মার্কিন-তালেবান চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত, স্বাগত জানালো কাবুল
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৩:৩১, আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৩:৩৪
আফগানিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন তালেবানের সাথে গত বছর কাতারের দোহায় করা শান্তিচুক্তি পুনরায় মূল্যায়ন করতে যাচ্ছে জো বাইডেনের প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে কাবুল সরকার।
শনিবার প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নতুন নিযুক্ত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মুহিবের সাথে এই বিষয়ে কথা বলেছেন বলে এক বিবৃতিতে জানান মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র এমিলি হর্ন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ওয়াশিংটন তালেবানের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ, আফগানিস্তানে সহিংসতা কমিয়ে আনা এবং আফগান সরকার ও অন্য অংশীদারদের সাথে অর্থপূর্ণ আলোচনার বিষয়ে পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন করবে।
আফগান নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাথে আলাপকালে সুলিভান জানান, যুক্তরাষ্ট্র বলিষ্ঠ ও আঞ্চলিক কূটনীতিক প্রচেষ্টায় শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করবে। যা উভয়পক্ষকে টেকসই ও নায্য রাজনৈতিক মীমাংসা ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।
হামদুল্লাহ মুহিবের সাথে জ্যাক সুলিভানের আলোচনার পরপরই এক টুইট বার্তায় আফগান স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী সাদিক সিদ্দিকি বলেন, ‘মার্কিন-তালেবানের ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি চুক্তি পুনরায় মূল্যায়নে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘এই চুক্তি তালেবানের সহিংসতা বন্ধে উদ্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি এবং আফগানদের আকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতিও নিয়ে আসেনি।’
আফগানিস্তানে দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সঙ্ঘাতের পর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুসারে তালেবানের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ ও মার্কিন বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা বন্ধের শর্তে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সৈন্য প্রত্যাহারে সম্মত হয়।
বর্তমানে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দুই হাজার পাঁচ শ’ সৈন্য অবস্থান করছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তালেবান জানিয়েছে, তারা চুক্তি রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে কাতারে সংগঠনটির মুখমাত্র মোহাম্মদ নাইম বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিজ্ঞাকে সম্মান করি। আমরা আশা করবো, অপর পক্ষও চুক্তিকে একইভাবে রক্ষা করবে।’
সৌদি আরবভিত্তিক সংবাদপত্র আরব নিউজকে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনকে দোহা চুক্তি পূর্ণভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের যুদ্ধ সমাপ্ত ও মার্কিন বাহিনীর প্রত্যাহারে দোহা চুক্তি সর্বোত্তম নির্দেশনা ও একমাত্র রোডম্যাপ।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শান্তিচুক্তি ও আফগান সরকারের সাথে তালেবানের শান্তি আলোচনা চললেও আফগানিস্তানে সহিংসতা বেড়েই চলছে। যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান সরকার সহিংসতার জন্য তালেবানকে দায়ী করলেও তালেবান অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র উগ্রবাদী সংগঠন আল-কায়েদাকে দায়ী করে। আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে আফগানিস্তানে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে ওই সময় দেশটি শাসন করা তালেবান সরকারকে অভিযুক্ত করে মার্কিন সরকার। যুক্তরাষ্ট্র বিন লাদেনকে সমর্পণের জন্য বললে তালেবান সরকার তা অস্বীকার করে। তালেবানের অস্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে আগ্রাসন শুরু করলে দেশটিতে দীর্ঘ দুই দশকের যুদ্ধ শুরু হয়।
সূত্র : আলজাজিরা, আরব নিউজ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা