জেলেনস্কিকে অবশ্যই খনিজ সম্পদের চুক্তি করতে হবে : মার্কিন উপদেষ্টা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:৩৯

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আবার আলোচনায় বসতে হবে এবং ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে একটি চুক্তি করতে হবে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের এক ব্রিফিংয়ে ওয়াল্টজ এ মন্তব্য করেন।
ওয়াল্টজ বলেন, ‘সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অগ্রহণযোগ্য অপমান করার কারণে হোয়াইট হাউজ ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি ভীষণ হতাশ।’
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদের অংশীদারিত্ব দাবি করলে গত বুধবার জেলেনস্কি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ওই চুক্তি করলে রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধে মার্কিন সহায়তার ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন থাকবে।
ইউক্রেন বিপুল পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও খনিজ সম্পদে পরিপূর্ণ। সেসবের মাঝে যেমন লিথিয়াম ও টাইটানিয়াম আছে। পাশাপাশি অনেক বড় পরিসরে কয়লা, গ্যাস, তেল ও ইউরেনিয়ামের মজুদ রয়েছে। এর বাজার মূল্য কয়েক বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবারের আগে ওয়াল্টজ পরামর্শ দিয়েছিলেন, ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রকে তার খনিজ সম্পদে প্রবেশ করার অধিকার দেয় তাহলে তাদেরকে মার্কিন সহায়তা দেয়া যেতে পারে। ইতোমধ্যে যে মার্কিন সহায়তা দেয়া হয়েছে এটিকে তার ক্ষতিপূরণ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
কিন্তু জেলেনস্কি এই প্রস্তাবকে নাকচ করে বলেন, ‘আমি আমাদের রাষ্ট্রকে বিক্রি করতে পারি না।’
কিয়েভে কিথ কেলোগের সাথে জেলেনস্কির বৈঠক শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরে ইউক্রেনীয় নেতা ঘোষণা করেন যে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ‘একটি বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা চুক্তি’ করতে প্রস্তুত, যা ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে সাহায্য করবে।
এরপর মাইক ওয়াল্টজ হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনে ওই মন্তব্য করেন।
জেলেনস্কি কিয়েভের বৈঠকটিকে ‘ফলপ্রসূ’ বলে অভিহিত করেন ঠিকই। কিন্তু এটিকে অনেকটা রাজনৈতিক সাক্ষাতের মতো মনে হচ্ছিলো।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ কর্মকর্তারা মস্কোর সাথে সরাসরি সম্পর্ক রাখার চেষ্টা চালিয়ে গেলে কেলোগ বলেছিলেন, তিনি কিয়েভে ‘শুনতে’ এসেছেন।
কিন্তু শীঘ্রই এটা স্পষ্ট হয়ে যায়, তিনি জনসম্মুখে কথা বলবেন না। কারণ সংবাদ সম্মেলন শেষ মুহূর্তে বাতিল করা হয়েছিল।
বিবিসি জানতে পেরেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ছিল। ইউক্রেনীয় সূত্রগুলো দাবি করেছে যে তারা বিশ্বাস করে, কেলোগকে হোয়াইট হাউজ সাইডলাইনে রেখেছে।
তবে কিয়েভের জন্য কেলোগের সাথে বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ ইউক্রেনের কর্মকর্তারা তার মাধ্যমে তাদের চাওয়াগুলো ওয়াশিংটনকে জানাতে পেরেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি ও বিশেষ মার্কিন দূত যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি, যুদ্ধবন্দীদের ফেরত আনার উপায় এবং কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
তিনি আরো যোগ করেন, ‘ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সাথে একটি শক্তিশালী, কার্যকর বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা চুক্তি করার জন্য প্রস্তুত।’
সূত্র : বিবিসি