১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ শাবান ১৪৪৬
`

যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যে চীনের পাল্টা কর আজ থেকে কার্যকর

যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যে চীনের পাল্টা কর আজ থেকে কার্যকর - ছবি - সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ জোরদার হওয়া এবং আরো কিছু দেশের বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যের ওপর চীনের আরোপ করা আমদানি কর আজ সোমবার থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে।

সব ধরনের চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১০ শতাংশ কর আরোপের পর গত ৪ ফেব্রুয়ারি বেইজিং এ ঘোষণা দেয়।

চীন সর্বশেষ কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর ১৫ শতাংশ আমদানি করসহ যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি এবং বড় ইঞ্জিনের গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্কও আরোপ করা হয়।

গত সপ্তাহে চীনা কর্তৃপক্ষ প্রযুক্তি খাতের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান গুগলের বিরুদ্ধে অ্যান্টি মনোপলি তদন্ত শুরু করে। এছাড়া ডিজাইনার ব্রান্ড কেলভিন ক্লেইন অ্যান্ড টমি হিলফিগারের যুক্তরাষ্ট্রের মালিক পিভিএইচকে কথিত ‘আনরিলায়েবল এনটিটি’ তালিকায় যুক্ত করে।

চীন একই সাথে ২৫ ধরনের বিরল ধাতব পদার্থের ওপর শুল্ক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। এগুলো অনেক ধরনের বৈদ্যুতিক পণ্য ও সামরিক উপকরণের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এদিকে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এড়াতে সমঝোতায় পৌঁছানোর কয়েকদিন পর ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার যুক্তরাষ্ট্রে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে আজ সোমবার পূর্ণ ঘোষণা আসতে পারে।

এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আরো কিছু দেশের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন তিনি। তবে কোন কোন দেশ এ ক্ষেত্রে তার টার্গেট হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলেননি।

তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদেও একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে কানাডা, মেক্সিকো ও ব্রাজিলসহ কয়েকটি বাণিজ্য অংশীদারকে শুল্কমুক্ত কোটা সুবিধা দিয়েছিলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানি করের বিষয়টি বাইডেন প্রশাসন হোয়াইট হাউজে আসার আগে পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়নি।

ট্রাম্পের লক্ষ্য হলো নির্বাচনি প্রচারণায় দেয়া পারস্পারিক শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা। তিনি তখন বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক থাকলে একই হারে যুক্তরাষ্ট্রও শুল্ক আরোপ করবে।

ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করে আসছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যে শুল্ক নেয় তার চেয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা গাড়ির ওপর বেশি কর নেয়।

গত সপ্তাহে তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর শিগগিরই শুল্ক আরোপ হতে পারে। তবে যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে একটি চুক্তি হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ শুল্ক কার্যকরের পর বেইজিং ফেন্টানিলের বিষয়ে অসত্য ও অপ্রমাণিত অভিযোগ উত্থাপনের জন্য ওয়াশিংটনকে অভিযুক্ত করেছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় দায়ের করা অভিযোগে চীন বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি কর ‘বৈষম্যমূলক ও সুরক্ষাবাদী’ এবং এটি বাণিজ্য বিধির লঙ্ঘন।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, এ বিষয়ে চীনের পক্ষে সিদ্ধান্ত এখন না-ও আসতে পারে। কারণ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্যানেল এখনো কার্যকর নয়।

তবে ট্রাম্প তার চীনা প্রতিপক্ষ শি জিনপিং এর সাথে কথা বলবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলছেন এ বিষয়ে তার কোন তাড়া নেই।

গত ২০ জানুয়ারির পর ট্রাম্প যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তার মধ্যে কিছু পরিবর্তন করা হতে পারে।

শুক্রবার তিনি চীনের ক্ষুদ্র প্যাকেজের ওপর আরোপ করা শুল্ক স্থগিত করেছেন। গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত দশ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হয়। এই স্থগিতাদেশ শুল্ক রাজস্ব সংগ্রহের পর্যাপ্ত ও পূর্ণ সুবিধা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement