এখনো জ্বলছে লস অ্যাঞ্জেলেস, লুটপাট ঠেকাতে কারফিউ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৮
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে টানা চারদিন আগুনে পুড়ে এখন পর্যন্ত দেড় শ’ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মানুষের প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ জনে। নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে লক্ষাধিক মানুষকে। এই পরিস্থিতির মধ্যে লুটপাটও চালাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। লুটপাট ঠেকাতে একটি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমস সূত্রে এ খবর জানা হেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে আগুনের সূত্রপাত হয় গত মঙ্গলবার। স্থানীয় সময় শুক্রবার (বাংলাদেশ সময় শনিবার সকাল) পর্যন্ত চারটি স্থানে দাবানল সক্রিয়ভাবে জ্বলছিল। এর মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের পশ্চিম দিকে সান্তা মনিকা ও মালিবু এলাকার মাঝে এবং পূর্ব দিকে পাসাডেনা এলাকার কাছের দাবানল দুটি সবচেয়ে বেশি ধ্বংসের কারণ হয়েছে। এই দুই দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ৩৪ হাজার একর জায়গার গাছপালা, ঘরবাড়িসহ সবকিছু।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দেয়া হিসাবে, আগুনে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। এর মধ্যে সান্তা মনিকা ও মালিবু এলাকার মাঝে দাবানলে পুড়েছে ৫ হাজার ৩০০ স্থাপনা। পাসাডেনা এলাকার কাছের দাবানলে পুড়েছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার স্থাপনা। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে এই ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিষয়ক তথ্য সরবরাহকারী ওয়েবসাইট অ্যাকুওয়েদারে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, আগুনে এখন পর্যন্ত ১৩৫ থেকে ১৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে শহরের হলিউড হিল এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। দাবানলের ভয়ে সেখান থেকে সরে যাওয়া অনেক মানুষ নিজেদের বাড়িতে ফিরছেন। অভিজাত প্যাসিফিক প্যালিসেইডস এলাকায় পুড়ে ছাই হওয়া ঘরবাড়িগুলোতেও লোকজনকে ফিরতে দেখা গেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস বলেছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর শহর পুননির্মাণে জোর তৎপরতা শুরু করবেন তারা। আর শুক্রবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই আগুন নেভাতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করার জন্য লস অ্যাঞ্জেলেসের গভর্নর ও স্থানীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, দাবানল ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ার পেছনে অন্যতম কারণ ঝোড়ো বাতাস। আগুনের শুরুর দিকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাতাসের গতি উঠছিল। বৃহস্পতিবারের পর থেকে তা কমতে শুরু করে। তবে বাতাস পুরোপুরি না থামায় এবং বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা না থাকায় শুক্রবার পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেস ও ক্যালিফোর্নিয়ায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রাখা হয়।
লস অ্যাঞ্জেলেসের বিভিন্ন প্রান্তে আগুন নেভাতে দিন-রাত কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বিভিন্ন স্থানে উড়োজাহাজ থেকে পানি ফেলতে দেখা গেছে। তবে তেমন অগ্রগতি পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসের আগুনের মাত্র ৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে তারা।