে আসেন। এর আগে হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, বিতর্কের দিন বাইডেন ঠান্ডায় আক্রান্ত ছিলেন।

তবে মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট নিজে তার কোনো অসুস্থতার কথা বলেননি। হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিতর্কের সময় তিনি ঠান্ডার কোনো ওষুধ সেবন করেননি।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিতর্কের প্রস্তুতি নিতে বাইডেন ক্যাম্প ডেভিডেও ছয় দিন কাটিয়েছেন। এটি ওয়াশিংটন ডিসির বাইরে প্রেসিডেন্টের অবকাশকেন্দ্র।

বাইডেনের শিডিউল বা দৈনিক কর্মসূচির সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, প্রেসিডেন্টের দিন শুরু হয় বেলা ১১টায় এবং প্রতিদিন ঘুমের জন্য সময় পান।

বিতর্কে পিছিয়ে পড়াকে কেন্দ্র করে জো বাইডেনের নিজ দলের মধ্যেই উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে
পত্রিকাটি আরো বলেছে যে তিনি ভ্রমণের কারণে খুবই ক্লান্ত ছিলেন। যে কারণে বিতর্ক প্রস্তুতি দু’দিন কমিয়ে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছিল। যাতে করে তিনি ডেলাওয়ারে তার বাড়িতে বিশ্রাম নিতে পারেন।

বাইডেনের একজন মুখপাত্র অ্যান্ড্রু বেটস বলেছেন, ক্যাম্প ডেভিডে ব্যায়ামের পর প্রেসিডেন্ট নিয়মিতই ১১টার আগে কাজ শুরু করেছেন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য তার বয়স অনেক দিন ধরেই আলোচনার একটি বিষয়। বেশ কয়েকটি জনমত জরিপে ভোটাররা বলেছেন যে তারা মনে করেন, কাজের জন্য তার বয়সটা অনেক বেশি।

বাইডেন এ মুহূর্তে ডেমোক্র্যাটিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থী। বিতর্কের পারফরমেন্স সত্ত্বেও তিনি লড়াই অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন। যদিও ৭৭ বছর বয়সী লয়েড ডগেট তার বিবৃতিতে বাইডেনকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেছিলেন, ‘ভোটারদের আশ্বস্ত করার পরিবর্তে, প্রেসিডেন্ট তার অর্জনগুলোর পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিতে এবং ট্রাম্পের মিথ্যাগুলোকে বের করে আনতে ব্যর্থ হয়েছে।’ তিনি বলেন, বয়সের কারণেই ট্রাম্পের কাছে হারার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘তার একটি সুযোগ এসেছে নতুন প্রজন্মের নেতাদের উৎসাহিত করার এবং সেখান থেকে একজন প্রার্থী মনোনয়ন করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার।’

বিতর্কের পর বাইডেন শুক্রবারই এবিসি নিউজকে একটি সাক্ষাৎকার দেবেন।

কয়েকজন সুপরিচিত ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা এ সপ্তাহে বাইডেনের বয়স ও সামর্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে তারা কেউ লয়েড ডগেটের মতো তাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাননি।

অন্য শীর্ষ ডেমোক্র্যাটরা বাইডেনের জয়ের সামর্থ্য নিয়ে ভয় পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি প্রেসিডেন্টের ওপরেই ছেড়ে দেয়ার ওপর জোর দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলছিলেন, ‘এটা জো বাইডেনের ওপর, যা তিনি ভালো মনে করেন।’

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অন্যতম সমর্থক কংগ্রেসম্যান জিম ক্লাইবার্ন বলেছেন, বাইডেন সরে দাঁড়ালে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করবেন। তবে তিনি বলেছেন, ‘আমি চাই বাইডেন-হ্যারিস চালিয়ে যাক’।

ম্যারিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান জ্যামি রাসকিন বলেছেন বিতর্কটি একটি ‘কঠিন পরিস্থিতি’ তৈরি করেছে। তিনি স্বীকার করেন যে দলের সব স্তরেই অত্যন্ত সততার সাথে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হচ্ছে বিষয়টি।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট যে সিদ্ধান্তই নিন, আমাদের দল ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে এবং আমাদের প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে তাকে প্রয়োজন।’ সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতের ঋণসহায়তায় আধুনিকায়ন হচ্ছে চট্টগ্রামের সড়কবাতির ফের চালু হচ্ছে ৩ ও ১৫ দিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ প্রথম দিনই ঋষি সুনাকের রুয়ান্ডা নীতি বাতিল করলেন স্টারমার ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী সড়কের বেহাল দশা, চলাচলে ভোগান্তি টিকটকার মোতালেবকে খুঁজছেন তার বাবা ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি চাকরিপ্রার্থীদের পাথরঘাটায় ময়নাতদন্তে ভালো প্রতিবেদন দেয়ার প্রলোভনে টাকা দাবি রফতানি তথ্যে অসঙ্গতির জন্য এনবিআর ও ইপিবিকে দায়ী করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গৃহকর্মী নিয়োগের ফি কমানোর ঘোষণা দিলো কুয়েত কালীগঞ্জে কৃষককে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা গুজরাটে বহুতল ভবন ধসে আহত ১৫, আটকে আছে অনেকে

সকল